টেলিযোগাযোগ খাতকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা সরকারের
প্রকাশ:
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৭:৩১ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
নানা কারণে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকা দেশের টেলিযোগাযোগ খাতকে (বিটিসিএল, টেলিটক, টেশিস) ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এসব পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- সেবার মান বাড়ানো, সব প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করা, সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া, অবৈধ ভিওআইপি বন্ধ করা, নিয়োগ-পদোন্নতিতে দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করা। এজন্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ভেঙে আলাদা প্রতিষ্ঠান করা হতে পারে। কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে শুরু করে জিএম-ডিজিএমসহ অনেক পদে বাইরে থেকে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ উদ্যোগ নিয়েছেন, যিনি দ্বাদশ সংসদে নতুন করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের দায়িত্বও পেয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের বিশ্বস্ত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। টেলিযোগাযোগ খাতকে দুর্নীতিমুক্ত ও লাভজনক করতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিএমপিসিএ) সচেতন মহল।
বিটিসিএল ভেঙে হতে পারে আলাদা প্রতিষ্ঠান: সেবার মানোন্নয়ন ও প্রতিযোগিতায় ফেরাতে বিটিসিএলকে ভেঙে আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান করে দিতে পারে সরকার। যেমন- ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স), ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিও)ইত্যাদি। এছাড়াও পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন)-কে আলাদা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়ে আলাদা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। ফলে সেবার মান বাড়বে, বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে, সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি: দুর্নীতির (বিশেষ করে বিগত দিনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ) তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করা হতে পারে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। থাকবেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা: পরিচালনা বোর্ডে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি এবং গ্রাহক প্রতিনিধিদের রাখা হতে পারে। টেলিটকের মানোন্নয়নে যা করা হবে: টেলিটকের কাছ থেকে পাওনা আদায়ে বিটিআরসিকে নির্দেশ: টেশিসের অনিয়মে ভেস্তে গেছে সরকারি প্রকল্প: প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, টেশিসের সব জায়গায় বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম পেয়েছি। এখানে অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। টেশিসের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, অপচয়ের কারণে দোয়েল ল্যাপটপ উৎপাদন প্রকল্প ভেস্তে গেছে। বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি হলেও টিকতে পারে না টেশিস। সংস্থাটি সরকারকে কিছুই দিতে পারছে না। অথচ বসে বসে জনগণের টাকায় বেতন নিচ্ছে। এক্ষেত্রে টেশিসের লজ্জা পাওয়া উচিত। তিনি বলেন, আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছি। যেভাবে লাভজনক হতে পারে টেশিস: প্রতিমন্ত্রী পলকের আলটিমেটাম: প্রোডাকটিবেলিটি, প্রোডাক্ট ডাইভারসিটি প্রমোশন এবং প্রসেস টু কানেক্ট কাস্টমার- এই চার শব্দের পি আদ্যক্ষরের ওপর কাজ করতে প্রস্তাব জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ৪টি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। স্তম্ভগুলো হলো স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি। গত মেয়াদে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা তৈরি করেছি। আমরা প্রায় ৪০টি প্রকল্প চিহ্নিত করেছি যেগুলো আমাদের যাত্রা শুরু করার জন্য বাস্তবায়ন করা দরকার। এই মেয়াদে আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো আমরা দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার সঙ্গে ৪টি স্তম্ভের অধীনে যেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব, তা নিশ্চিত করা। এনএ/ |