মুফতি ওমর ফারুক ইব্রাহিমী।।। উস্তাযজি শাইখুল ইসলাম মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানি হাফি. সেদিন মুফতি রফি উসমানি রহ. এর জানাযার নামাযে সূরা ফাতিহা পড়েছেন। এই নিয়ে তুমুল বিতর্ক আরও আগেই চোখে পড়েছে। কেউ কেউ তো এও বলেছেন, আল্লামা তাকি উসমানি ভুল করেছেন!
আমি দারুল উলুম থাকাকালীন হযরতের পেছনে অসংখ্য জানাযার নামায পড়েছি। সবসময়ই দেখেছি, তিনি জানাযার প্রথম তাকবীরের পর সূরা ফাতিহা পড়েন। সুতরাং আমি তাঁর এই আমলের ব্যাপারে খুব ভালো করেই ওয়াকিবহাল। এই ব্যাপারে ফিকহে হানাফির কিতাবাদি আরো আগেই আমার দেখা হয়ে গেছে। তাই এই বিতর্কে কর্নপাত করা বিলকুল প্রয়োজন মনে করিনি।
তাছাড়া হযরত যেটার উপর দৃঢ়ভাবে আমল করবেন সেখানে আমাদের চুনোপুঁটিদের এতো বিতর্ক সৃষ্টি করার কিছু আছে বলেও আমি মনে করিনা। তবুও যারা আমাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছেন তাদের জ্ঞাতার্থে শুধু কয়েকটি কিতাবের হাওয়ালা ও রেফারেন্স উল্লেখ করছি। এগুলো ফিকহে হানাফির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কিতাব।
এসব কিতাবে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, হানাফি মাযহাবে দোয়া হিসেবে সূরা ফাতিহা পাঠ করা জায়েয আছে। কোন সমস্যা নেই। বরং কেউ কেউ এটাকে সুন্নত বলেছেন। সুতরাং এই নিয়ে এতো বিতর্কের কিছু নেই।
রেফারেন্স সমূহ- আদ্দুররুল মুখতার (ফতওয়া শামী) বাবু সালাতিল জানাইয, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮১৭। ফাতওয়া আলমগীরী, ১ম খণ্ড, ১৪৭ পৃষ্ঠা। মুহীত্ব আস-সারাখসী, ১ম খণ্ড, ১৬৪ পৃষ্ঠা। *বাদাইয়ূস--সানায়ে', খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৫২। ফাতওয়া দারুলউলুম দেওবন্দ, কিতাবুল জানাইয, ৫ম খণ্ড, ২১০ পৃষ্ঠা।
এছাড়াও- কিফায়াতুল মুফতী, ফাতাওয়া রহীমিয়াহ, আহসানুল ফাতাওয়া, ফাতাওয়া মাহমূদিয়াহ এবং ফাতাওয়া হাক্কানিয়াহ সহ সলফ ও খলফের সব কিতাবে এর সুস্পষ্ট বিবরণ এসেছে।
তাছাড়া হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকেও জানাযার নামাযে সূরা ফাতিহা পড়ার কথা বর্ণিত আছে।
হাসান রহ. বলেছেন, শিশুর জানাযার সালাতে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করবে এবং দু‘আ পড়বে। হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের জন্য অগ্রে প্রেরিত, অগ্রগামী এবং আমাদের পুরস্কার স্বরূপ গ্রহণ কর।
বুখারি-১৩৩৫. ত্বলহাহ্ ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর পিছনে জানাযার সালাত আদায় করলাম। তাতে তিনি সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন এবং (সালাত শেষে) বললেন, (আমি সূরা ফাতিহা পাঠ করলাম) যাতে লোকেরা জানতে পারে যে, এটা সুন্নাত। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১২৫৪)
-এটি