তাবলিগ ও নুরানি শিক্ষার লক্ষ্য আদর্শ সমাজ গঠন
প্রকাশ:
০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৩:৩৩ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
|| মাওলানা ইসমাইল বেলায়েত হুসাইন || জীবনের নানা কারণে সঠিক সময়ে অনেকেই দীনের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠতে পারেন না। শিখতে পারেন না ধর্মের মহান বাণী। বেখেয়ালে মনের খেয়াল-খুশি মতো চলেন। ভুলে বসেন আল্লাহ ও তার রাসুলের পথ। এমনসব মানুষকে দীনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম প্রচলিত দাওয়াত ও তাবলিগ। কেননা তারা ছোটবেলায় নুরানিতে গিয়ে দীনের প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারেননি। আল্লাহর রঙে শৈশবকে রাঙাতে পারেননি। ‘কালেমা, নামাজ, রোজা, ইলম ও জিকির, ইকরামুল মুসলিমিন, সহিহ নিয়ত ও দাওয়াতে তাবলিগ’- এ ছয়টি উসুল বা মূলনীতিকে সামনে রেখে তাবলিগ জামাত বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রচার ও প্রসারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে দীনের দাওয়াত নিয়ে গ্রাম-গঞ্জ, শহর-বন্দর, পাড়া-মহল্লায় সারা বছর ঘুরে বেড়ায়। ইসলাম প্রচারের কাজে তারা একদিকে নিজেকে পরিশুদ্ধ ও উন্নত করার জন্য, অন্যদিকে যারা বেখেয়াল তাদের ধর্মের প্রতি আহ্বান করতে মেহনত করে। ২৪ ঘণ্টা, তিন দিন, সাত দিন, একচিল্লা, সাল কিংবা জীবন চিল্লা; যার যেমন ইচ্ছা তাবলিগ জামাতে শামিল হয়ে আল্লাহর পথে বেরিয়ে পড়েন আল্লাহপ্রেমীরা। কাফেলা বেঁধে মসজিদ থেকে মসজিদে সফর করেন। লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবিনয়ে আল্লাহর পথে উদাত্ত আহ্বান জানান। নামাজ কায়েমের কথা বলেন, আল্লাহর প্রেমের কথা বলেন এবং পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও ধর্মীয় শিক্ষার কথা বলেন। দাওয়াত ও তাবলিগের লক্ষ্য হচ্ছে ‘ঈমানি আন্দোলন’। এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহপ্রদত্ত জীবন, সম্পদ এবং সময় আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে জীবনের সঠিক শিক্ষা অর্জন করা। আল্লাহভোলা মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক করে দেওয়ার জন্য মেহনত করা। মানুষকে আল্লাহরপ্রেমে জুড়ে দেওয়া। মানুষ যখন আল্লাহরপ্রেমে জুড়ে যায়, তখন তার ইমান মজবুত হয়। আর মজবুত ঈমানদার ব্যক্তি কখনও অন্যের অধিকার নষ্ট করতে পারে না, খাদ্যে ভেজাল দিতে পারে না, সমাজে দুর্নীতি করতে পারে না। আল্লাহর ভালোবাসা তাকে মোমের মতো গলিয়ে দেয়। নিজের অস্তিত্বের সর্বস্ব ভুলে লুটে পড়ে সেজদায়। দম্ভ আর অহমিকা মুছে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে হৃদয়ে। ভালো ও মন্দের মধ্যে প্রভেদ করতে শেখে। নফসের গোলামির শৃঙ্খল ছিন্ন করে এক আল্লাহর দাসত্বকে মেনে নেয় আর বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা.-এর আদর্শ অনুসরণে জীবন গঠন করে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। যেভাবে আদর্শ নাগরিক ও সচেতন মানুষ গড়ার লক্ষ্যে শিশুদের নিয়ে কাজ করছে নুরানি তালিমুল কুরআন বোর্ড। তাবলিগের অন্যতম অধ্যায় হলো বয়স্ক মানুষের মাঝে দীনি মেজাজ তৈরি করা। আর নুরানির অন্যতম লক্ষ হলো শিশুদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। বড়দের মাঝে তাবলিগ আর ছোটদের মাঝে নুরানির শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া গেলে আমার বিশ্বাস একটি সুন্দর সমাজ গঠন সম্ভব। লেখক: পরিচালক, নুরানি তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ কেএল/ |