আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের আখেরি বয়ান ও মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো ৯৯তম চরমোনাই বার্ষিক ফাল্গুনের মাহফিল।
আজ শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় এই মোনাজাত শুরু হয়। চলে দশ থেকে পনেরো মিনিটব্যাপী।
তিনদিন ব্যাপী এই মাহফিলের আখেরি বয়ানে চরমোনাই পীর বলেন, চরমোনাই মাহফিল দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে নয় বরং পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই এই মাহফিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুতরাং এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আসার প্রয়োজন নেই। যদি এমন কেউ এসে থাকেন তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
এর আগে গত বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জোহরের নামাজের পর চরমোনাই মাদরাসার মূল মাঠসহ মোট ৬টি মাঠ নিয়ে শুরু হয় মাহফিল। উদ্বোধনী অধিবেশনে আলোচনা করেন চরমোনাই পীর। সেখানে তিনি বলেন, যারা চরমোনাইতে নতুন এসেছেন, তারা দুনিয়ার ধ্যান-খেয়াল বিদায় করে দিয়ে আখেরাতের খেয়াল-ধ্যান অন্তরে যায়গা দেন। দিল থেকে বড়ত্ব এবং আমিত্ব ভাব বের করে দিয়ে আল্লাহর কুদরতি পায়ে নিজেকে বিলীন করে দিতে হবে। সদা-সর্বদা আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে দিলকে তরতাজা রেখে আল্লাহর ওলী হয়ে চরমোনাই থেকে বিদায় নেয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
এ বছর মাহফিলে দেশ ও দেশের বাইরের ওলামায়ে কেরাম অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান ও নসিহত করেন। এছাড়া মাহফিলের আগের মধ্যরাতে আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতুল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ও বেফাকের সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান চরমোনাই মাদরাসায় উপস্থিত হয়ে মাহফিলের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং প্রয়োজনের পরামর্শ প্রদান করেন।
মাহফিল সূত্রে জানা যায়, মাহফিলে আগত মুসল্লীদের ৬,০০০ হালকায় বিভক্ত করে হাতে-কলমে সালাত ও ইসলামের বুনিয়াদি বিষয়ে বাস্তব প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। মাহফিলে আগত মুসল্লীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী মাহফিল হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। এতে ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে আরো ৪০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে চিকিৎসা সেবা পরিচালিত হয়। ৬ টি এ্যাম্বুল্যান্স ও ১ টি স্পীড বোর্ড মাহফিল হাসপাতালে কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিল। মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীকে মাহফিল হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য নিযুক্ত ছিল বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। ছয়টি মাঠে মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করা হয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী।
কেএল/