শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ।। ১৬ মাঘ ১৪৩১ ।। ১ শাবান ১৪৪৬


‘আল্লাহর হক আদায় ও রাসূলের আনুগত্যেই মানুষের শান্তি’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম পর্ব। আজ বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আম  বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয় বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় বৃহত্তর এই জমায়েত। আম বয়ান করেছেন মাওলানা ইবরাহিম দেওলা। তরজমা করেছেন মাওলানা জুবায়ের আহমাদ।

বয়ানে আল্লাহ তায়ালার হক পালন ও মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য কিসে দুনিয়া ও দুনিয়ার মানুষের সুখ তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বয়ানে বলা হয়েছে,  আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াকে পরীক্ষার জন্য  বানিয়েছেন। তিনি কখনো নেয়ামত দিয়ে পরীক্ষা করেন আবার কখনো নেয়ামত কেড়ে নিয়ে পরীক্ষা করেন। যে এই পরীক্ষায় আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে পারে সে সফল হবে। এজন্য আল্লাহ তায়ালা যেই দায়িত্ব দিয়েছেন তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে যেভাবে বিভিন্ন প্রয়োজন দিয়েছেন অন্য প্রাণীদেরও তেমনি প্রয়োজন দিয়েছেন। কিন্তু প্রাণীরা যেভাবে তাদের প্রয়োজন পূরণ করে মানুষ একইভাবে প্রয়োজন পূরণ করে না। বরং তার জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে স্পষ্ট বিধান দেওয়া হয়েছে, মানুষের জন্য আল্লাহর এই বিধান মানা জরুরি। প্রাণীর জন্য আল্লাহর বিধান মানার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।মানুষ যা কিছু পায় সবই আল্লাহর নেয়ামত। কিন্তু মানুষ এক সময় তা ভুলে যায় এবং দুনিয়াতে তাকে পাঠানোর মূল কারণ ও দায়িত্ব ভুলে যায়।

আল্লাহ তায়ালা মানুষ এবং জীন জাতিকে শরীয়তের মুকাল্লাফ বানিয়েছেন। তারা ভালো কাজ করলে প্রতিদান দেবেন। মন্দ কাজ করলে শাস্তি দেবেন এবং তার প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন। মানুষ ছাড়া অন্য  প্রাণীদের ওপর কোনো বিধান দেননি তিনি। তাই মানুষ ও জীনের আল্লাহর বিধান মানা জরুরি।

আল্লাহ আসমান, জমিন, চাঁদ সূর্য ও অন্যান্য সৃষ্টিকে যেসব দায়িত্ব দিয়েছেন তারা তা ঠিকমতো পালন করে। অর্থাৎ চাঁদ, সূর্য আলো দেয়, জমিন মানুষের বসবাসের জন্য। মানুষেরও উচিত আল্লাহ যে কারণে সৃষ্টি করেছেন তা পালন করা।

যে ব্যক্তি আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব পালন করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে সাহায্য করবেন এবং আল্লাহর বিধান পালন করা তার জন্য  সহজ করে দেবেন। এর বিপরীত অর্থাৎ, আল্লাহ দেওয়া বিধান ঠিকমতো পালন না করলে তাকে আখেরাতে শাস্তি দেবেন এবং দুনিয়াতেও তাকে অপদস্ত করবেন। এর জ্বলন্ত উদাহরণ কারুণ, হামান, ফেরাউন। আল্লাহ তায়ালা তাদের পৃথিবীর সব ঐশ্বর্য দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা আল্লাহ তায়ালার বিধান মানেনি, ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদের দুনিয়ার চোখে অপমান, অপদস্ত করেছেন। বর্তমানেও যারা আল্লাহর বিধান মানে না আল্লাহ তায়ালা তাদের সব কিছুতে পেরেশানী, টেনশন তৈরি করে দেন।

সম্পর্ক অনুপাতে হক ও অধিকার আদায় করতে হয়। আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সব থেকে বেশি। কারণ, তিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন, এজন্য তার হক সবার আগে আদায় করতে হবে। এরপর অন্য কিছু।

আল্লাহর হক হলো তার সঙ্গে কাউকে শরীক না করা। তাকে এক মানা। এরপর আল্লাহর রাসূল সা.-এর হক আদায় করা। আল্লাহর রাসূল সা.-এরপর আল্লাহর কিতাবের হক আদায় করা। যখন মানুষ আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল সা. ও আল্লাহর কিতাবের হক আদায় করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে সুখে শান্তিতে রাখবেন। আল্লাহর রহমত নাজিল হবে, পুরো দুনিয়া শান্তিতে ভরে যাবে।

আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে মাওলানা ইবরাহিম দাওলা বলেন, মনকে আল্লাহর দিকে একাগ্র করার জন্য এবং আমাদের ওপর আল্লাহর যেই হক আছে তা শেখার জন্য ও আমার ওপর আল্লাহর কি হক আছে তা শেখার জন্য আল্লাহর রাস্তায় বের হতে হবে।

তিনি বলেন, দ্বীন হলো আল্লাহ ও তার রাসূলের অনুসরণ ও অনুগত্য  করা, জীবনের প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহ ও তার রাসূল সা.-এর দেখানো পদ্ধতিতে পালন করতে হবে। আল্লাহর রাস্তায় তিন দিন, ৪০ দিন, ৪ মাস সময় দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ ও তার রাসূল সা.-এর অনুগত্যের পদ্ধতি শেখা।

আমাদের মাঝে আল্লাহ তায়ালার অনুগত্যের স্বভাব চলে এল আমরা সফল হতে পারবো। সাহাবারা যেভাবে আল্লাহ ও রাসূল সা.-কে অনুসরণ করছেন আমাদেরও যেভাবে অনুসরণ করতে হবে।

শ্রুতিলিখন: নুরুদ্দীন তাসলিম

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