সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ।। ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১২ জিলকদ ১৪৪৫


ওয়াজের ময়দানগুলোর ঐতিহ্য ধরে রাখতে মুফতি আরিফ বিন হাবিবের ৫ প্রস্তাব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| কাউসার লাবীব ||

ওয়াজ হলো মানুষকে সদুপোদেশ দেয়া ও তাদের কল্যাণের পথে ডাকা। এক সময় শুধু সমাজের বুজুর্গ ও সাধক আলেমগণই ওয়াজ করতেন। কিন্তু এখন ওয়াজে পেশাদারিত্ব এসেছে। সুরেলা ব্যক্তিরা ওয়াজকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করছেন। জ্ঞানের স্তর যাই হোক না কেনো এসব বক্তা তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে আশ্রয় নেন নানা কৌশলের। কেউ বেছে নেন মনগড়া কিচ্ছা-কাহিনী, কেউ আশ্রয় নেন জ্ঞানহীন সুর ও গান আবার কেউ বেছে নেন হাসি-কৌতুক। 

ইসলামী বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা করছেন এদেশের শত বছরের সামাজিক ঐতিহ্য ‘ওয়াজ-মাহফিল’ এসব কারণে হুমকির মুখে পড়তে পারে। তারা এর থেকে উত্তরণের জন্য নিজেদের মতো করে নানা পরামর্শও দিচ্ছেন।

বর্তমান সময়ে কোরআন হাদিসের আলোকে যেসব তরুণ আলেম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আলোচনা করে থাকেন তাদের অন্যতম মুফতি আরিফ বিন হাবিব। তার আলোচনায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে তাকে হাদিসের ‘এনসাইক্লোপিডিয়া’ও বলে থাকেন। প্রতিটি আলোচনাতেই তিনি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে দলিলভিত্তিক কথা বলেন। মেধার স্বাক্ষর রাখেন জ্ঞানগর্ভ উপস্থাপনায়। হাদিসের কিতাবের নাম, পৃষ্ঠা নম্বর, হাদিস নম্বর যেন তার চোখে ভাসে। সাবলীলভাবে আলোচনায় ইতোমধ্যেই শ্রোতাদের মন জয় করেন এ আলেম।

ওয়াজ-মাহফিলের ময়দানে প্রশংসিত এই আলেম এবার দ্বীনি মাহফিলগুলো রক্ষায় বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি অবলম্বন না করলে অনিয়ন্ত্রিত ময়দান নিয়ন্ত্রণে আসবে না।

প্রস্তাবগুলো হলো-

এক. প্রতিটি মাহফিলের শিরোনাম হবে তাফসীরুল কুরআন মাহফিল।

দুই. স্থানীয় আলেমদের পরামর্শ নিয়ে ছোট সুরা বা বড়  সুরার আয়াত নির্ধারণ করতে হবে।

তিন. আলোচকের পক্ষ থেকে তারিখ ফাইনাল হলে সেদিনই তাকে (আলোচককে) নির্ধারিত সুরা বা আয়াত নম্বর জানিয়ে দিতে হবে।

চার. পোষ্টারে প্রত্যেক আলোচকের নামের নিচে তার জন্য নির্ধারণ করা সুরা বা আয়াত নম্বর লিখে দিয়ে সেই আলোচকের কাছে পোষ্টার পাঠিয়ে দিতে হবে।

পাচ.  আলোচক আলোচনা শুরু করবে এভাবে-

نحمده ونصلي علي رسوله الكريم
أما بعد فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم

নির্ধারিত সুরা বা আয়াত পড়ে বলবে , প্রিয় উপস্থিতি আমার আলোচ্য বিষয় এই সুরার এত নম্বর আয়াত। ......   আলোচনা শুরু।

ছয়. আলোচক যদি আপনাদের নির্ধারিত আয়াত বা সুরা নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত না হয়, তাহলে তাকে আমন্ত্রণ করার প্রয়োজন নাই।

এর ফলে যে উপকারিতাগুলো হবে, তাহলো-

এক.  আমি ১৪ মাদ্রাসার শাইখুল হাদীস, ১৫ মাদ্রাসার মুহতামিম, ১৬ মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক ইত্যাদি কথা থেকে জাতী মুক্তি পাবে।

দুই. রাস্তায় এই দেখেছি, সেই দেখেছি, ঘরে এই হয়েছে সেই হয়েছে, অমুক আর তমুক জাতীয় অনর্থক কথা থেকে বাচা যাবে।

তিন. আলোচক সাহেব মাহফিলে যাওয়ার আগে আজাইরা মোবাইল না চালিয়ে পড়াশোনা করবে।

চার. মাহফিল গুলি কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক উপকারী মাহফিল বলে বিবেচিত হবে।

অন্যথায়, আজাইরা অমুক, তমুক নিয়ে ফেইসবুকে লেখালেখি করে লাভ নাই।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