গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ১৭ হাজার শিশু: জাতিসংঘ
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১১:৫৫ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলার শুরুর পর থেকে উপত্যকার প্রায় ১৭ হাজার শিশু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বা সঙ্গীহীন হয়ে পড়েছে। 

শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের জরুরি শিশু তহবিল বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। প্রায় চার মাস ধরে চলা ইসরায়েলের এ হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিশুরা।

ফিলিস্তিনে নিযুক্ত ইউনিসেফের কমিউনিকেশনস ডিপার্টমেন্টের আঞ্চলিক প্রধান জোনাথন ক্রিকক্সের বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় এখন ঘর ছাড়া মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ। তাদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৭ হাজার, যা মোট বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর প্রায় এক শতাংশ।
শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় ইউনিসেফের এই কর্মকর্তা বলেন, গাজার প্রতিটি শিশুর একটি হৃদয়বিদারক শোকাতুর গল্প রয়েছে। 

সঙ্গীহীন বা পরিবার বিচ্ছিন্ন এই শিশুদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, গাজার প্রতিটি শিশুর জন্য অনিশ্চিত ভয়ঙ্কর ভবিষ্যত সামনে অপেক্ষা করছে। কারণ এসব শিশুর পরিচয় সনাক্ত করা এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালে আনা এমন শিশুর কথা তিনি জানিয়েছেন যারা তাদের নামও ঠিক মত বলতে পারে না। এছাড়া এসব শিশুর অনেকেই তাদের পরিবারের সবাইকে হারিয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

ক্রিকক্স বলেছেন, গত চার মাসের ইসরায়েলি হামলায় খাদ্য, পানি এবং জ্বালানি সংকট তীব্র হওয়ায় সন্তানদের যত্ন নেওয়ায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে পরিবারগুলোকে।

এ বিষয়ে জাতিসংঘ গাজার সকল শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটির বিবৃতিতে ক্রিকক্স বলেছেন, গাজায় শিশুরা ভয়াবহ মানসিক স্বস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে উপত্যকাটিতে প্রায় ১০ লাখ শিশুর জরুরি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রয়োজন।

তীব্র ক্ষুধা এবং নিদ্রাহীনতায় ভুগছে গাজার শিশুরা। ইসরায়েলের লাগাতার বোমা বর্ষণে প্রতিনিয়ত কেঁপে উঠছে শিশুদের মন। ফলে তারা মানসিকভাবে আতঙ্কিত সময় পার করছে। হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর আগে ইউনিসেফ অনুমান করেছিল গাজার ৫ লাখ শিশুর মানসিক ও সামাজিক সহায়তা প্রয়োজন। তবে সংঘাত শুরুর পর সে সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

উল্লেখ্য, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ২৭ হাজার ১৯ ফিলিস্তিনি। এছাড়া আহত হয়েছে ৬৬ হাজার ১৩৯ জন। সূত্র: আল জাজিরা, আরব নিউজ

এনএ/