আল্লাহর নৈকট্য লাভে সুন্নতের গুরুত্ব অপরিসীম
প্রকাশ:
১৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ১২:৪৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
আল্লাহ তায়ালা কুরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘যে রাসূলের আনুগত্য করলো সে পকৃতপক্ষে আল্লাহরই আনুগত্য করলো।’ -সূরা আন নিসা: ৮০ হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘যে আমার সুন্নতকে জীবিত করল, সে আমাকে ভালোবাসল। আর যে আমাকে ভালোবাসল, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।’ -(তিরমিজি শরীফ) মুসলিম জাতির পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনে সুন্নতের গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনের প্রতিটি অধ্যায় সুন্দর ও সৌরভময় করতে হজরত রাসূলুল্লাহ সা.-এর ৬৩ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে উম্মতকে দিয়েছেন সুন্দর ও উজ্জ্বলময় পথনির্দেশ। যা আমাদের নিকট সুন্নত নামে সুপরিচিত। ইসলামে এমন কোনো বিষয় নেই, যে সম্পর্কে ইসলাম দিক-নির্দেশনা দেয়নি। লেবাস-পোষাক, চুল, বিয়ে-শাদি, ওলিমা, অসুস্থতা-চিকিৎসা ও রোগীর সেবাতেও হজরত রাসূলুল্লাহ সা.-এর সুন্নত রয়েছে। লেবাস-পোষাকের ১১ সুন্নত জামা পরিধান করার সময় প্রথমে ডান হাত হাতা প্রবেশ করানো, তারপর বাম হাত। পাজামা পরার সময়ও প্রথমে ডান পা তারপর বাম পা ঢোকানো। -(সুনানে তিরমিজি) প্যান্ট, সেলোয়ার ও লুঙ্গি টাখনুর ওপরে পড়তে হয়। টাখনুর নিচে পরলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘শরীরের নিম্নাংশের কাপড়কে যারা টাখনুর নিচে নামিয়ে রাখে তাদের প্রতি আল্লাহ রহমতের দৃষ্টিতে তাকান না।’ –(সহিহ বোখারি ও মুসলিম) নতুন কাপড় পরিধানের সময় এই দোয়া পড়তে হয়। আলহামদুলিল্লাহ হিল্লাযি কাসানি হা-যাচ্ছাওবা ওয়া রাজাকনীহি মিন্ গায়রি হাওলিম্ মিন্নি ওয়া লা- কুয়্যা। অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাকে এই কাপড় পরিধান করিয়েছেন এবং কোনো চেষ্টা-শক্তি ব্যতীত আমাকে রিজি দান করেছেন। -(সুনানে আবু দাউদ) পাগড়ির নিচে টুপি রাখা সুন্নত। -(মিরকাতুল মাফাতিহ) পাগড়ির প্রান্তস্থিত কারু ছেড়ে দেওয়া সুন্নত। -সুনানে নাসায়ি মাথায় টুপি দেওয়া সুন্নত। -(মিরকাতুল মাফাতিহ) জামা খোলার সময় আস্তিন থেকে প্রথমে বাম হাত তারপর ডান হাত বের করবেন। পাজামার ক্ষেত্রেও প্রথমে বাম পা, তারপর ডান পা বের করবেন। -(সুনানে তিরমিজি) জুতা-স্যান্ডেল প্রথমে ডান পায়ে পরিধান, তারপর বাম পা। -(সহিহ বোখারি) খোলার সময় প্রথমে বাম পায়ের জুতা খুলতে হয়, তারপর ডান পা। -(সহিহ বোখারি) চুল রাখার সুন্নতসমূহ কানের লতি বা তার সামান্য নিচে পর্যন্ত পুরো মাথার চুল রাখা সুন্নত। পুরো মাথা ন্যাড়া করে ফেলা জায়েজ। চুল কাটতে হলে পুরো মাথায় সমানভাবে কাটতে হবে। কিছু ছোট রেখে কিছু বড় রাখা নাজয়েজ। শুধু সামনের বা শুধু ওপরের চুল লম্বা রাখা বৈধ নয়। মাথার অর্ধাংশ ন্যাড়া করে অপর অংশে চুল রাখাও বৈধ নয়। -(বেহেশতী জেওর) হাদিস শরীফে পাগড়ি লম্বা করা এবং গোঁফ খাটো করার নির্দেশ আছে। -(সহিহ বোখারি) দাড়ি সেভ করা এবং এক মুষ্টি থেকে কম রাখা বা ফ্রেন্সকাট দাড়ি রাখা নাজায়েজ। -(বেহেশতী জেওর) এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ওয়াজিব। এটি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। গোঁফ খুব ভালোভাবে কেটে ফেলা সুন্নত। ঝাঁটার মতো লম্বা গোঁফ রাখার ব্যাপারে হাদিসে শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। -(বেহেশতী জেওর) নাভীর নিচের লোম, বগলের লোম ও নখ ইত্যাদি ভালোভাবে কেটে পরিস্কার-পরিছন্ন থাকা বাঞ্চনীয়। ৪০ দিন পর্যন্ত এগুলো পরিস্কার না করলে গোনাহ হয়। -(সহিহ বোখারি) চুল ধোয়া, তেল দেওয়া এবং চিরুনির সাহায্যে পরিপাটি করে রাখা সুন্নত। -(আওজাযুল মাসালিক) চুল আঁচড়নোর সময় ডানদিক থেকে শুরু করা সুন্নত। -(বেহেশতী জেওর) আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। এনএ/ |