আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মুফতি রেজাউল করীম পীর সাহেব আমীর ও মাওলানা ইউনুছ আহমাদ মহাসচিব পূননির্বাচিত
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরের বাংলাদেশও একাত্তর পূর্বের মতোই গেছে।
২০২৩ এসেও দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যায়। দেশের সম্পদ বানের ঢলের মত বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে। বৈষম্যের বীভৎস দৃশ্যে মানবতা লজ্জা পায়। কেউ কেউ কোটি টাকার গাড়ি কেনে আর কোটি মানুষ একমুঠো ভাতের জন্য টিসিবির ট্রাকের পিছনে দৌড়ায়।
মানুষের ভোটাধিকার শুধু কেড়ে নেয়া হয়েছে তাই নয়, বরং ভোটের অধিকার চাওয়াকেই অপরাধ মনে হচ্ছে। একের পর এক কালাকানুন করে গোটা দেশকেই জেলখানা বানানো হয়েছে। বিরোধী মতকে দমন করা, গুম করা, রাজনৈতিক সমাবেশে গুলি করে মানুষ মারা ক্ষমতাসীনদের নিত্য দিনের কাজে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, সার্বিক বিচারে দেশ যেন সেই ৭১ পূর্ব পরাধীনতার বৃত্তেই আটকে আছে। এতোগুলো বছর পরে এসে এসব দেখে খুব কষ্ট হয়। কোটি মানুষের রক্তকে এভাবে বিফলে যেতে দেখে আফসোস হয়। জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে এভাবে পরাধিনতার বেড়াজালে আবদ্ধ হতে দেখে আর সহ্য করা যায় না।
আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলন ২০২৩ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মোহাম্মদ সৈয়দ ইবরাহীম বীর প্রতীক, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম-শায়খে চরমোনাই, নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আঊয়াল পীর সাহেব খুলনা, আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফুল আলী আকন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহসচিব মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কাদের, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ ও মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, উপদেষ্টা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ, অধ্যাপক ডা. আক্কাস আলী সরকার, সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এএমএম আলম, গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ রাশেদ খান,জাতীয় দীনি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মুফতী মোহাম্মদ আলী, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, এডভোকেট লুৎফুর রহমান সেখ, যুবনেতা ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, কুরআন তিলাওয়াত করেন ক্বারী নাজমুল হাসান।
১৯ দফা সম্মেলন ঘোষণা উপস্থাপন করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। জাতীয় সম্মেলন পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও দাওয়াহ্ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম ও মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন।
সম্মেলনে ১১ সদস্যের প্রেসিডিয়াম, ৭৩ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ, ২২ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণা করা হয়। সম্মেলন থেকে ১৫ দফা দাবী উপস্থাপন করেন দলের আমীর। দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. যেকোন মূল্যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি রোধ করতে হবে। বাজার কারসাজীর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে ২. দেশে মদ ও সকল ধরণের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করতে হবে ৩. শিক্ষার সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। পূর্ণ ও আবশ্যিক বিষয় হিসেবে গণ্য করতে হবে। শিক্ষা সিলেবাস-উপকরণ থেকে ইসলাম অসমর্থিত সকল তত্ত্ব, বক্তব্য, ধারণা (ঈড়হপবঢ়ঃ) ও ছবি বাদ দিতে হবে। ৪. কারান্তরিণ সকল মজলুম আলেম এবং রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে ৫. জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে ৬. সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে ৭. তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পূর্ব পর্যন্ত সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং নির্বাচনের দিন সশস্ত্রবাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে ৮. নির্বাচনে সকল দলের জন্যে সমান সুযোগ তৈরী করতে হবে। রেডিও, টিভিসহ সকল সরকারী বেসরকারী গণমাধ্যমে সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে এবং রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে সকল ধরনের হয়রানী বন্ধ করতে হবে ৯. দুর্নীতিবাজদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে ১০. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে ১১. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় সংহতি ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির (চ.জ) নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে ১২. গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে প্রণীত বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে ১৩. সকল রাজনৈতিক দলের জন্যে সভা-সমাবেশসহ সাংবিধান স্বীকৃত সকল রাজনৈতিক কর্মসূচী ও বাকস্বাধীনতা উন্মুক্ত করতে হবে ১৪. বেকারত্ব দূরিকরণে শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংষ্কার করতে হবে। আশু সমাধান হিসেবে বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করতে হবে ১৫. নাগরিকদের খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।
