শক্তিমত্তার মিথ্যা গল্প বলে বলে গর্ব করত ইসরায়েল 
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৭:২৪ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

।।জহিরুল ইসলাম।।

মিথ্যা মানবচরিত্রের জঘন্যতম স্বভাব হলেও এটি ইসরায়েলিদের কাছে একটি শিল্প। ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন পণ্য হিসেবে মিথ্যা তাদের কাছে স্বীকৃত। কেউ সত্যবাদী হলে তাকে নেতিবাচক পরিস্থিতির শিকার হয়।শুনতে বিস্ময়কর মনে হলেও এমনটাই বলেছেন ইসরায়েলের জনৈক লেখক। 

ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজে ওই লেখক বলেন, দখলদার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির মূল কাজ হচ্ছে সাজিয়ে গুছিয়ে চটকদার মিথ্যা বলা।


যারা তার কথাকে বিশ্বাস করে, তাদের উদ্দেশ্যে চেইম লেভিনসন নামের ওই লেখক বলেন, ড্যানিয়েল হাগারির নির্ভরযোগ্যতা কতটুকু তা আমরা ২০২১ সনের মে মাসে হামাসের টানেলে আঘাত হানার পর আন্দাজ করতে পেরেছি।

চেইম লেভিনসন সেই বোমা হামলার কথা স্মরণ করে বলেন, ২০২১ সনের মে মাসের এক বিকেলে, গাজা উপত্যকায় একটি অপারেশন চলাকালীন, আমি হোয়াটসঅ্যাপে একটি বৃহৎ গ্রুপে একটি অডিও বার্তা পোস্ট করেছিলাম। বার্তাটি ছিল এইসরায়েলি বিমানবাহিনীর কমান্ডারের।


সেই বার্তায় কমান্ডার বলেছিলেন, আমরা গতরাতে হামাসের সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছি। অর্ধ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যেই ১৬০ টি বিমানে আঘাত হেনেছি। ৪৫০ জন সশস্ত্র যোদ্ধাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছি। তাদের সমস্ত টানেল ধ্বংস করে দিয়েছি। বর্তমানে তারা এমন ভয়াবহতার মধ্যে রয়েছে যে, এর থেকে তাদের ফিরে আসা সম্ভব নয়।
 
লেখক বলেন, ওই বার্তার মাধ্যমে কমান্ডার আমাদের বুঝাতে চেয়েছিলেন যে, আমাদের বাহিনী সীমাহীন শক্তিশালী। আমাদের বিমানবাহিনী বিশ্বে অতুলনীয়। হামাস পুরোপুরি নির্মূল হয়ে গেছে। বস্তুত সব ছিল আকর্ষণীয় মোড়কে সাজানো মিথ্যা।


লেখক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রের সরকার, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক সবাই এভাবে বিভিন্ন সময় নানান মিথ্যা সাজিয়ে জনগণকে প্রবোধ দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। জনগণ আগ্রহভরে এসব শুনতে চাইত। মিথ্যা খবর শুনে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠত।অক্টোবরের ৭ তারিখ পর্যন্তই ছিল এই মিথ্যার ছড়াছড়ি। মিথ্যার ওপরেই ভর করে টিকেছিল জনগণ।

শক্তিমত্তার এসব ভুয়া খবর জনগণ এখন শুনতে চায় না।

লেখক আফসোস প্রকাশ করে বলেন, ১৫ বছর আমাদের একজন প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন। মিথ্যাই তার প্রধান অবলম্বন। রাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্স আছে, সর্বোন্নত বিমান বাহিনী আছে, সাইবার হ্যাকার আছে—এভাবে আরো বহু উন্নয়নের গল্প তিনি বলে আসছিলেন।


সর্বশেষে লেখক বলেন, মাদকের একটা মেয়াদ থাকে। মেয়াদ শেষে এর ক্রিয়া হারিয়ে যায়। তেমনি আমাদের মিথ্যা সান্ত্বনার একটা মেয়াদ। ৭ অক্টোবর সেই মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে।

সূত্র: হারেৎজ।

এনএ/