মাওলালানা ইবরাহীম আল খলীল।।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। এ কথাটা ভাবতেই মনটা কেমন যেন চমকে উঠে। অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে। আমার মনটাকে কোনো ভাবেই মানাতে পারছি না। মনটা অস্থির হয়ে চলছে। বুকফাটা কান্না আসছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালে লৌহ মানব হযরত ওমর রা. এর যে অবস্থা হয়েছিল আজকে আমাদেরও এই অবস্থা। তিনি নেই! সত্যিই ভাবতে অবাক লাগছে।
মনে হচ্ছে তিনি আছেন, আমার কানে এখনো বাজছে তার কথার পংক্তিমালাগুলো। যদি কেউ বনতে চাও তাহলে সময়ের দাম দাও বেটারা।" মনে হচ্ছে তিনি বসে আছেন দরসে হাদিসে। আমি তার সামনে। হাদীসে নববীর মুক্তামালা ঝরছে তার মুখ থেকে। আমি এবং আমরা তন্ময় হয়ে শুনছি। বিরতিহীন তিনি হাদিসের তাকরীর করে যাচ্ছেন। কোন ক্লান্তি এবং বিরক্তির ভাব দেখা যাচ্ছে না। সাথে সাথে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সাহসিকতার কথামালাও ফেলছেন অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার ঝুড়ি থেকে। "এক আল্লাহ ছাড়া কারো সামনে মাথা নত করবে না বেটারা।"
তার কোমল হাতের ছোঁয়া এখনও অনুভব করছি আমার হাতে। মনে হচ্ছে তিনি গাড়ী থেকে নামছেন, আর আমি তার হাত ধরে নিয়ে আসছি। খুব আস্তে আস্তে। তিনি মাথা উঁচু করে আমার দিকে তাকিয়ে দেখলেন। তারপর সামনের দিকে চললেন।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ.। তিনি আমার সরাসরি উস্তাযে মুহতারাম। দরসে হাদিসের পাঠ আমি তার থেকে গ্রহণ করেছি। আমার সৌভাগ্য যে, তার ছাত্রত্ব আমার নসিব হয়েছে। নমুনায়ে আসলাফ একজন মুশফিক উস্তাযের একজন নগণ্য ছাত্র হতে পেরেছি।
যখন তাইসির পড়ি, তখন থেকেই তাঁকে দেখা। এবং তার সম্পর্কে আমার জানা-শোনা। চৌধুরী পাড়া মাদরাসার সুবাদে তখন থেকেই তাঁর প্রতি একটা ঝোঁক কাজ করছিল। ছোট মনে গেঁথে গিয়েছিল তার নাম। প্রতি বছর মাদরাসার ইফতেতাহি দরস এবং খতমে বুখারীর মজলিস তার মাধ্যমেই হতো।
বিভিন্ন তরবিয়তী বয়ান তিনি সেখানে পেশ করতেন। তিনি ছিলেন মানুষ গড়ার কারিগর। তার গঠনমূলক তরবিয়তে গড়ে উঠেছে হাজার-লাখো ছাত্র তলাবা। ইলমের পিপাসা নিবারণে তার দিক নির্দেশনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তার অবদান শুধু তরবিয়তী লাইনে ছিল এমনটা না; বরং সিয়াসাত, রিয়াযাত এবং তরবিয়তের ময়দানে তার অবদান অসামান্য। তিনি ছিলেন বিপ্লবী এক রাহবার। কুরআন-হাদিস বিশ্লেষণে যুগের বিন হাজার।
প্রত্যেক লাইন এবং সেক্টরে সমানভাবে তার অবদান রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিকে মুহূর্তের মধ্যেই সামাল দেয়ার কারামত তার মাঝে ছিল। তার সুক্ষ জ্ঞান এবং পাণ্ডিত্য ছিল জনশ্রুত। ইখলাস এবং লিল্লাহিয়াতের মূর্ত প্রতীক ছিলেন তিনি।
তিনি কখনো বাতিলের সামনে মাথা নত করেননি। এটা তার একটা অনেক বড় বৈশিষ্ট্য ছিল। এজন্য বিভিন্ন সময় অত্যাচার ও জুলুমের সম্মুখীন তাকে হতে হয়েছে। আমি বার বার আশ্চর্য এবং অবাক হয়েছি তার ইখলাস, দৃঢ় মনোবল এবং ইনাবাত ইলাল্লাহ দেখে। সত্যিই তিনি প্রকৃত অর্থেই একজন মানুষ ছিলেন।
তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এমনটা হয়েছিল তার অত্যুধিক মেহনত এবং হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের কারণে। দ্বীন ও মিল্লাতের জন্য সদাসর্বদাই কঠিন থেকে কঠিনপরিশ্রম করে গিয়েছেন। আমরা যারা বারিধারা মাদ্রাসার ইতিহাস জানি তারা তো অকপটে বুঝতে পারবো। এই অসুস্থতার মধ্যেও তার দরস এর অবস্থা ছিল রীতিমত অবাক হওয়ার মত। বিরামহীন চলতো তার তাকরীর। মুতালাআ ছাড়া তিনি দরসে আসতেন না।
এ ব্যাপারে সারাজীবন আমল করেছেন এবং অন্যদেরকেও সতর্ক করেছেন মুতালাআ করে দরসে আসার জন্য। দরসে বিভিন্ন সময় হাদিসের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে উৎসাহ এবং উদ্দীপনামূলক আলোচনা করতেন। পরবর্তী জীবনে চলার পাথেয় যোগাতেন অভিজ্ঞতার ঝুড়ি থেকে। বড় এবং যোগ্য হওয়ার মানদন্ড দেখিয়ে দিতেন। সতর্ক করতেন পরিনাম ফলের, শাসন ও আদর মিশানো পরামর্শ দিয়ে। আশাব্যঞ্জক বাক্য শুনিয়ে সাহস যোগাতেন অন্তরে। দরদী মালি হয়ে পানি ছিটিয়েছেন ইলমের বাগানে। তাইতো আজ তাকে হারানোর ব্যাথা হৃদয়ে হৃদয়ে।
ছাত্র গড়ার কারিগর হিসেবে সবাই জানতো তাকে। ছাত্রদের পড়াশোনার দেখভাল করতেন তিনি নিখুঁত ভাবে। শুধু শিক্ষা জীবনেই নয়; বরং কর্মজীবনে কে কোথায় যাবে, কোন পর্যায়ের খেদমত করবে, তাও তিনি দেখিয়ে দিতেন। পরম মমতার সাথে তাদেরকে কাছে টানতেন। বারিধারা মাদরাসায় প্রায় সময় আমার যাওয়া হতো। বিশেষ করে মাদ্রাসার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। সেখানে গেলে তাকে দেখতে পেতাম, দক্ষিণ পাশের রুমটায় তিনি বসে আছেন। সাদা শুভ্র কাপড় পরিহিত অবস্থায় উজ্জ্বল চেহারায় চমকে উঠতো তার চারপাশ।
আকাবির এবং আসসালাফদের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভক্তি ছিল অবাক করার মত। কারো নাম আলোচনায় আসলে তিনি শ্রদ্ধায় নুয়ে পড়তেন। বড়দেরকে সম্মান করতেন। গীবত ও শেকায়েতের ধারে কাছেও যেতেন না। একবার হুজুরকে আমাদের দরসে কওমী মাদরাসার সরকারি স্বীকৃতি এবং শোকরানা মাহফিল সম্পর্কে এক তালিবুল ইলম ভাই প্রশ্ন করেছিল। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, "এটা ঠিক হয়নি। আসলে এটা কয়েকজন ধোকাবাজের কাজ।
যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য করেছে। সাবধান! হাটহাজারীর হযরত (আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ.) সম্পর্কে কোন খারাপ ধারণা রাখবে না। তিনি নিঃসন্দেহে আল্লাহর ওলী। উনাকে ভুল কথা বুঝিয়ে এখানে আনা হয়েছে। কতক لسان (চাপাবাজ) হুজুরকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়েছে নিজেদের স্বার্থের জন্য। তোমরা হুজুর সম্পর্কে কোন বদগুমানী করবে না। আসলে দুনিয়াটা হল عالم تلبيس (ধোকার জায়গা) মানুষ ধোকাবাজি করে স্বার্থের জন্য। আমাকে সেখানে যেতে দেখেছো? শুরু থেকে কোনো মিটিংয়ে যাই নাই।" শোকরানা মাহফিলে হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে মিথ্যাচারের কথা বললে, তিনি বলেছিলেন, "প্রতিবাদ হয়েছে। প্রতিবাদ করেছি। সব জায়গায় সাথে সাথে প্রতিবাদ করা যায় না।"
