আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: একটি সরকারি হাই স্কুলের অভ্যন্তরে নাচ, গান, মদ, গাজা, সেবনসহ নানা আয়োজনে যুবলীগ নেতার জন্মদিন উদযাপন করলেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গভীর রাতে উচ্চ শব্দে গান-বাজনা, মাতাল নারী-পুরুষদের উম্মাদনায় অতিষ্ট হয়ে গ্রামবাসী আজমিরিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শরনাপন্ন হন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের নিবৃত্ত করে।
জানা গেছে, বুধবার ছিল আজমিরিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মমিনুর রহমান সজিবের ৪১তম জন্মদিন। ওইদিন রাতে সজিব তার জন্মদিন পালন করতে উপজেলার এবিসি সরকারি পাইলট মডেল স্কুলকে বেছে নেন। স্কুলের হল রুমে সন্ধ্যার পর থেকেই দলীয় নেতকর্মী ও স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা উপস্থিত হন।
স্থানীয়রা জানান, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গানের শব্দও মাত্রা ছাড়াতে থাকে।
জীবন ও সজিব নামে দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শুধু কেক কাটা আর গানেই সীমাবদ্ধ ছিল না, অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া কয়েকজন পুরুষ ও নারী কর্মী মদ-গাঁজা সেবন করে অশ্লীল নাচের সঙ্গে চিৎকার করতে থাকেন। তাদের উম্মাদনায় গ্রামের নীরবতায় বিঘ্ন ঘটে। সাউন্ড বক্সের আওয়াজে প্রকম্পিত হতে থাকে আশপাশের এলাকা। বিশেষ করে রোগী, শিশু, বৃদ্ধরা অস্বস্তি বোধ করতে থাকেন। শেষরাতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশ সেখানে গিয়ে আয়োজকদের অনুষ্ঠান বন্ধে বাধ্য করে।
যোগাযোগ করা হলে ভাইস চেয়ারম্যান সজিব বলেন, স্কুলটি আমার বাড়ির পাশে। তাই কর্মীদের নিয়ে জন্মদিন পালন করেছি। এতে দোষের কী হলো?
একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের আয়োজন করা ঠিক কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘যা পারেন লিখেন। এখন একটি মিটিংয়ে আছি। আর কথা বলতে পারব না।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা সালেহা সুমি বলেন, আমি এ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। আমাকে কোন কিছু জানানো হয়নি। অনুমতিও নেয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে তা বন্ধ করা হয়। দুর্গাপূজায় যেখানে সাউন্ড বক্স বাজানো সীমিত করা হয়েছে, সেখানে জন্মদিনের নামে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে জনগণের বিরক্তি উদ্রেককারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আহসান মোস্তাফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনুষ্ঠানের কথা স্বীকার করে বলেন, অনুমতি দিয়ে ভুল করে ফেলেছি। আমি নিজেই লজ্জিত ও দুঃখিত।
উল্লেখ্য, সজিবের বিরুদ্ধে সরকারি ভূমি দখলসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
-এটি