ওমরফারুক ফেরদৌস।।
এক বেদুইন রসূল সা.-এর দরবারে গিয়ে বললো, আমাকে এমন আমলের কথা বলে দিন যে আমল করলে আমি জান্নাতে যেতে পারবো। রসূল সা. বললেন, আল্লাহর ইবাদত করো, তার সাথে কাউকে শরিক কোরো না, নামায পড়ো, নির্ধারিত যাকাত আদায় করো, রমজানের রোযা রাখো। বেদুইন বললো, আল্লাহর শপথ আমি এই আমল করবো, এর চেয়ে বেশি বা কম করবো না। সে চলে গেলে রসূল সা. বললেন, কেউ যদি জান্নাতী মানুষ দেখতে চাও, তাহলে এই ব্যক্তিকে দেখো। -বুখারী, মুসলিম
ইসলাম সরল বেদুইন আরবদের সরল দীন। আকিদার যেইসব জটিল দার্শনিক পরিভাষা, জটিল সব আলোচনা আমরা করি বা পড়ি, আমাদের নবী এইসব পরিভাষা জানতেন না, তার সাহাবীরাও জানতেন না।
কালামশাস্ত্র হলো প্রতিক্রিয়া বা ঔষধ। দার্শনিক যুক্তির মারপ্যাঁচ দিয়ে যখন ইসলামকে ভ্রান্ত প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েছে, তখন এর প্রতিক্রিয়ার কালামশাস্ত্র জন্ম নিয়েছে।
যার মাথায় দর্শনের বিভ্রান্তি নাই, তার মাথায় কালামশাস্ত্রের জটিলতা ঢোকানোর দরকার নাই। সালাফের নীতি ছিলো জনসাধারণের সামনে আকায়েদের এইসব জটিল আলোচনা না করা, মানুষকে এই বেহুদা সময় নষ্ট করার মধ্যে না ঢোকানো। আলেমদের এগুলো পড়ে রাখা দরকার, যারা দর্শন পড়েন বা চর্চা করেন, তাদের পড়া দরকার। কিন্তু সাধারণ মুসলমানদের জন্য এগুলো ক্ষতিকর এবং বেহুদা সময়ের অপচয় ছাড়া কিছু না।
বিশেষত এই যুগে দর্শনের চর্চা ও গুরুত্ব কমে যাওয়ার কারণে কালাম শাস্ত্রের গুরুত্ব আরও কমে গেছে। মানুষ এখন বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও তথ্য নিয়ে বেশি উৎসাহী। নানা বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব দিয়ে ইসলামকে ভুল প্রমাণ করার যে চেষ্টা এখন চলে, এর বিরুদ্ধে কাজ করা প্রয়োজনীয়তা এখন বেশি।
ইদানীং দেখছি এক শ্রেণীর আলেম জনসাধারণকে আকায়েদের জটিল আলাপে টানার চেষ্টা করছেন। তাদের মাথায় নানান জটিলতা ঢোকাচ্ছেন। এটা বিপদজনক এবং সালাফের নীতি পরিপন্থী।
মানুষকে আমলের কথা বলেন, ফাযায়েলের কথা বলেন, আল্লাহর কথা বলেন, রসূলের কথা বলেন, সাহাবীদের ঘটনা শোনান। দীনকে সহজ করেন, অপ্রয়োজনীয় জটিলতা সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকেন।
-এটি