আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে ও মানবিকতা রক্ষা করতে বিশ্বজুড়ে কাজ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আইটিভি ইউএসএ। তাদের উদ্দেশ্য হলো- বিশ্বজুড়ে ইসলাম ধর্মের বিষয়ে মানুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তোলা।
আইটিভি ইউএসএ তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে জানিয়েছে, আমরা বিশ্বজুড়ে প্রত্যেক মুসলিমের কণ্ঠ হওয়ার কাজ দিয়ে শুরু করি। আমরা এমন একটি বিশ্ব তৈরি করতে চাই যেখানে সবাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করতে পারবে। যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে সমাজকে বিভক্ত করা হবে না।
আইটিভি বলছে, আমাদের বিশ্বে কোনো হিংস্রতা থাকবে না। থাকবে শুধু শান্তি। আমরা সুখ ও শান্তিতে পরিপূর্ণ একটি বিশ্বের স্বপ্ন দেখি। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের থেকে সেই দিন বেশি দূরে নেই। আমাদের সঙ্গে থাকুন এবং শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলুন।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আইটিভি কর্তৃপক্ষ বলেছে, আমাদের লক্ষ্য হলো অন্তরকে শিক্ষিত করে মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করা এবং নৈতিক মূল্যবোধের মাধ্যমে আত্মাকে পূর্ণ করা। এছাড়া মানুষকে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নৈতিকতার ওপর ভিত্তি করে একটি সুস্থ জীবনধারা গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করা। এছাড়াও আমরা আমাদের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের দর্শকদের বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে চাই। আমরা দর্শকদের কণ্ঠস্বর এবং বিবেক হতে চাই।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আমরা তথ্য জ্ঞান এবং বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ তথ্য প্রদানকারী। আমরা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য একটি শিক্ষামূলক এবং তথ্যপূর্ণ মিডিয়া হয়ে উঠতে চাই।
আইটিভি ইউএসএ এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ইসলামের অন্তর্নিহিত সুখ ও শান্তি প্রচারের মিশন নিয়ে আইটিভিইউএসএ যাত্রা শুরু করেছিল। আমরা সাধ্যানুযায়ী মানবতার মঙ্গলের জন্য অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেখানে প্রত্যেকে নিরপেক্ষ সমাজে বসবাসের সুবিধা উপভোগ করতে পারে।
সিইও বলেন, অল্প পরিসরে শুরু হলেও আমাদের অত্যন্ত ব্যাপক এবং সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরার ও দর্শক-শ্রোতাদের ধর্ম অনুশীলন বাড়ানোর আমন্ত্রণ জানানোর লক্ষ্য নিয়েছি। যার মাধ্যমে ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করা যায়।
হাজার হাজর টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যে কেন আইটিভি ইউএস এ চালু করা হয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিইও মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, আইটিভি ইউএসএ অন্য সব টেলিভিশন চ্যানেলের মতো নয় যেগুলো আমরা জানি। এটি ইসলামের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়ানো ও ভুল বোঝাবুঝি প্রতিরোধ করা, বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শ্রোতাদের সঠিক ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি এবং নীতি নির্ধারকদের কুরআন ও সুন্নাহর ওপর ভিত্তি করে সঠিক ইসলামি শিক্ষা দিয়ে প্রভাবিত করা। আইটিভি ইউএসএ উত্তর আমেরিকা ও তার বাইরে ৩৫টি নেটওয়ার্কে চলছে। বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে এর প্রোগ্রামগুলো উপভোগ করা যায়।
মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, আইটিভি ইউএসএ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস, শিক্ষা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার মাধ্যমে মানবতার মঙ্গল আসবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৭০ জন ইসলামিক স্কলার আইটিভি ইউএসএর সঙ্গে কাজ করেন। তারা বিভিন্ন প্রোগ্রামে ইসলামিক জ্ঞানগর্ভমূলক বক্তব্য দেন। বিশ্বের ১১০টি দেশে আইটিভি ইউএসএ এর ব্রডকাস্টিং রয়েছে।
উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ইসলামিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আইটিভি ইউএসএ। পবিত্র কোরআনের লাইভ ক্লাস, ইউথ প্রোগ্রাম, হালাল বিনোদন, হালাল ইনভেসমেন্ট, কমিউনিটি প্রোগ্রাম, সিরাহ প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন আয়োজন করে টেলিভিশন চ্যানেলটি। এছাড়া বছরজুড়ে বিভিন্ন ইসলামিক দিবস গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে আইটিভি ইউএসএ।
আগামীতে যুবক, নারী ও শিশুদের জন্য শিক্ষা ও ইসলামিক বিনোদনমূলক বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করবে আইটিভি ইউএসএ। এছাড়া এই বিষয়ক বই ও ম্যাগাজিনও প্রকাশ করবে তারা।
৩৫টির বেশি নেটওয়ার্ক, চারটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, দুটি মোবাইল এপ্লিকেশন এবং একটি ওয়েবসাইটে চ্যানেলের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। চ্যানেলটি এখন পর্যন্ত ৯৫০টি টেলিভিশন প্রোগ্রাম, শিশুদের জন্য ২৭০টি, যুবকদের জন্য ১২৫টি, নারীদের জন্য ১৫০টি প্রোগ্রাম এবং ১৬২০টি কমিউনিটি ইভেন্ট আয়োজন করেছে। ইসলামিক বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউটিউব চ্যানেলে ৫২২০টি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে।
আইটিভি ইউএসএ ২৫টি ম্যাগাজিন, পাঁচটি ইসলামিক বই এবং ১০টি বিষয়ভিত্তিক বই প্রকাশ করেছে। চ্যানেলটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় ও সরকারি বেশ কয়েকটি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের সম্মানিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ, জাতিসংঘের নারী ও শিশু বিষয়ক সংস্থাসহ বিশ্বের খ্যাতিমান ৭০টিরও বেশি সংস্থা আইটিভি ইউএসএ এর সঙ্গে সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
আসন্ন রমজান উপলক্ষে চ্যানেলটি ব্যাপক আয়োজন হাতে নিয়েছে।
টিএ/