আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকে প্রথম ধাপে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ২৪ জন রোহিঙ্গা। আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছেন তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রথম ধাপে ২৪ জন রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে বছরে ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গা নেবে যুক্তরাষ্ট্র এ তথ্য জানিয়েছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
এর আগে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দেশটির দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রিডেইনর বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছেন। তিনি দেশটিতে ১ লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যার মধ্যে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে ১৫ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গত ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভেলস নয়েস। এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি।
দেশে ফেরার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান নয়েস। এ সময় তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের কথা জানান। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরিতে মার্কিন সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
সাক্ষাৎ শেষে জুলিয়েটা ভেলস নয়েস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের সমর্থন এবং পুনর্বাসন করতে পারায় যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। রোহিঙ্গাসহ বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা বাইডেন সরকারের অগ্রাধিকার।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে মার্কিন সরকার। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদিকদের জানান, ৮ ডিসেম্বর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রথম ব্যাচ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ছাড়াও শক্তিশালী কয়েকটি দেশের কাছে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আবেদন জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিয়ানমারে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে গত ৫ বছর ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের অস্বীকৃতিতে নিজ দেশে ফিরতে পারেনি একজন রোহিঙ্গাও। সময়ের বিবর্তনে বাংলাদেশে এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এখন ১২ লাখ।
-এসআর