মনের ভিতর খুব অস্থিরতা কাজ করছে। নিজেকে বড্ড একা একা লাগছে। বার বার মনে পড়ছে কাসেমী সাহেব হুজুরের কথা। তিনি চলে গেলেন আমাদেরকে ছেড়ে। নিজের সমূহ শক্তি দিয়েও মনটাকে বুঝাতে পারছি না। তিনি নেই! সত্যিই কি নেই? আমার কানে এখনো বাজছে তার কথামালা গুলো। চোখের সামনে ভাসছে তার ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠ মাখা শুভ্রতা জড়ানো কন্ঠ।
সত্যিই আমি এবং আমরা ভাবতেই পারিনি তিনি চলে যাবেন না ফেরার দেশে। তার বুখারীর দরসে বসে তার মুখ নিঃসৃত তাকরীর গুলো সযত্নে নোট করেছিলাম। সেগুলো আজও আমার সংরক্ষণে আছে। আছে আমার প্রিয় পাঠ্য হিসাবে। আমার মনে অনেক আগ্রহ এবং বড় আশা ছিল এগুলো আরও সুবিন্যস্ত আকারে লিখে তাকে দেখাবো।
কিন্তু তা আর হয়ে উঠলো না। আমার ভাগ্যে তা নসিব হয়নি। পড়াশোনার ব্যস্ততার ফাঁকে সেগুলো নিয়ে তাকে আর দেখাতে পারেনি।
আহ! আজ আমরা হারালাম একজন মুশফিক উস্তায এবং মুরুব্বীকে। জাতি হারাল তার একজন মুখলিস রাহবারকে। যেন মাঝ রাতে ঝড় বয়ে গেলো আমাদের উপর দিয়ে। প্রচন্ড ঝড়ের রাতে নাবিক হারা হয়ে গেলাম আমরা। হে আল্লাহ তুমি তাকে তোমার রহমতের বারিধারায় সিক্ত করো। এবং আমাদেরকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করো। আমিন।
তার মৃত্যুর পর অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছিলাম। আমি এতটাই কাতর এবং শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম যে, কোন ভাবেই মনকে মানিয়ে উঠতে পারছিলাম না। তখনকার সময়ে তাকে নিয়ে কিছু কথামালা। যা ডাইরিতে লিখে ছিলাম।
এখন রাত গভীর রাত। রাত ১২ টার কাটা ছুঁই ছুঁই করছে। দুচোখে কিছুতেই ঘুম আসছে না। সারা দেহে একটা অস্থিরতা কাজ করছে। চারি দিকটা যেন নিথর। নিস্তব্ধ। নিঃসঙ্গতা কাজ করছে সবখানে। কোথাও যেন আবেগ আর উচ্ছ্বাস নেই।
হই হুল্লোড় আর আমোদের ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সবাই যেন কাঁদছে অজর ধারায়। গাছপালা পত্র-পল্লব সবই যেন অশ্রুসিক্ত। কী হারানোর ব্যাথায় নিথর যেন সব। অভিভাবক হারানোর ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে সবখানে। হ্যাঁ, সত্যিই আমরা আজ আমাদের প্রাণ প্রিয় উস্তায ও অভিভাবক আল্লামা কাসেমী সাহেবকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে গেছি। কোন কিছুই ঠাউর করতে পারছিনা। বসছে না মন কোন কিছুতেই।
সোমবার দুপুর। প্রতিদিনকার মতই জোহরের নামাজ আদায় করে মাদরাসার সম্মিলিত দুআয় বসলাম। দুই হাত তুলতেই কাসেমী সাহেবের কথা মনে পড়ে গেল। তিনি গুরুতর অসুস্থ। কয়েকদিন থেকে খবর পাচ্ছি। জানিনা এখন কেমন আছেন। হয়তো ভালো না। তার সুস্থতা কামনা করে খুব কান্নাকাটি করে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করলাম। দুআ শেষে রুমে যাওয়া মাত্রই একটি সংবাদ কানে আসলো, যা সহ্য করার মত শক্তি আমার ভিতর ছিল না।