দেশি-বিদেশি কোন অজুহাতেই মৌলিক অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত্র করা যাবে না। জাতীয় সম্মেলনে ১৯ দফা সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। যথা প্রস্তাব ১ : জনমতের ভিত্তিতে শাসনতন্ত্রের সংস্কার- বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র তথা সংবিধানকে যথেচ্ছা সংশোধন করে জনঅধিকার খর্ব করার ঢাল বানানো হয়েছে। বর্তমান সংবিধান নিয়ে দেশের কোন পক্ষই সন্তুষ্ট নয়। বিরোধীরা এটাকে সংস্কার করতে চাইছে। সরকার পক্ষও বাহাত্তুরের সংবিধানে ফেরত যাওয়ার কথা বলে বর্তমান সংবিধানের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। সবচেয়ে দু:খজনক বাস্তবতা হলো, এই সংবিধান রচনায় জনমতের তোয়াক্কা করা হয় নাই। পাকিস্তান আমলের “পার্লামেন্ট মেম্বার” দের দিয়ে এই সংবিধান পাশ করানো হয়েছে। এই সংবিধান প্রণয়নে গণভোটও হয়নি। এই ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও চলমান গণঅসন্তোষ বিবেচনায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ ভূখণ্ডের মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য বোধ, বিশ্বাস ও মনস্তত্ত্ব আমলে নিয়ে এবং গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে সংবিধানের সামগ্রিক সংশোধনের প্রস্তাব করছে।
প্রস্তাব ২ : জনপ্রশাসনের সংস্কার- বাংলাদেশ স্বাধীন হল ৫২ বছর হতে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হল, আমাদের জনপ্রশাসন আজও উপনিবেশিক কাঠামো, চরিত্র ও কর্মধারার উত্তরাধিকার বহন করে চলছে। প্রশাসনকে দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতে “জনতার সেবক দর্শন” এ খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শে গড়ে তোলা হবে। প্রস্তাব ৩: রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পাওয়াকে ক্ষমতায় যাওয়া বলে জ্ঞান করাটাই একটি
দর্শনগত অন্যায়। ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে দেশ পরিচালনার সুযোগকে আমরা এ ব্যাখ্যা না করে তত্বাবধান ও খেদমত এর ধারণায় ব্যাখ্যা
করি। যেখানে ক্ষমতার চর্চা নয় বরং প্রতিপালনের নীতিতে দেশ পরিচালিত হয়।
সেজন্য বিদ্যমান ক্ষমতার চর্চা ও ধারণাকে ভাঙতে নীতির প্রয়োগ করে শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও
ন্যায়পাল বিভাগকে পরস্পর থেকে স্বাধীন ও স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা হবে।
প্রস্তাব ৪ : অর্থখাত, অর্থনীতি, শিল্পায়ন, কৃষি ও জ্বালানি খাতে বিদ্যমান সকল দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করতে, খাতগুলোকে শক্তিশালী ও
বহুমাত্রিক করতে এবং স্বনির্ভর এনার্জি সেক্টর নির্মাণে জাতীয় কাউন্সিল গঠন করা হবে। প্রস্তাব ৫ : উৎপাদক কৃষক ও ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় বাজার ব্যবস্থাপনা তথা পণ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণসহ পুরো ব্যবস্থাকে একটি সমন্বিত ব্যবস্থার অধীনে এনে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল করা হবে। প্রস্তাব ৬ : আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গড়ে তোলা। বহিঃ বাণিজ্য ও দেশীয় সংস্কৃতির প্রসার ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ রক্ষায় বৈদেশিক মিশনগুলোকে আরো শক্তিশালী করা হবে। দেশের মাটি ব্যবহার করে কারো কোনো ক্ষতি করতে দেওয়া হবে না।
প্রস্তাব ৭: দেশের শিল্পখাত ও মজুরিখাতকে বিশ্লেষণ করে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে সর্বাধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হবে। এবং নৈতিকতা ও সততা নিশ্চিতকরণে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হবে। প্রস্তাব ৮ : দেশের স্বাস্থ্য খাত ভঙ্গুর ও
দুর্নীতিগ্রস্ত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে উন্নত স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা, জেলা স্তরে আধুনিক চিকিৎসা উপকরণসহ উন্নত
হাসপাতাল নির্মাণ, সকলের জন্য সুলভে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা, রোগের উৎস নিয়ন্ত্রণ, রোগ গবেষণাসহ সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে একটি সমন্বিত পরিকল্পনার অধীনে আনা হবে।
