মাওলানা জামিল আহমদ: ভাল ফলাফল করতে হলে সারাবছর সময় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে হয়। অপরিকল্পিত অনেক পরিশ্রমে সফলতা অর্জিত হয় না। আগামীকাল থেকেই শুরু হচ্ছে বেফাকের ৪৬ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষা।
বিশেষভাবে পরীক্ষাপূর্ব প্রস্তুতির সময় সুচিন্তিতভাবে একটি রুটিন তৈরি করে নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী সময় কাজে লাগাতে হবে। রুটিনটি পড়ার সময় ও পঠিতব্য বিষয়গুলোর পরিমানের মাঝে সামাঞ্জস্য বজায় রেখে তৈরি করতে হবে।
যাতে করে কোনো একটি কিতাব বা বিষয় পড়তে পড়তেই সময় শেষ না হয়ে যায়। দরস চলাকালীন সময় ও দরসের ফাঁকে ফাঁকে বহু সময় পাওয়া যায়। সে সময়ও কোনো একটি কিতাবের প্রস্তুতির জন্য কাজে লাগাতে হবে।
কমপক্ষে ভালো ফলাফল প্রত্যাশী একজন সচেতন ছাত্রের ক্ষেত্রে তা অবশ্যই কাম্য। ভাল ফলাফল প্রত্যাশীদের জন্য কিছু পরামর্শ ধরা হলো।
মূল কিতাব সামনে রেখে পড়া
পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতির সময় অনেক ছাত্র শুধু শরাহ-শুরু হাত ইত্যাদি দেখে পড়ে থাকে। বিশেষত উপরের ক্লাশগুলোতে এ সমস্যা বেশি । এতে মূল কিতাব হতে বিষয়টি ভালোভাবে উপলব্ধি না করার কারণে প্রশ্নের ঢঙ সামান্য পরিবর্তন হলেই নোটনির্ভর ছাত্ররা উত্তর দিতে তালগোল পাকিয়ে ফেলে।
তাই অবশ্যই মূল কিতাব থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে শরাহ -শরু হাতের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। তবে তা মূল কিতাব বাদ দিয়ে কখনোই নয়।
গুরু ত্বপূর্ণ বিষয় নোট
প্রস্তুতির সময় গুরু ত্বপূর্ণ অথচ খুঁজে বের করতে হয় এমন বিষয়সমূহের অবশ্যই নোট করতে হবে। যাতে একই বিষয় বারবার খুঁজতে গিয়ে সময় নষ্ট না হয়।
সারসংক্ষেপ বের করা
আমাদের কওমি মাদরাসার কিতাবসমূহ যেহেতু অধিকাংশই প্রাচীনধারায় লিখিত তাই এ সকল কিতাবে অনেক ক্ষেত্রে আলোচ্য বিষয়টি বিন্যস্ত ও পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে না। এজন্য কোনো বিষয় পড়ার পর অবশ্যই তার সারসংক্ষেপ ও মোটকথা চিন্তা করে অত্মস্থ করে নিতে হবে। প্রয়োজনে খাতায় নোট লিখে রাখতে হবে।
শের বা কবিতার ক্ষেত্রে
মাঝে মাঝে উদাহরণ দিতে গিয়ে কিতাবের মধ্যে শের এসে যায়, সেক্ষেত্রে পাঁচটি বিষয় জেনে নিলে ভালো হয়।
১. শব্দের তাহকিক ২. পূর্ণ শের-এর অনুবাদ ও র্মম ৩. মহল্লে ইসতেশহাদ তথা যার মাধ্যে উদাহরণ দেওয়া হয়েছে ৪. মিসাল ও মুমাসসাল এর সামাঞ্জস্যতা ৫. শায়ের বা কবির নাম।
নাহু-সরফের ক্ষেত্রে
নাহু-সরফের কিতাবের ক্ষেত্রে মূল বিষয়টি বুঝে কিতাবে প্রদত্ত্ব উদাহরণের বাইরেও প্রচুর উদাহরণ তৈরি করা আবশ্যক। এতে মূল বিষয়ের বুৎপত্তি অর্জিত হয়। নির্ধরিতসময়ে পঠিত বিষয়ে ইজরা বা নিজেরা পর্যালোচনা করা উচিত।
