রমজানের কোনো পণ্য জাহাজে আটকে থাকবে না: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশ:
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৮:৩৬ রাত
নিউজ ডেস্ক |
ব্যবসায়ীরা তথ্য দিলে চলতি মাসের মধ্যে আমদানি করা রমজানের কোনো পণ্য জাহাজে আটকে থাকবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই কথা জানান। রাজধানীর পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার ব্যবাসয়ী সমিতির সভাকক্ষে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সভায় পণ্যের দাম বৃদ্ধির একটি কারণ হিসেবে আমদানি করা পণ্য জাহাজে আটকে থাকার কথা জানান ব্যবসায়ীরা। এর প্রেক্ষিতে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাহাজে যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আটকে আছে, আমাকে তালিকা দেবেন। ইনশাল্লাহ, এ মাসের মধ্যে রমজানের কোনো জিনিস জাহাজে আটকে থাকবে না। আপনারা আমাকে জানাবেন, আমি এ সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করবো। কিন্তু কোনো উৎপাদনকারী বা আমদানিকারক সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসা না করে এটা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের ব্যবসা শত বছরের পুরোনো। সততার সঙ্গে ব্যবসা না করলে শত বছর কোনো ব্যবসা টিকে থাকে না। তাই আজকে আপনাদের কাছে আসার উদ্দেশ্য পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ নয়, পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা। পণ্যের সরবরাহ যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে থাকবে। অনেকে মনে করেন পণ্যের দাম কমানো বা বাড়ানো আমাদের কাজ। আমি মনে করি, আমাদের কাজ পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখা। আমরা যেন সব পণ্য সময়মতো হাতের কাছে পাই। মতবিনিময় সভায় ৪৪টি ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উদ্দেশে আহসানুল হক টিটু বলেন, আপনারা আপনাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেছেন। আমি আপনাদের আগামী বাজেটের আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আমন্ত্রণ জানাই। আপনাদের সবাইকে নিয়ে আমরা বসবো। আগামী বাজেটে কি করলে আপনারা সহজভাবে করতে পারবেন, আমরা সে ভূমিকা রাখবো। তিনি আরও বলেন, আপনাদের (ব্যবসায়ী) প্রতিনিধি ছাড়া আমার মন্ত্রণালয়ের (বাণিজ্য মন্ত্রণায়) ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে কোনো অভিযান পরিচালনা করা হবে না। তাহলে কোনো ব্যবসায়ীকে দোকানের দরজা বন্ধ করতে হবে না। কিন্তু সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারিত না হয়, ন্যায্য মূল্যে পণ্য পায়, কষ্ট না পায় সেটা আপনাদের সততার সঙ্গে করতে হবে। এটা প্রধানমন্ত্রীও আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, একদিকে যেমন ন্যায্য ব্যবসা করার অধিকারের কাজটা আপনাদের করতে হবে, তেমনি সততার সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য আপনাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। আপনারা নিজেরা যতটা সচেষ্ট থাকবেন, প্রশাসন ততটা আপনাদের সহায়তা করবে। আমি গত এক মাস সব জায়গায় বলেছি, পুলিশ দিয়ে অভিযান চালিয়ে বাজার ব্যবস্থা ভালো করা সম্ভব না। বাজার ব্যবস্থা ভালো করতে হলে, সাপ্লাই চেইনের প্রতিনিধিসহ আমদানিকারক বা উৎপাদক থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি জায়গা শক্তিশালী হতে হবে। খেজুরের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার যেহেতু খেজুরে ট্যাক্স যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে এনেছে, আপনারাও অন্ততপক্ষে বস্তার খেজুর যাতে সাধারণ মানুষ যৌক্তিক মূল্যে কিনতে পারে সেই ব্যবস্থা করবেন। ১৪০ টাকার খেজুর যাতে ৩৮০ টাকা না হলে যায়, এক খেজুরের নামে যাতে অন্য খেজুর বিক্রি না হয়। এগুলো কিন্তু অন্যায়। এ বিষয়ে আমি আপনাদের কাছে নিশ্চয়তা চাই, আপনারা যাতে এটি নিশ্চিত করতে পারেন। আমাদের কাজ সহযোগিতা করা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মো. বশির উদ্দিন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাহবুব-উজ-জামান, বাংলাদেশ গরম মশলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ, বাংলাদেশ পাইকারি চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি মো. আবুল হাশেম, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, আবু মোতালেব ও মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. গোলাম মাওলা। |