প্রস্তাব ৯: নারী নির্যাতন, ধর্ষণ বন্ধ এবং নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারীর স্বাধীনতা রক্ষায় ইসলামের সুমহান আদর্শের আলোকে বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য উদ্ভুত নীতির অধীনে নারীর অবস্থান ও মর্যাদা সুনিশ্চিত করা হবে। প্রস্তাব ১০ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কার্যকর সংসদ, ৭০ অনুচ্ছেদ এর সংশোধন, নির্বাহী ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার সকল পদক্ষেপ গ্রহন করবে এবং এধরণের সকল উদ্যোগে সমর্থন করে। প্রস্তাব ১১: তথা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি রাষ্ট্র পরিচালনায় জনমতের শতভাগ প্রতিফলিত করার একটি চমৎকার পদ্ধতি। বিদ্যমান পদ্ধতিতে কোন কোন ক্ষেত্রে ৬০-৭০% ভোটারের মতামতও উপেক্ষিত হয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রস্তাব করেছে।
যার মাধ্যমে ১ শতাংশ মানুষের মতামতও রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রতিফলিত হবে। প্রস্তাব ১২ : ক্ষমতার পালাবদলের সময় দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়। ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতায় থাকার জন্য আর বিরোধীদল যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য হেন কোন কাজ নাই যা করে না। মানুষ হত্যা, বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দেয়া, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে ভোট ডাকাতির মতো ঘৃণ্য কাজও তারা করে। ফলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে কোন দলীয় সরকারের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব নয়।
সেজন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের প্রস্তাব করছে। প্রস্তাব ১৩ : বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অতিমাত্রায় প্রতিহিংসাপরায়ন ও পরস্পর যুদ্ধাংদেহি। এই অসুস্থ্য সংস্কৃতির কারণে দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্বও হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা সকল দলের সমন্বয়ে একটি জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করছি। প্রস্তাব ১৪ : বেকারত্ব দেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাড়িয়েছে।
শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনাহীনতা ও শিল্পখাতের সাথে সমন্বয়হীনতার কারণে যে যত শিক্ষিত হচ্ছে তার বেকার থাকার সম্ভবনা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থার দীর্ঘ মেয়াদী সমাধানকল্পে শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করা হবে। এবং আশু সমাধানকল্পে বেকারভাতা প্রদান, বিমামূল্যে জব রিলেটেড ট্রেইনিং এর আয়োজন করা হবে।
প্রস্তাব ১৫ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ; বাংলাদেশে সকল নাগরিকের অধিকার সমানভাবে সংরক্ষণ করার অঙ্গিকার পূনর্ব্যক্ত করছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু হোক বা নৃগোষ্ঠিগত সংখ্যালঘু হোক; প্রত্যেকের ধর্মীয়, নাগরিক, ভাষাগত অধিকার রক্ষা করা হবে। বিশেষত নৃগোষ্ঠিগত সংখ্যালঘুরা যাতে তাদের নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ করতে পারে তার নিশ্চয়তা বিধান করা হবে। প্রস্তাব ১৬ : দেশে প্রতি বছর কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে আবার একই সাথে খাবারের জন্য টিসিবির ট্রাকের পেছনে ব্যাকুল হয়ে দৌড়ানো ক্ষুধাতুর মানুষের সংখ্যাও হুহু করে বাড়ছে। বৈষম্য কত প্রকট হচ্ছে তা বুঝতে আর কোন পরিসংখ্যানের প্রয়োজন হয় না। চোখখুলে তাকালেই দেখা যায়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সকল বৈষম্য অবসানের প্রতিজ্ঞা করছে।
জাতীয় আয়ের সুষম বন্টন নিশ্চিত করতে জাকাত আদায় বাধ্যতামূলক করা, কর ব্যবস্থার সংস্কার ও আর্থিকখাতের দুর্নীতি বন্ধ করা হবে। এবং প্রমানিত দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনসহ রাষ্ট্রের যে কোন দায়িত্ব পালনে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। প্রস্তাব ১৭ : মানুষের তীব্র দরিদ্র্যতা নিরসনে ও প্রান্তিক অভাবী জনতার কষ্ট নিবারণে সামজিক নিরাপত্তাবলয়ের পরিধি বৃদ্ধি করা হবে।
এইখাতে বিদ্যমান দুর্নীতি বন্ধ করা হবে। সকল মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে। প্রস্তাব ১৮ :
বিচার বিভাগের সংস্কার অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। দেশের কারাগারগুলোতে হাজারো মানুষ বছরের পর বছর বিনা বিচারে হাজত খাটছে। এটা কোন সভ্যসমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। সেজন্য বিনাবিচারে আটক নাগরিকদের মুক্তির লক্ষে এবং বিচার বিভাগের সামগ্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠন করা হবে। প্রস্তাব ১৯ : বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রবাসীদের আয় গুরুত্বপূর্ণ।
