আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পর পর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে আগামী এপ্রিলে অবসরে যাচ্ছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আগামী ২৩ এপ্রিল তার মেয়াদ শেষ হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গভবন ছাড়বেন তিনি। ইতোমধ্যেই তার বিদায়ের দিনগণনাও শুরু হয়েছে।
কিছুদিন আগেই দেশের পরবর্তী (২২তম) রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে নতুন রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করার কথা রয়েছে।
দীর্ঘ ৬৪ বছরের রাজনৈতিক জীবনে অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে সুসম্পর্ক হয়েছে আবদুল হামিদের। তাই বিদায়ের আগে তাদের কয়েকজনকে গতকাল রোববার বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। তাদের সঙ্গে গল্প-আড্ডায় নানা স্মৃতিচারণা করেছেন, পাশাপাশি জানিয়েছেন অবসর জীবনের পরিকল্পনা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকেই বঙ্গভবনের দরবার হলে জড়ো হতে থাকেন আমন্ত্রিত সাংবাদিকরা। সাড়ে ৭টার দিকে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি সেখানে প্রবেশ করেন। এ সময় আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। প্রটোকল ডিঙিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং হাসিমুখে সবার সঙ্গে ছবিও তোলেন।
তিনি লেখালেখি করে অবসর জীবন কাটানোর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি। মো. আবদুল হামিদ জানান, বঙ্গভবন ছেড়ে রাজধানীর নিকুঞ্জের বাসায় উঠবেন। মাঝে মাঝে যাবেন জন্মস্থান মিঠামইনে। আর লেখালেখি করে অবসর সময় কাটাবেন।
সাংবাদিকদের সাথে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাংবাদিকদের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। সারা জীবন সততার সঙ্গে রাজনীতি করেছি। ৬৪ বছরের জীবনে সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমার জন্য নেগেটিভ কিছু পাইনি, সংবাদকর্মীদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বরাবরই সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার একটা সুসম্পর্ক ছিল। বিশেষ করে আমি যখন ডেপুটি স্পিকার ছিলাম এবং শেষে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করা পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে আমার খুবই আন্তরিক সম্পর্ক ছিল।’
বিদায়ী রাষ্ট্রপতি হাওর এলাকার কিছুটা পরিবর্তন আনতে পেরেছেন জানিয়ে বলেন, ‘কোনো সরকারের আমলেই ব্যক্তির জন্য কিছু চাইনি। প্রতিটি রাজনীতিবিদ যদি এ রকম মনমানসিকতা পোষণ করেন, তাহলে অবশ্যই এলাকার উন্নয়ন হবে।’
আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘আর ৪২ দিন পর আমি জনতার মাঝে ফিরে যাব। আমার ভালো লাগছে, আমি সম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে পেরেছি। সবার কাছেই আমি কৃতজ্ঞ।’ এ সময় সাংবাদিকদের হাওর এলাকায় এবং ঢাকার নিকুঞ্জের নিজ বাসভবনে আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- প্রবীণ সাংবাদিক আবেদ খান ও নাঈমুল ইসলাম খান, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, বর্তমান সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টিভির সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ডিবিসির প্রধান সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম, এটিএন বাংলার নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, সাংবাদিক আশিষ সৈকত, নাফিজা দৌলা ও নীলাদ্রি শেখর।
টিএ/