আল্লামা কাসেমী সাহেব হুজুর ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তবে আল্লাহ তাআলার আমোঘ বিধান মানতেই হবে। তা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সংবাদটা শোনার সাথে সাথে আমার সারা ভিতরটা যেন অবশ হয়ে গেল। আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না। হাউমাউ করে যেন আমার সারা শরীর কাঁদছিল এবং কাঁপছিল। কি করবো কোন ঠাউর করতে পারছিলাম না। সময় যত বাড়ছিল ততোই আমি ভেঙ্গে পড়ছিলাম।
তার বিরোগ ব্যাথা ব্যাথাতুর হৃদয়কে আচ্ছন্ন করে নিচ্ছিল। শোকের কুয়াশা যেন মুহূর্তের মধ্যেই সব জায়গাকে আচ্ছন্ন করে নিলো। চারপাশে সবকিছু অন্ধকার। আবছা আবছা দেখাচ্ছিলো সবকিছু। এভাবে চলতে থাকে অনেকক্ষণ।
আমি দেরি না করে বারিধারা মাদরাসায় যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয়ে গেলাম। মাগরিবের আগে আগেই পৌঁছে গেলাম সেখানে। ততক্ষণে হুজুরের লাশ মাদরাসার মাঠে আনা হয়েছে। মানুষের বিশাল লাইন, তাকে শেষবারের মতো একবার দেখার জন্য।
আলেম-ওলামাদের ভীড় উপচে পড়ছে। ভিড়ের মধ্যে আর ঠেলাঠেলি করলাম না। ভাবলাম পরেই দেখি। মন ভরে শেষবারের মতো দেখব আমার প্রিয় হযরতকে। তার আগে একবার দূর থেকে এক নজর দেখে নিলাম। কারণ মন কিছুতেই মানছিলো না।
মাগরিবের নামাজ দাঁড়িয়ে গেল। কান্না ভেজা কেরাত ও দুআয় সবাই কাঁদলো। পুরা নামাজই ছিল কান্না জড়ানো। ইমাম সাহেব যেন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। কান্নার কারণে কেরাত পড়তে পারছে না। সাথে কাঁদছে সবাই। যেন পুরো মসজিদ-মাদরাসাটাই কাঁদছে। অঝোর ধারায় কাঁদলাম মোনাজাতে। তার মাগফিরাত কামনায়। নামাজের পর মনটা আরো অস্থির হয়ে গেল, তাকে একটু কাছ থেকে দেখার জন্য।
ভিতরটা শুধু হাউমাউ করে কাঁদছিলো। কিছুতেই সামলাতে পারছিলাম না। লাইনে দাঁড়ালাম। এক সময় পৌছে গেলাম তার কাছে। দেখলাম দুচোখ ভরে। আহ! তার শুভ্র মুখে শুব্রতা মিশানো মুচকি হাসিটা এখনো লেগে আছে। সত্যিই তা জান্নাতী মানুষের হাসি। কিছু সময়ের জন্য যেন আমি নিস্তব্ধ হয়ে তন্ময় চোখে তাকিয়ে রইলাম। চলতে পারছিলাম না। মন চাইছিল আরো দেখি। কিন্তু নাহ! পিছন থেকে সামনে আগানোর তাড়া আসলো। অন্যদেরকেও সুযোগ করে দিতে হবে দেখার জন্য।
সেখান থেকে সরে এক পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। বার বার মনের কোণে ভেসে উঠছিল তাকে নিয়ে স্মৃতিমাখা দিনগুলো। আহ! কি অসময়ে আমাদেরকে ছেড়ে তিনি চলে গেলেন! সত্যিই আমরা অভিভাবকহারা হয়ে গেলাম।
এশার নামাজের পর আল্লামা মাহমুদুল হাসান সাহেবের নেতৃত্বে সম্মিলিত দুআর আয়োজন করা হলো। মজলিসের শুরুতে মাওলানা নাজমুল হাসান সাহেব হুজুর কিছু কথা বললেন। কিন্তু কান্নার কারণে বেশিক্ষণ বলতে পারলেন না। শুরু হলো দুআ। তখন এক অন্যরকম বিয়োগাতুযর দৃশ্যের অবতারণা হলো। তার ছাত্র-ভক্ত সহ সারা মসজিদ-মাদরাসাই যেন কাঁদছে।"হে আল্লাহ তুমি তাঁর কবরকে তোমার রহমতের বারিধারায় সিক্ত করো। আমিন।
শিক্ষক: মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস,তেজকুনিপাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা