মাঝ আকাশে তীব্র শ্বাসকষ্ট, ২ চিকিৎসক ৬ মাসের শিশুর প্রাণ বাঁচালেন
প্রকাশ:
০২ অক্টোবর, ২০২৩, ০১:৩২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
ঝাড়খণ্ডের রাজভবনের আইএএস অফিসার হয়ে ডা. নীতিন কুলকার্নি যেভাবে শিশুটিকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই বিমানের অন্য যাত্রীরা। ডা. কুলকার্নি ও ডা. ফিরোজ ৬ মাসের শিশুটিকে বাঁচাতে 'ঈশ্বরের দূত' হয়ে এসেছিলেন বলে টুইট করেছেন কয়েকজন যাত্রী। ৬ মাসের শিশুটির জন্ম থেকেই হার্টের অসুখ। চিকিৎসার জন্য সন্তানকে নিয়ে প্লেনে করে রাঁচি থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন মা। কিন্তু মাঝ আকাশেই তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় শিশুটির। অসহায় মা তখন সন্তানকে বাঁচাতে বিমানের ক্রুদের কাছে অনুরোধ জানান। সেই সময় এগিয়ে আসেন রাঁচির এক সরকারি চিকিৎসক ও তার সঙ্গী। ফলে বিপদমুক্ত হয় শিশুটি। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন রাঁচি-দিল্লি ইন্ডিগো প্লেনের যাত্রীরা। ইন্ডিগো সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে রাঁচি থেকে ৬ মাসের সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিগামী বিমানে উঠেছিলেন এক মহিলা। বিমানটি যখন মাঝ আকাশে, তখন শিশুটির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরিস্থিতি যে খারাপ দিকে যাচ্ছে, তা বুঝতে পারেন বিমানসেবিকারা। শিশুটিকে বাঁচাতে বিমানে কোনও চিকিৎসক রয়েছেন কি না জিজ্ঞাসা করে মাইকে ঘোষণা করেন তাঁরা। সেই ঘোষণা শুনেই এগিয়ে আসেন আইএএস অফিসার তথা চিকিৎসক ডা. নীতিন কুলকার্নি এবং ডা. মোজাম্মিল ফিরোজ। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের প্রধান সচিব হলেও চিকিৎসকের কর্তব্য ভোলেননি ডা.কুলকার্নি। তাই রাঁচি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফিরোজের সঙ্গে তিনি শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। যদিও কাজটি সহজ ছিল না। ডা. কুলকার্নি জানান, শিশুদের জন্য অক্সিজেন মাস্ক ছিল না। ফলে প্রাপ্তবয়স্কদের মাস্ক দিয়েই শিশুটিকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। শিশুটির মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখে জানা যায়, সে জন্মগতভাবে হার্টের রোগী। চিকিৎসার জন্য তাকে দিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শিশুটির শ্বাসকষ্টের জন্য তৎক্ষণাৎ বিশেষ ইঞ্জেকশনের দরকার ছিল। যার মধ্যে একটি শিশুটির মায়ের কাছে ছিল। সেই ইঞ্জেকশন শিশুটিকে দেন ডা. কুলকার্নি। সেটা সেই সময় ভীষণ কাজে এসেছিল বলে তিনি জানান। অক্সিমিটার না থাকায় শিশুটির শরীরে অক্সিজেন কতটা রয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছিল না। তবে নানাভাবে শিশুটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যান ডা. কুলকার্নি এবং ডা. ফিরোজ। তাঁদের তৎপরতায় ধীরে-ধীরে শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল হয় এবং স্টেথোস্কোপের তার হৃৎস্পন্দন ধরা পড়ে। বিমানকর্মীরাও নানাভাবে শিশুটির চিকিৎসায় সহায়তা করেছিলেন বলে জানান ডা. কুলকার্নি। তারপর বেলা ৯টা ২৫ মিনিট নাগাদ বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই শিশুটিকে সম্পূর্ণ অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে এইমস হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নানান চেষ্টায় শিশুটি বিপন্মুক্ত হওয়ায় তাঁরা খুশি বলে জানিয়েছেন ডা. কুলকার্নি। এম আই/
|