আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পুরো ঢাকা যেন মৃত্যুকূপ। ৭২ হাজার ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত এসব আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সংযোগ। নেই কোনো সংস্কার। ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানি।
মেগা সিটি ঢাকার সুউচ্চ ভবনগুলো যেন আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। অথচ ভবনগুলোর চাকচিক্য কতটা ভঙ্গুর, তা চোখে আঙুল দিয়ে জানান দেয় কিছুদিন পরপর ঘটা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
কখনো ভবনধস, কখনো ভয়াবহ আগুন, আবার কখনো গ্যাস বিস্ফোরণ। ঝরে পড়ে তাজা প্রাণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, রাজধানীজুড়ে আছে ৭২ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন।
রাজধানীর ভবনগুলো কেন এতটা দুঘর্টনাপ্রবণ–এমন প্রশ্নে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়ম না মেনে ভবন তৈরি, অনিরাপদ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ, ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ মেরামত না করাসহ ভবনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাগুলোর মূল কারণ।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বছরে গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার ভবনের অনুমোদন দেয়।
কিন্তু গড়ে প্রতিবছর ৯০ হাজারের বেশি ভবন তৈরি হচ্ছে। তাহলে বাকিটা কীভাবে হচ্ছে? তাই যারা ভবন তৈরি করছেন, তাদের অনুরোধ করব, বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী যেন তৈরি করেন।’
এমন অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা এখন টাইমবোমায় পরিণত হয়েছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় বিপর্যয়। আর এ জন্য সেবা সংস্থাগুলোর দায়িত্বে অবহেলা ও জনগণের অসচেতনতাই দায়ী।
নগর ও পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘রাজধানী ঢাকা একটা টাইমবোমার মতো বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ভূমিকম্পের পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
কারণ, অসংখ্য গ্যাস লাইন নগরীর তলদেশে জালের মতো ছড়িয়ে আছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছে তার নকশাও নেই। তারা জানেও না কোথায় কোথায় গ্যাস লাইন রয়েছে! আবার সেগুলোর সংস্কারও করা হচ্ছে না। যদি সেগুলো বিস্ফোরণ হয়, তবে বিপুল পরিমাণ গ্যাস উদ্গিরণ হবে।’
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রতিটি ভবনে অটোভালভিং সিস্টেম নিশ্চিতের তাগিদ ফায়ার সার্ভিসের। অটোভালভিংয়ে নির্দিষ্ট মাত্রার কম্পন অনুভূত হলেই সবভবনের গ্যাস সংযোগ স্বয়ংস্ক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। আর তাতে গ্যাস বিস্ফোরণ সংক্রান্ত দুর্ঘটনা শতভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
-এটি