অথচ প্রবাসীদের সন্মান ও স্বার্থ রক্ষায় এক ধরণের উদাসিনতা লক্ষণীয়। প্রবাসীদের মর্যাদা ও স্বার্থ রক্ষায় শক্তিশালী ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্মেলনে ঘোষিত ১১ সদস্যের প্রেসিডিয়াম : হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই অধ্যক্ষ হযরত মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী হযরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম হযরত মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী হযরত মাওলানা আব্দুল আউয়াল হযরত মাওলানা আব্দুল হক আজাদ অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ জনাব আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মাওলা জনাব অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন হযরত মাওলানা হাফেজ নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী জনাব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মহিলাসহ ৭৩ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ : আমীর, মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, পীর সাহেব চরমোনাই নায়েবে আমীর, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম, মাওলানা আব্দুল আউয়াল,মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, মহাসচিব, হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহম্মেদ সেখ, যুগ্ম-মহাসচিব, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক, কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ্ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব হারুন অর রশীদ, প্রশি¶ণ সম্পাদক মুফতী হেমায়েতুল্লাহ, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা নেছার উদ্দিন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ মনির হোসেন, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ এসহাক মুহা: আবুল খায়ের, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম, কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম তালুকদার তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মাও: শেখ ফজলুল করীম মারুফ, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেম, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মকবুল হোসাইন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা: নাছির উদ্দিন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী দেলাওয়ার হোসেন সাকী, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাওলানা শোয়াইব হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম (নাটোর), বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হা: মাও: মাহমুদুল হাসান, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম হাসিবুল ইসলাম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম রুহুল আমীন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নাছির উদ্দিন খাঁন, সহ-প্রচার ও দাওয়াহ্ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ লতিফ, সহ-দফতর সম্পাদক মাওলানা নুরুল করীম আকরাম, সহ-অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা নুরুল ইসলাম আল-আমিন, সহ-প্রশি¶ণ সম্পাদক মাওলানা আরিফুল ইসলাম, সদস্য মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ নুরুল করীম, আলহাজ্ব মুহাম্মদ সেলিম মাহমুদ, ডা: দেলোয়ার হোসেন (ঢাকা), আলহাজ্ব আল মুহাম্মদ ইকবাল (চট্টগ্রাম), আলহাজ্ব আব্দুল আউয়াল মজুমদার।
উপদেষ্টা হযরত মাওলানা মুফতি ওমর ফারুক সন্দ্বপী, শরীয়াহ বিষয়ক উপদেষ্টা হযরত মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, উপদেষ্টা
হযরত মাওলানা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা হযরত মাওলানা ড: মোশতাক আহমাদ, উপদেষ্টা হযরত মাওলানা ওবায়দুর রহমান খাঁন নদভী, তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা হযরত মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ বি: উপদেষ্টা জনাব কমোডর (অব:) অধ্যাপক ড. মুহা: শফিউল্লাহ, নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা হযরত মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ , উপদেষ্টা হযরত মাওলানা মুহাম্মদ শফিউল্লাহ , উপদেষ্টা জনাব অধ্যাপক ডা: মুহাম্মদ জহুরুল হক, উপদেষ্টা হযরত মাওলানা খোবায়েব বিন তৈয়্যব, উপদেষ্টা
হযরত মাওলানা ড. বেলাল নুর আজীজি, দাওয়াহ্ বিষয়ক উপদেষ্টা হযরত মাওলানা সৈয়দ মোমতাজুল করীম মুস্তাক, উপদেষ্টা জনাব এডভোকেট মুহাম্মদ আতিয়ার রহমান, আইন বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব ডা. মুহাম্মদ আক্কাস আলী সরকার (সাবেক সংসদ সদস্য), আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব এডভোকেট আব্দুল মতিন, উপদেষ্টা জনাব আলহাজ্ব সৈয়দ আলী মোস্তফা, উপদেষ্টা জনাব এড. এ কে এম এরফান খান, মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল কাদের (মেহেরপুর), উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: মোয়াজ্জেম হোসেন খান (সিলেট), স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা এডভোকেট লুৎফর রহমান প্রমুখ।
-এটি