স্পেন থেকে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৮:০৭ রাত
নিউজ ডেস্ক

স্পেনের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ হামাসের হামলার নিন্দা করার পাশাপাশি গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ ও ধ্বংসযজ্ঞেরও সমালোচনা করেছেন। এর ফলে স্পেন এবং ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। স্পেনে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল।

৩০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন মাদ্রিদে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রোডিকা রেডিয়ান গর্ডনকে পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠান। এই পদক্ষেপের অর্থ হলো স্পেনে দেশটির কূটনৈতিক মিশন অনির্দিষ্টকালের জন্য খালি থাকবে। 

কোহেন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্সে ঘোষণা করেছেন, ‘স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রীর আপত্তিকর মন্তব্যের পর আমি পরামর্শের জন্য স্পেনের ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে জেরুজালেমে ফিরে আসার আদেশ দিয়েছি।'

তিনি যোগ করেছেন, 'ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। সমস্ত জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া এবং গাজায় হামাসের নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব।' 

কূটনীতির ক্ষেত্রে একজন রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করার অর্থ কঠোরতম সতর্কতা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আগের চূড়ান্ত পদক্ষেপ।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করার পর এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী সানচেজ টেলিভিশনে প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানে গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ এবং ছিটমহলটিতে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রার সমালোচনা করেছেন। 

তিনি বলেছেন, ‘আমরা ইসরায়েলি হামলার যেসব ছবি দেখছি এবং বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর যেসব কাহিনী শুনছি বিশেষ করে শিশুদের মৃত্যু তাতে আমার সন্দেহ হচ্ছে যে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করছে।' 

তিনি আরও বলেছেন, ‘গাজায় আমরা যা দেখছি তা অগ্রহণযোগ্য। স্পেন এবং ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হলেও একে অপরকে সত্য জিনিসগুলো বলতে হবে।'  

এই বিবৃতির পর ইসরায়েলে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত আনা সালোমন পেরেজকে দ্বিতীয়বারের জন্য তলব করেছে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনকে স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করার নির্দেশ দিয়েছে।  

এক সপ্তাহ আগে দুই দেশের মধ্যে এই সংকটের শুরু হয়েছিল। সে সময় সানচেজ গাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষকে হত্যার জন্য ইসরায়েলের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি দেশটিকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

একই সময়ে তিনি একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাজি না হলেও স্পেন একক সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।

উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর থেকে  ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের এই হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এদের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি শিশু ছিল। 

জেএম/