পরীক্ষার ভাষা
কোন ভাষায় পরীক্ষা দিবে, তা আগেই ঠিক করে নির্ধারণ করা উচিত। যাতে পরীক্ষা জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় সে হিসেবে প্রস্তুতি নেয়া যায়। পরীক্ষার জন্য ঐ ভাষাটিই নিধারণ করা উচিত, যে ভাষায় সে স্বাু ছ্যন্দে উত্তর লিখতে পরে।
অনেকে কোন পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই হঠাৎ আরবিতে উত্তর দিতে গিয়ে মূল বক্তব্য লিখতে পারে না, ফলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়। এজন্য বেফাক পরীক্ষায় আরবিতে উত্তর দিতে হলে পূর্ব থেকে অভ্যাস করতে হবে।
বাংলায় যারা উত্তর লিখি শুদ্ধবানান, বাক্যবিন্যাস,বাক্যসংযমতার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
বিগত সময়ের প্রশ্নপত্র সামনে রাখা
প্রস্তুতির সময় বিগত সময়ের প্রশ্নপত্র সামনে রাখলে অনেক উপকার পাওয়া যায় এবং পরীক্ষার ধরণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ হয়। পূর্ববর্তী প্রশ্নসমূহের উত্তর লিখে অনুশীলন করা সম্ভব হলে তা অনেক উপকারি। সম্ভব না হলে কমপক্ষে সমস্ত প্রশ্নের উত্তরগুলো জেনে নেয়া আবশ্যক।
রাত জেগে পড়াশোনায় সর্তকতা
অনেকে পরীক্ষার পূর্বে প্রস্তুরি সময় অধিক রাত্রি জাগরণ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে, অবশেষে পরীক্ষাই দিতে পারে না। এমন করা উচিত নয়। তাই প্রস্তুতির সময় স্বাস্থ্য, ঘুম ও খাওয়া-দাওয়ার প্রতি যত্মশীল হওয়াও আবশ্যক।
আত্মপ্রত্যয়ী হওয়া
অনেকের মধ্যে একধরনের হীনমন্যতা বিরাজমান থাকে। যেমন কেউ মনে করে আমার মতো দূর্বল ছাত্র কি করে ভালো ফলাফল করবে? এ ধরনের হীনমন্যতা ভালো ফলাফলের প্রধানঅন্তরায়।
এ হীনমান্যতা পরিহার করে আত্মপ্রত্যয়ী হওয়া আবশ্যক। অন্যরা পারলে আমিও পারবো ইনশাআল্লাহ । এমন দৃঢ়প্রত্যয় ও নিরলশ প্রচেষ্টার যেখানে সম্বনয় ঘটবে, সফলতা সেখানে পদচুম্বন করবে।
পরীক্ষার সরঞ্জামাদি সংগ্রহ
পরীক্ষার হলে প্রবেশের বেশ আগেই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণাদি সংগ্রহ করে রাখবে। না হয় পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগ মুহূর্তে মারাত্মক টেনশনে পড়তে হয়। কমপক্ষে দু’টি ভালোকলম, একটি সাইনপেন (লাল রঙ ব্যতীত) একটি কারেকশন পেন, একটি স্কয়ার স্কেল, একটি বোর্ড ও প্রয়োজন হলে লাইন সোজা করার জন্য মার্জিন করা একটি কাগজ আগে থেকেই সংগ্রহ করে রাখবে।
পরীক্ষার হলে লিখার জন্য একেবারে নতুনকলম ব্যবহার করা ঠিক নয়। কেননা নতুনকলম চালু ও সাবলীল হতে কিছুটা সময় লাগে তাই আগে থেকে লিখে কলম চালু ও সাবলীল করে নিবে। পরীক্ষার হলে অন্যের স্কেল ইত্যাদি নিয়ে টানাটানি করা খুবই বিশ্রি ও বিরক্তিকর কাজ। সকলেরই উচিত নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে আসা।
প্রবেশপত্র
