প্রিয় নবী সা. যেভাবে খাবার খেতেন
প্রকাশ:
০৫ অক্টোবর, ২০২৩, ০২:৫৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
মাওলানা নুর আলম বিন শাহ জাহান: বিশ্ব মানবতার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুপম আদর্শ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি সর্বোত্তম পথনির্দেশক। তার দেখানো পথেই রয়েছে কল্যাণ ও মুক্তি। আল্লাহ তায়ালা বলেন- নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ সা.- এর জীবনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব, আয়াত নং-২১) খাবার গ্রহণের ধরনও এর বাইরে নয়। একজন মুমিনের খাবার গ্রহণ পদ্ধতি কেমন হবে- তার উত্তম দৃষ্টান্তও রয়েছে রাসুল সা.-এর জীবনে। খাবার গ্রহণের সুন্নত পদ্ধতি ১. শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা : আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন, ‘যখন তোমরা খানা খেতে শুরু করো, তখন আল্লাহর নাম স্মরণ করো। আর যদি আল্লাহর নাম স্মরণ করতে ভুলে যাও, তাহলে বলো, ‘বিসমিল্লাহি আওওয়ালাহু ওয়া আখিরাহ। (রিয়াজুস সলেহিন : ৭২৯) ২.ডান হাতে খাওয়া : রাসুল সা. আজীবন ডান হাত দ্বারা খাবার খেয়েছেন এবং বাঁ হাত দ্বারা খাবার খেতে মানুষকে নিষেধ করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন- ‘তোমরা বাঁ হাত দ্বারা খাবার খেয়ো না ও পান কোরো না। কেননা শয়তান বাঁ হাতে খায় ও পান করে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯১২)। ৩. দস্তরখান বিছানো : আনাস রা. বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সা. পায়াবিশিষ্ট বড় পাত্রে খাবার খেতেন না। কাতাদা রা. কে জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে কীসের ওপর খানা খেতেন? তিনি বললেন, ‘চামড়ার দস্তরখানের ওপর। (বোখারি : ৫৩৮৬) ৪. আঙুল চেটে খাওয়া : রাসুল সা. বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করো তখন আঙুল চেটে খাও। কেননা বরকত কোথায় রয়েছে তা তোমরা জানো না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৯১৪) ৫. হেলান না দেওয়া : আবু হুজাইফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল সা. এর দরবারে ছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে বললেন, আমি টেক (হেলান দেওয়া) লাগানো অবস্থায় কোনো কিছু ভক্ষণ করি না। (বুখারি, হাদিস : ৫১৯০, তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৬) ৬. দোষ-ত্রুটি না ধরা : রাসুল সা. কখনো খাবারের দোষ ধরতেন না। আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুল সা. কখনো খাবারের দোষ-ত্রুটি ধরতেন না। তাঁর পছন্দ হলে খেতেন আর অপছন্দ হলে পরিত্যাগ করতেন। (বুখারি, হাদিস : ৫১৯৮, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৮২) ৭. ফুঁ না দেওয়া : খাবারের মধ্যে ফুঁ দেওয়া অনেক রোগ সৃষ্টির কারণ। রাসুল সা. খাবারে ফুঁ দিতে নিষেধ করেন। ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. কখনো খাবারে ফুঁ দিতেন না। কোনো কিছু পানকালেও ফুঁ দিতেন না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৪১৩) ৮. খাবার তুলে খাওয়া : রাসুল সা. এর খাবারকালে যদি কোনো খাবার পড়ে যেত, তাহলে তিনি তুলে খেতেন। হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন, ‘তোমাদের খাবার আহারকালে যদি কোনো লুকমা পড়ে যায়, তাহলে তা পরিস্কার করে ভক্ষণ করো। শয়তানের জন্য ফেলে রেখো না। (তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪০৩) ৯. দোয়া পড়া : রাসুল সা. খাবার শেষে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাতেন। দোয়া পড়তেন। হযরত আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. খাবার শেষ করে বলতেন, ‘আলহামদু লিল্লাহি হামদান কাসিরান ত্বয়্যিবান মুবারাকান গাইরা মাকফিয়্যিন ওয়ালা মুয়াদ্দায়িন ওয়ালা মুসতাগনান আনহু রাব্বানা। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩২৮৪) আল্লাহ তায়ালা সবাইকে রাসুলের জীবনাদর্শ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমীন লেখক : তরুণ আলেম ও সাংবাদিক এম আই/ |