সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ।। ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১২ জিলকদ ১৪৪৫


বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো ‘জোড় ইজতেমা’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| কাউসার লাবীব ||

মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও সমৃদ্ধ কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো তাবলিগ জামাতের ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা।

আজ সকাল ১০ টায় তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা জোড় ইজতেমার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। মোনাজাতে বিশ্ব শান্তি, সারা দুনিয়ার মুসলিমদের পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, পরিপূর্ণ হেদায়েত ও আল্লাহর সব হুকুম মানা আর নবী করীম সা. এর দেখানো পথে জীবন পরিচালনা করার তৌফিকের জন্য আল্লাহর দরবারে আকুতি জানানো হয়।

মোনাজাতে আল্লাহর কাছে নিজেদের অন্তরের খাহেশাত মুক্ত, রাগকে বশ, নাফরমানিকে ঘৃণা ও ভালোবাসা ছড়িয়ে বিশ্ব মুসলিম ভাতৃত্ব গড়া ও দ্বীনের জন্য নিজেদের কবুল করার বিশেষ আর্জি জানানো হয়।

মোনাজাতে তিনি সারা দুনিয়ার মুসলমানদের জান-মাল আর সময়কে আল্লাহর জন্য কবুল, জাহান্নামের ভয়ানক আগুন আর পুলসিরাতের কঠিন পথ মুক্তি এবং মুসলিমদের হকের ওপর অটুট রাখা এবং বাতিল শক্তিকে পরাজিত করার আর্জি জানান। কবরবাসী সকল মুমিন নারী-পুরুষকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান, দ্বীনের জন্য যারা মেহনত করছেন তাদের জান-মাল আর সময় কবুল করে তাদের সম্মান বৃদ্ধি, সাহাবিদের মতো ঈমান, ঈমানি শক্তি, ধৈর্য, প্রজ্ঞা আর সম্প্রতির দোয়া করেন।

এর আগে ফজরের পর হেদায়েতি বয়ান করেন রায়বেন্ডের তাবলিগের মুরব্বি মাওলানা খুরশিদ আলম। বয়ানে তিনি ইমান, আমল, আকিদা, শিরক, বেদাতসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়। দাওয়াতের কাজের গুরুত্ব তুলে ধরা দলমত নির্বিশেষে সকল মুসলমানকে নবীওয়ালা কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

মোনাজাতের পর জোড় ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত ১৪ টি পাহাদার জামাতকে আগামী শুক্রবার জুমা পর্যন্ত ময়দানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। নজমের জামাত, খিত্তার জামাত, জুড়নেওয়ালি জামাতকেও আপাতত ময়দানে উপস্থিত থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া বিদেশিদের জামাতও পরবর্তী সিদ্ধান্ত পর্যন্ত ময়দানেই অবস্থান করবে।

এদিকে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমাকে সফল করতে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়িতে গত শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয় পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা। এবারের জোড় ইজতেমায় ১৫ থেকে ২০ দেশের মেহমান ও মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে সৌদি আরব, সুদান, মুজাম্বিক, আমেরিকা, ভারত, সাউথ আফ্রিকা, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, বেলজিয়াম, মরক্কোসহ বেশকিছু দেশ রয়েছে।

এছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের মুরব্বিদের মধ্যে মাওলানা ইবরাহিম দেওলা, মাওলানা আহমাদ লাট, মাওলানা ইসমাইল গোদরা, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন, মাওলানা জিয়াউল হক, মাওলানা খুরশিদ আলম, ভাই নাঈম, ভাই ফারুক আহমেদ, মাওলানা ইসহাক, মাওলানা যুবায়ের ছাহেবসহ অনেক মুরব্বিরা জোড় ময়দানে উপস্থিত ছিলেন ও বয়ান করেন।

আরো পড়ুন>> ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ

প্রসঙ্গত, সাধারণত বিশ্ব ইজতেমার আগে জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এ জোড় ইজতেমায় তাবলীগের সব সাথীরা অংশ গ্রহণ করতে পারেন না। শুধুমাত্র তিন চিল্লার সাথীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ জোড় ইজতেমা।

তিন চিল্লার সাথীদের মধ্য থেকে কিছু অংশ বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনে টঙ্গীর ইজতেমার মাঠে কাজে যোগদান করেন। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ইজতেমা মাঠের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন তারা। আর বাকী সাথীরা বিশ্ব ইজতেমার দাওয়াত নিয়ে ময়দানে বেরিয়ে পড়েন।

উল্লেখ্য, টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণজমায়েত বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে ৫৭ তম বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমার প্রথম পর্ব ২০২৪ সালের  ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব  ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের ইজতেমায় আলমী শূরাপন্থী মুসল্লিরা অংশ নেবেন। তিন দিনের প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষ হবে ৪ ফেব্রুয়ারি। ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এতে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নেবেন।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