পরীক্ষার হলে যাওয়ার জন্য রু ম ত্যাগ করার সময় বিশেষভাবে খেয়াল করে প্রবেশপত্র নিয়ে নিতে হবে। অনেকে তাড়াহুড়া করতে গিয়ে প্রবেশপত্র নিতে ভুলে যায়। শেষে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
এজন্য সবচেয়ে উত্তম পন্থা প্রবেশপত্র হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা লেমেনেটিং করে স্কটেপ দিয়ে বোর্ডের পিছনে লাগিয়ে নেয়া। এক্ষেত্রে বোর্ডটি খুবই যত্মসহকারে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে তা হারিয়ে না যায়। মনে রাখবে, সমস্ত পরীক্ষা সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পরও প্রবেশপত্রটি সংরক্ষণ করা আবশ্যক। কেননা বেফাক থেকে নাম্বারপত্র ইত্যাদির প্রয়োজনে প্রবেশপত্রের দরকার হয়।
অজু-এস্তেঞ্জা করে ধীরস্থিরভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে গমন
অনেকে হলে প্রবেশের একেবারে পূর্বপর্যন্ত কিতাব নিয়ে এতোটা ব্যবস্ত থাকে যে, ওজু এস্তেঞ্জা পর্যন্ত করে না। পরে হলে যেয়ে বাথরু মে যাওয়ার প্রয়োজন হয় , এতে বহুসময় নষ্ট হয়। তাছাড়া তাড়াহুড়া করে কলম, প্রবেশপত্র ইত্যাদি ফেলে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
তাই এমন না করে আগে থেকেই পরিস্কার-পরিু ছন্ন হয়ে অজু-এস্তেঞ্জা সেরে সবকিছু ঠিকঠাক করে নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ পূর্বেই পরীক্ষার হলে উপস্থিত হবে। প্রথমপরীক্ষার দিন একটু আগেই যেতে হবে। কেননা প্রথম দিন সিট খুঁজে বের করতে অনেকটা সময় লেগে যায়।
প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর
প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার মাত্রই লেখা শুরু করে দিবে না বরং প্রশ্নপত্রটি ভালোভাবে পড়বে। কোথাও অস্পষ্ট বা ভুল থাকলে বা বুঝতে না পারলে উপস্থিত হলপরিদর্শক থেকে বুঝে নিবে। তবে এর পেছনে বেশি সময় ব্যয় করা যাবে না।
দোয়া পড়ে লেখা শুরু করা
লেখা শুরু করার পূর্বে স্ব-সময়ের মধ্যে কিছু দোয়া পড়ে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে নেবে। এতে বরকত হবে। যেমন : দরূদ শরীফ ‘রব্বী যিদনী ইলমা, রব্বীশরাহলী সদরী.... এই আয়াতগুলো পড়ে তিনবার ও ‘আল্লাহুম্মা আল্লীমনী মা জাহিলতু ও যাকরনী মা নাসিতু’ এ দোয়াটি পড়ে বিসমিল্লাহ বলে লেখা আরম্ভ করবে।
রোল নম্বার সঠিকভাবে লেখা
মনে রাখবে তোমার পরীক্ষার খাতাটিই নম্বার প্রাপ্তির জন্য সবচেয়ে গুরু ত্বপূর্ণ। পরীক্ষার শুরু তেই খাতার প্রথম পাতায় রোল নম্বার, মারহালা, বিষয় ইত্যাদির ঘরগুলো নির্ভুলভাবে পূরণ করে নিতে হবে। পরে লেখার জন্য এ কাজ কোনো ক্রমেই বাকি রাখা যাবে না। প্রশ্নের উত্তরগুলো পরিু ছন্নভাবে সাজিয়ে-ঘুছিয়ে খাতায় উপস্থাপন করতে হবে।
প্রশ্ননির্বাচন
