শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ২৫ নভেম্বর ‘আলেমদের নেতৃত্বেই কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন সম্ভব’ বইমেলায় ‘সঠিক নিয়মে হাতের লেখা প্রশিক্ষণ বাংলা’-এর মোড়ক উম্মোচন সিলেটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সমাবেশ শনিবার সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আলেম রাজনীতিবিদরা খালেদা জিয়াকে পেয়ে সেনাকুঞ্জ গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা লক্ষ্মীপুর মারকাযুন নূরে ১১ মাসে হাফেজ হল ১১ বছরের শিশু আফসার যেসব অভ্যাস নীরবে মস্তিষ্কের ভয়াবহ ক্ষতি করে বৈষম্য ও অন্যায় নির্মূলে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই: মজলিস আমীর আওয়ামীলীগকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান খেলাফত মজলিসের

মায়ের শূণ্যতা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

যাকারিয়া মাহমুদ: তখন যেমন চাঁদ ছিলো, রাত ছিলো জোসনাবর্ষণমুখর, তারাদের মেলা ছিলো আকাশজুড়ে, আজও আছে। সেই চাঁদ, সেই তারা; আগের মতোই জোসনা ছড়ায়। জোনাকিরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যায় অচিন অজানায়। স্বরে তাদের জড়তা আসেনি; তেমনি আছে যেমন ছিলো আগে, বহুবছর আগে। রোজ সকালে সূর্য ওঠে। বিকেল গড়াতেই হারিয়ে যায় অস্তাচলে। সবই আগের মতোই আছে। হয়তো রবে আরো বহুকাল। কিন্তু মা! নেই শুধু তুমি আর তোমার স্নেহমাখা মায়া।

জানো, তোমার জন্যে কত কাঁদি আমি! নিঃশব্দে ঝড়ে পড়ে কত অশ্রু! এই কান্নার ভাষা নেই; আছে শুধু দীর্ঘশ্বাস। আজও খুব মনে পড়ে সেই মায়া ভরা মুখ। বারবার চোখে ভাসে তোমার বিদায় বেলার দৃশ্য। ভুলে থাকতে চাই তোমায়। কিন্তু ব্যর্থতা এসে পথ আগলে দাঁড়ায়। যতবার ভুলতে চাই, কে যেন কড়া নাড়ে স্মৃতির বদ্ধ দুয়ারে। ঠিক ততবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্মৃতিগুলো ভেসে ওঠে, হৃদয়ে শুরু হয় রক্তক্ষরণ!

মা! তোমায় দেখেছি আমি মৃত্যুশয্যায় শায়িত। শুনেছি অসুস্থাবস্থায় তোমার কাতরধ্বনি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে তুমি কাঁদছিলে। তোমার দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছিলো অবাধ্য অশ্রু। আজও মনে পড়ে, তুমি আমায় কাছে টেনে কাতরকণ্ঠে বলেছিলে, আমি মরে গেলে কাঁদিসনে খোকা! তোমার কথার অর্থ আমি বুঝিনি সেদিন। বুঝেছি পরে, বহুপরে..।

মা! যেদিন তুমি চলে গিয়েছিলে এই ধরাধাম ছেড়ে, সেদিন দেখেছি তোমায়। চাদরাবৃত হয়ে শুয়েছিলে খাটে। সবাইকে সেদিন কাঁদতে দেখেছি। আব্বুর চোখে জল দেখেছি সেদিনই প্রথম। ভাইয়া কেঁদেছে। আপু কেঁদেছে। কাঁদিনি শুধু আমি। কেন যেন কাঁদতে পারিনি। সেদিন যতবার দেখেছি তোমায়, মনে হয়েছে, এই তো ঘুমিয়েছো তুমি। খানিক বাদেই জেগে উঠবে আবার। কিন্তু কচি মনের সেই ধারণা আমার ভুল ছিলো। জেগে উঠোনি তুমি, উঠবে না আর কোনদিন।
তারপর তোমায় কাফন পরানো হলো যখন, বিস্ময়ে প্রশ্ন ছুড়েছিলাম, আপু! অমন কাপড় পরালে কেন আম্মুকে? জবাবে পাইনি কিছুই। দেখেছি শুধু ঘোলা অশ্রু, তপ্ত নোনাজল।

তোমায় কবরে রাখা হলে কে যেন আমার কানে কানে বলল, এই যে দেখছো মাটির গর্ত; এখান থেকে কেউ ফিরে আসে না। বুকে তখন অনুভব করেছি চিনচিনে এক ব্যথা। হৃদয়াকাশে জমেছিলো এক খণ্ড মেঘ।তবে অশ্রু আমার বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়েনি। এরপর তুমিহীন কাটতে থাকে আমার রাত্রিদিন। রাতে ঘুমুতে গিয়ে যখন তোমাকে না পেতাম, হৃদয় ফুঁড়ে কান্না বেরুতো। আমাকে বুকে জড়িয়ে নিতো আপু। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতো ভাইয়া। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নানান ছলনায় ঘুম পারাতো আমায়। যতবার কান্না পেতো আপু আমায় সান্ত্বনা দিতো, ভুলিয়ে দিতো তোমার শূণ্যতা। কিন্তু মা যে মা-ই। তার মতো যে আর কেউ হতে পারে না। তবে আপুর স্নেহ-মমতায় কখনো কখনো প্রায় ভুলেই যেতাম তোমার শূণ্যতা। ভালো থাকুক সকল মা। সুখে থাকুক সকল আপু।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