ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে হুথিকেই জিতিয়ে দিল আমেরিকা
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৮:১৬ রাত
নিউজ ডেস্ক

ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে মূলত দেশটির হুথি বিদ্রোহীদেরই জিতিয়ে দিয়েছে আমেরিকা। কারণ, তারা এটাই চাচ্ছিল। তারা চাচ্ছিল, আমেরিকা-ইসরায়েলের মতো শক্তি তাদের ওপর আক্রমণ করুক। এই বার্তাটাই তারা দেশের জনগণকে দিতে চাইছিল।

বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ মনে করছে, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে যেভাবে ইয়েমেনে হামলা চালিয়েছে, তাতে লাভবান হচ্ছে হুথিরাই। ইরানের মদতপুষ্ট এই বিদ্রোহীরা দেশের মানুষকে অনেক দিন ধরেই বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, তারা আমেরিকা, ইসরায়েলের মতো শক্তিগুলোর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আক্রমণ সেই বিষয়টির আরও অকাট্য প্রমাণ হয়ে গেল।

ওয়াশিংটন ইনফরমেশন রিসার্চ সেন্টার ফর ইয়েমেনের সাবেক ডিরেক্টর হিশাম-আল-ওমেইসি বলেছেন, “গত আট বছর ধরে হুথি বিদ্রোহীরা তাদের বন্ধুদের বলার চেষ্টা করছে যে, তারা আমেরিকার সঙ্গে লড়াই করছে। ফলে আমেরিকার এই আক্রমণ তাদের এই দাবিকে জিতিয়ে দিল।”

২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে। সৌদি আরবের মদতপুষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ইরানের মদতপুষ্ট হুতি বিদ্রোহীরা। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর দেশের উত্তর এবং পশ্চিম প্রান্ত এখন হুথিদের দখলে। অর্থাৎ, ইয়েমেন থেকে লোহিত সাগরের ঢোকার যে রাস্তা, তা এখন হুথিদের হাতে। অন্যদিকে, দক্ষিণ ইয়েমেন সৌদি আরবের মদতপুষ্ট সরকারের হাতে। আন্তর্জাতিভাবে এই সরকারই ইয়েমেনে স্বীকৃত। দেশের পূর্বভাগ জনজাতির হাতে।

দীর্ঘ যুদ্ধে জর্জরিত ইয়েমেন। অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি। এই অবস্থায় সৌদি আরবের মদতপুষ্ট সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধ-বিরতিতে ঢুকেছে হুথি বিদ্রোহীরা। আলোচনা চলছে। হুথিদের দাবি, তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। ইরান ছাড়া আর কোনও দেশই তাদের স্বীকৃতি দেয় না।

দেশের জনগণকে তারা বোঝাচ্ছিল, আমেরিকার সঙ্গে এই নিয়ে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বস্তুত, সে কারণেই তারা লোহিত সাগরে একের পর এক আক্রমণ চালাচ্ছিল বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজে।

নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার সুযোগ খুঁজছিল তারা। যেহেতু লোহিত সাগরের রাস্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ, তা-ই এই রাস্তাতেই আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। আমেরিকা কোনও কৌশলে না গিয়ে সরাসরি তাদের আক্রমণ করে হুথিদের চেষ্টাটাই আসলে সফল করে দিল। বস্তুত, হুথি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের মানুষও এমনটাই মনে করছেন। সূত্র: ডয়েচে ভেলেে

এনএ/