আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রাহবরে মিল্লাত আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.)এর জীবনে ঘটে যাওয়া অজানা সব তথ্য সম্বলিত জীবনীগ্রন্থ 'অজানা কহিনী' এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাভার দারুল আমানের মুহাদ্দিস মুফতি আমিনুল হক আমিনী সংকলিত ও মারজানুল বারী সিরাজী সম্পাদিত বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহাদ্দিস আল্লামা কাসেমী (রহ.) এর সাহেবজাদা মুফতি জাবের কাসেমী। যৌথ সঞ্চালনা করেছেন বইটির সম্পাদক মাওলানা মারজানুল বারী সিরাজী ও তরুণ লেখক মাওলানা নূর হোসাইন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কালামে পাকের তেলাওয়াত করেন হাফেজ নূরুল আমিন। এরপর মনোমুগ্ধকর নাশিদ পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শকদের হৃদয় আকর্ষণ করেন সাড়াজাগানো সংগীত শিল্পী মাহমুদ হুযাইফা ও মাজহারুল ইসলাম।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বাদ আসর রাজধানীর ইসলামী বইমেলা প্রাঙ্গণ বায়তুল মুকাররম দক্ষিণ চত্বরে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা কাসেমী (রহ.)এর সহোদর আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহাদ্দিস মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, কওমি টুপি ঘরের স্বাধিকারী মুফতি গোলাম মাওলা, মাওলানা শামসুর রহমান, উত্তরা বায়তুস সালামের মুহাদ্দিস মুফতি আল আমিন কাসেমী, ছাত্র জমিয়ত ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা বোরহান উদ্দিন, সালামবাগ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা মামুনুর রশীদ, মাওলানা সুলাইমান মাদানী, মাওলানা ইমামুদ্দীন হামদুল্লাহ, মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী,মুফতি রহমতুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা নাসিম আরাফাত, মাওলানা মুহাইমিনুল ইসলাম ফাহাদ, মুহাম্মাদ রনি, মুফতি শাহাদাত কাসেমী, মুফতি মাহমুদুল হাসান, মুফতি জুবাইদুল ইসলাম, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী বলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের বহু সাইট ছিলো। এক মজলিসে সবগুলো সাইট নিয়ে আলোচনা করা অসম্ভব। তিনি বলেন, মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ আমাকে বলেছেন, মাওলানা! কিতাবের মধ্যে মুজাহাদার একটা অধ্যায় আমরা ছাত্রদের পড়াই এবং নিজেরাও পড়ি কিন্তু আমার কাছে মুজাহাদার বাস্তব নমুনা হচ্ছে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
শায়খ জাকারিয়া (রহ.)এর একটি উক্তি নকল করে তিনি বলেন, আমাদের আকাবিরদের যারা শুরু যামানায় পেয়েছে তারা অনেক কিছু পেয়েছে আর যারা শেষ যামানায় পেয়েছে তারা বঞ্চিত হয়েছে। শুরু যামানায় একেকজনের মুজাহাদা যদি দেখা হয়, তাহলে কল্পনাও করা যায় না যে মানুষের দ্বারা এত মুজাহাদা করা কিভাবে সম্ভব। এজন্য আমাদের উচিত আল্লামা কাসেমীর মতো মুজাহাদা জিন্দেগী বেঁচে নেয়া। আর যদি হীনমন্যতায় ভুগি তাহলে আমাদের দ্বারা কোন কিছু সম্ভব নয়!
তিনি আরো বলেন, দুনিয়ার কোন লোভ-লালসা আল্লামা কাসেমীর মাঝে ছিলো না। জীবনে বহু সুযোগসুবিধা পেয়েছেন। চাইলেই অনেক কিছু করা সম্ভব ছিলো কিন্তু যা করে গেছেন তা আপনাদের সামনে স্পষ্ট। সবসময় আখেরাতের চিন্তায় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকেও আল্লামা কাসেমীর মতো নির্লোভ, নিরহংকার এবং যোগ্য হয়ে গড়ে উঠার তাওফিক দান করুন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী বলেন, আল্লামা কাসেমী (রহ.) এর বহুমুখী দ্বীনি খিদমত সম্পর্কে বলতে গেলে ঘন্টার পর ঘণ্টায়ও শেষ করা যাবে না। তিনি ছিলেন সব অঙ্গনের উলামায়ে কিরামের পৃষ্ঠপোষক। তালিবুল ইলমদের একজন দরদী অভিভাবক। সর্ব স্তরের আলেমদের অন্যতম মুরুববী । ইসলামী রাজনীতির মাঠে ছিলেন বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অধিকারী। ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ'র যে কোন প্রয়োজনে ছিলেন সব সময় সোচ্চার।
তিনি বলেন, সহজভাবে হযরতের পরিচয় বলতে গেলে আমি বলবো, আজ জুম্মার পর আমার মসজিদে অপরিচিত এক মুসুল্লি এসে পাশের জনকে জিঙ্গাসা করছেন এই হুজুর কে? উত্তরে তিনি বললেন, এই হুজুর বারিধারা কাসেমী সাহেবের মাদরাসার। অর্থাৎ হুজুর এমন ব্যক্তিত্ব ছিলেন যে আজো হুজুরের পরিচয়ে আমরা পরিচিত। আল্লাহ তায়ালা হযরতকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উঁচু মাকাম দান করুন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রেখেছেন বইটির সংকলক তরুণ লেখক মুফতি আমিনুল হক আমিনী।
-এটি