মুফতি জিয়াউর রহমান।।
ফতোয়ার ভাষা আর দাওয়াতের ভাষা পৃথক দুটি বিষয়৷ ফতোয়ার ভাষা একটু কঠিন এবং আবেগ-অনুরাগহীন হয়ে থাকে৷ এখানে আবেগ-অনুরাগের কোনোই স্থান নেই৷ যেসব মুফতি সাহেবের মধ্যে বিবেক ও শরীয়তের উপর আবেগ ভর করে নেয়, তারা ফতোয়া প্রদানের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন৷
দুনিয়াতে নিজের স্ত্রী-সন্তান হচ্ছে আবেগের সবচাইতে স্পর্শকাতর জায়গা৷ যখন কয়েকটি সন্তান রেখে স্বামী অপরিণামদর্শী হয়ে স্ত্রীকে চূড়ান্তভাবে তালাক দিয়ে দেয়, মুফতি সাহেবের কাছে এসে কান্নাকাটি করে৷ বাচ্চাদের অসহায়ত্বের বিবরণ দেয়৷ তখন একজন মুফতি সাহেবের ভেতরে যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়, তা উত্তাল সাগরে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের চাইতেও তীব্রতর ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী হয়৷
তখনও একজন মুফতি সাহেবকে থাকতে হয় আবেগ-অনুরাগের সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বে৷ চোখ বুঝে সঠিক মাসআলাটা বলে দিতে হয় অকপটে৷ এটাই ফতোয়া প্রদানের নীতি-উসূল৷ ফিকহ-ফতোয়া শেখার পাশাপাশি ফতোয়া প্রদানের এই প্র্যাক্টিসটাও শেখানো হয় দারুল-ইফতাসমূহে৷
একজন মুফতি সাহেব যখন দলিল ও উসূলের ভিত্তিতে কোনো হারাম কাজকে 'হারাম' বলেন৷ নাজায়েয কাজকে 'নাজায়েয' বলেন, তখন আমরা মনক্ষুন্ন না হয়ে খুশি হওয়ার কথা যে, আলহামদুলিল্লাহ এখনো সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার লোক আছেন আমাদের মাঝে৷
কেউ একজন যখন শুধুই দাঈ হন, ফিকহ-ফতোয়ার সাথে সম্পর্কিত না হন, তিনি আবেগ দ্বারা খুব বেশি নিয়ন্ত্রিত থাকেন৷ যার কারণে মাঝেমধ্যেই তাঁর থেকে শরীয়ত লঙ্ঘনের মতো কাজ সংঘটিত হয়ে যায়৷ সেখানেও তাঁর নিয়ত ভালো থাকে, কিন্তু আবেগ গালিব হওয়ার কারণে মনের অজান্তেই শরীয়তের গণ্ডি ছাড়িয়ে যান৷
-এটি