কোন প্রশ্নের উত্তর লিখলে আর কোন প্রশ্নটা বাদ দিলে সুবিধা হবে, তা বাছাইয়ের কাজটি সঠিকভাবে করা জরু রি। সাধারণত যে সব প্রশ্নের উত্তর লিখলে পূর্ণ নম্বার পাওয়া যায় জানা থাকলে সে ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া ভালো।
একই ধরণের প্রশ্ন হলে যেটির উত্তর অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে জানা আছে প্রথমে সেটি লিখবে। তবে সাবধান হওয়া দরকার বে-খেয়ালে কোন প্রশ্ন বাকি রইলো কি না অথাব প্রশ্নের ভেতরের ছোট অংশগুলোর উত্তর দেয়া হলো কি না, লিখা শেষ করে তা অবশ্যই যাচাই করবে।
সুন্দর হাতের লেখা
হাতের লেখা সুন্দর ও স্পষ্ট হওয়া উচিত। ভালো ফলাফলের জন্য সুন্দর হাতের লেখা অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। শব্দের এবং লাইনের মাঝে প্রয়োজনীয় ফাঁক রেখে পরিু ছন্ন ও স্পষ্ট করে লিখতে হবে যাতে সহজে পড়া যায়। খুব ছোট ও হিজিবিজি করে লেখবে না। কোন শব্দ, লাইন বা অনুুে ছদ কেটে দিতে হলে পরিস্কার করে কাটবে হিজিবিজি করে নয়।
ভুল শব্দ বা বাক্যাংশের উপর পুনরায় লিখে সংশোধন করা ঠিক নয় বরং এক্ষেত্রে উপরে বা পাশে সঠিক শব্দ বসাতে হবে। এককথায় খাতাটি খুলতেই যেনো পরিক্ষকের মনভরে যায় । এক নি:শ্বাসেই যেনো খাতাটি তিনি পড়ে ফেলতে পারেন। সুন্দর লেখা ও আকষর্ণীয় উপস্থাপনায় জন্য বরাদ্দকৃত চার নাম্বার তখন আশা করা যায়।
সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা
কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য কতোটুকু সময় লাগতে পারে সে হিসাব আগে থেকেই করে নেবে। এমন যাতে না হয় যে বেশি বা ভাল জানা আছে বলে কোনো একটি পশ্নের উত্তর খুব দীর্ঘ করে লিখতে গিয়ে অনেক বেশি সময় খরচ করে ফেললে, পরে সময় স্ব-তার কারণে দু’একটি প্রশ্নের উত্তরই দিতে পারলে না বা কোনো রকম দায়সারাভাবে দিলে।
এতে বেশ ক্ষতি হবে। কেননা বেশি সময় ধরে লিখে কোন প্রশ্নের দুই এক নম্বর বাড়তি জুটলেও সময়ের অভাবে অন্য প্রশ্নে দশ-পনের নম্বার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
প্রশ্নের নম্বর সঠিকভাবে লিখা
কতো নম্বর প্রশ্নের কোন অংশের উত্তর লিখছ তা সুষ্পষ্টভাবে খাতায় স্বাভাবিক লেখার চেয়ে সামান্য বড় করে লিখবে। যেনো সহজেই তা পরীক্ষক বুঝতে পারেন। পৃথক প্রশ্নের উত্তর পৃথক অনুুে ছদে লেখা উচিত।
এমনকি একই প্রশ্নের ক. খ. ইত্যাদি অংশগুলোও পৃথক অনুুে ছদে ছোট শিরোনাম দিয়ে লেখা উচিত। তবে পরীক্ষার খাতায় অযথা আর্ট ও ডিজাইন করতে যাবে না এতে অনেক সময় নষ্ট হয়।
বিশুদ্ধ ও সঠিক বানান
উত্তর পত্রের লেখাগুলোর বানান নির্ভুল হওয়া বাঞ্চণীয়। এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। বানান যারা ভালো জানে তারাও হঠাৎ ভুল করে ফেলে। কাজেই সতর্কতা জরু রি। যে সব বানান সচরাচর ভুল হয় সেগুলো অনুশীলন করা দরকার।
প্রশিদ্ধ ও পরিচিত নামের বানান যেন ঠিক থাকে। বিশেষ করে আরবি উর্দূ শব্দের বানান অনেকেই হাস্যকর রকম ভুল করে থাকে।
কোনো কিছু যেনো বাদ না যায়
কোনো প্রশ্নের উত্তর ছেড়ে আসবে না। না পারলেও যতোটা সম্ভব চেষ্টা করে লেখে আসবে। পূর্ণ না লিখতে পারলেও যতোটা সম্ভব লিখলে কিছু নাম্বার তো পাওয়া যাবে। লক্ষ্য রাখবে একই প্রশ্নের মধ্যে নানা অংশ থাকে। তার কোন অংশ যেনো বাদ না যায়। দশটা শব্দার্থ লিখতে বললে ভুলে আটটা লিখে চলে আসবে না।
পৃষ্ঠা নম্বার লাগানো
উত্তরপত্রে পৃষ্টা নাম্বার লাগানো খুবই দরকার। বিশেষ করে লুজ (অতিরিক্ত কাগজ) নিলে অবশ্যই পৃষ্ঠা নম্বার দিয়ে তারপর লেখবে। অন্যথায় পরীক্ষার শেষে পিন লাগাতে গিয়ে পৃষ্ঠা মিলাতে বহু ঝামেলা পোহাতে হবে ও সময় নষ্ট হবে।
পিনাপ যথাযথভাবে করা
খাতা পিন করার ক্ষেত্রে লক্ষ রাখবে যেনো লেখার কোনো অংশ পিনের কারণে এমনভাবে আটকে না যায় যে, তা আর পড়া যাবে না। একজন্য লেখা শুরু করার আগেই পৃষ্ঠার চতুর্পাশে পর্যাপ্ত স্পেস রেখে মার্জিন করে নেয়া উচিত। যাতে পিন লাগালে সমস্যা না হয়।
রাফ করে নিবে
কোনো কোনো পরীক্ষায় রাফ করার প্রয়োজন দেখা দেয়। বিশেষ করে অংক পরীক্ষায়। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার খাতাতেই রাফ করবে এবং সঠিকভাবে তোলার পর দুটো দাগ টেনে কেটে দেবে। অনেক ছাত্রকেই প্রশ্নপত্রের ফাকা অংশে রাফ করতে দেখা যায়। এটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এমন করলে অনেক সময় নকলের ধারণায় পরীক্ষক খাতা বাতিল করে দিতে পারেন। তাই যখনই রাফ করবে তা খাতাতেই করবে এবং পরিস্কারভাবে কেটে দিবে।
নজরে সানী বা রিভিশন দেয়া
উত্তর লেখা শেষ করে পূর্ণখাতা রিভিশন দিতে পারলে খুবই ভালো হয়। রিভিশন এভাবে দিবে যে, প্রথমেই দেখবে খাতার প্রথম পৃষ্ঠায় রোল নম্বার, মারহালা ইত্যাদি যথাযথভাবে লেখা হয়েছে কি না।
এরপর ধীরস্থিরভাবে দেখবে যেসব প্রশ্নের ক. খ. ইত্যাদি সকল অংশের উত্তর লেখা হয়েছে কি না এবং প্রশ্ন নম্বর ও ক. খ. ইত্যাদি যথাযথভাবে লাগানো হয়েছে কি না। এরপর পূর্ণখাতা ভালভাবে রিভিশন দিবে। ভুল থাকলে ঠিক করে নিবে।
টেনশন করবে না
এবার বলছি সবচেয়ে গুরু ত্বপূর্ণ কথা। ঘাবড়ে না গিয়ে টেনশন না করে শান্তভাবে পরীক্ষা দেবে। তা না হলে জানা ও ভালোভাবে পড়া প্রশ্নের উত্তরও তালগোল পাকিয়ে যেতে পারে। এজন্য পরীক্ষার আগের রাত্রে খুব বেশি রাত্রি জাগরণ উচিত নয়।
কেননা এতে পরীক্ষার হলে তন্দ্রাভাব ও ঘুমের চাপ সৃষ্টির দরু ন মাথাব্যাথা, সঠিকভাবে কাজ না করাসহ অনেক রকম সমস্যা থাকে। উপরন্ত লেখাও ভাল হয় না।
দরস বা ক্লাস চলাকালীন সময়ে মনোযোগসহ লেখাপড়া করার পর একজন পরীক্ষার্থী যদি উপরোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখে তাহলে পরীক্ষায় শতভাগ সাফল্যের আশা করা যায়। আল্লাহ তা’য়ালা সকলের সহায় হোক।
-এটি