প্রতিনিধি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিলো ইসলামী আন্দোলন
প্রকাশ:
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৫:২০ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
নির্বাচন বাতিল, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং নতুন শিক্ষা কারিকুলাম পরিবর্তনের দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করতে বের হন দলটির নেতাকর্মীরা। পরে দৈনিক বাংলা মোড়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ সদস্যরা। পেশ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে৷ আমরা সমস্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেও আজ দেশের মাটিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছি৷ যেহেতু ইসলামী আন্দোলন একটি শান্তিপূর্ণ দল সেহেতু পুলিশের অনুরোধে আমরা এখানে গণ-জমায়েত শেষ করে সাত জনের প্রতিনিধি দল নিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি জমা দিচ্ছি৷’ কর্মসূচিতে আরো ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব, সহকারী মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ এবং মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থাসহ নতুন শিক্ষা কারিকুলাম সংশোধনের দাবিতে রাষ্ট্রপ্রতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। স্মারকলিপি পেশের আগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সমাবেশ ও গণজমায়েত করছে দলটি৷ পরে রাষ্ট্রপ্রতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করতে একটি মিছিল বের হলে দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ মিছিল আটকে দেয়। তবে সাত সদস্যের এক প্রতিনিধি দল এ স্মারকলিপি পেশ করার সুযোগ পান। রাষ্ট্রপ্রতি বরাবর ইসলামী আন্দোলনের স্মারকলিপিতে থাকছে যেসব দাবি— ১. অনতিবিলম্বে চলতি সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সকল প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিগণের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। ২. রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতারকৃত বিরোধী দলের সকল নেতা-কর্মী এবং ওলামায়ে কেরামকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে আপনার মধ্যস্থতায় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। ৩. দলান্ধ এই নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করতে হবে। ৪. ৭ জানুয়ারি একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আগে কোন অবস্থাতেই দেশে কোন নির্বাচন করা যাবে না। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তাদের দাবিগুলো—
২. শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও সকল পরীক্ষায় আবশ্যিক করা। ৩. ডারউইনের অপ্রমাণিত, ভ্রান্ত ও বিতর্কিত বিবর্তনবাদ শিক্ষার সকল স্তর থেকে বাদ দেওয়া। ৪. পাঠ্য পুস্তকের সকল বিষয় হতে অনৈসলামিক ও ইসলামী বিশ্বাস বিরোধী বিষয় ও শব্দসমূহ বাদ দেওয়া। ৫. ইসলাম ধর্ম শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ‘কুরআনুল কারীম’ শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা। ৬. মাদ্রাসা শিক্ষার কারিকুলাম, শিক্ষানীতিমালা-২০১০ অনুযায়ী মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট আলেম, দ্বীনদার শিক্ষকদের দ্বারা পূনর্মার্জন করা। ৭. নৈতিকতা সমৃদ্ধ জনশক্তি তৈরির লক্ষে সকল ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা। ৮. বাংলা, ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও ইতিহাস বই হতে বিতর্কিত ও ইসলামী আকিদা বিরোধী প্রবন্ধসমুহ বাদ দেওয়া। স্কুল ও মাদ্রাসার সকল পাঠ্যপুস্তক অপ্রয়োজনীয় এবং অশ্লীল চিত্রমুক্ত রাখা। ৯. ইসলাম ও মুসলমানদের হেয়প্রতিপন্ন কারী প্রবন্ধসমূহ বাদ দিয়ে প্রমানিত ও সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরা। ১০. পূর্বের ন্যায় নবম শ্রেণী হতেই বিভাগ বিভাজনের পদ্ধতি বলবৎ রাখা এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চতর গনিত ও বিজ্ঞান বিষয়ক বইসমূহ পৃথক রাখা। ১১. যেহেতু এদেশের সাধারণ জনগণই এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করেন, সেহেতু জোর করে চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষা ব্যবস্থা নয় বরং এদেশবাসীর ধর্মীয় বোধ বিশ্বাসের অনুকুলে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা। অতএব উপর্যুক্ত দাবিগুলো বাস্তবায়নে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। এনএ/ |