মুফতি এহসানুল হক
নামাযে ইমামের কোনো ভুল হলে "সুবহানাল্লাহ" বলে লোকমা দেওয়াই সুন্নাহ । কেননা একাধিক হাদীসে ও ফিকহ গ্রন্থাবলীতে "সুবহানাল্লাহ" বলে লোকমা দেওয়ার কথা উল্লেখ হয়েছে। তথাপি কেউ যদি "আল্লাহু আকবার "বলে লোকমা দেয়, তাহলে তার নামাযে কোনো সমস্যা হবে না। তবে সুন্নাহ হচ্ছে "সুবহানাল্লাহ" বলেই লোকমা দেয়া। আর সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করাই আমাদের কর্তব্য।
* হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছে- সাহল ইবনু সা‘দ রা. থেকে বর্ণিত যে, আমর ইবনু আওফ গোত্রের কিছু লোকের মধ্যে সামান্য বিবাদ ছিল। তাই নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিদের একটি জামাত নিয়ে তাদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য সেখানে গেলেন। এদিকে সালাতের সময় হয়ে গেল। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীতে এসে পৌঁছেননি। বিলাল রা. সালাতের আজান দিলেন, কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখনও এসে পৌঁছেননি।
বিলাল রা. আবু বকর রা. -এর কাছে এসে বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এদিকে সালাতেরও সময় হয়ে গেছে। আপনি সালাতে লোকদের ইমামতি করবেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি ইচ্ছা কর'।
তখন বিলাল রা. সালাতের ইক্বামাত বললেন এবং আবূ বাকর রা. এগিয়ে গেলেন এবং তাকবীর বললেন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন এবং কাতার ফাঁক করে সামনে এগিয়ে গিয়ে কাতারে দাঁড়ালেন। মুসল্লীগণ তখন তাস্ফীহ্ করতে লাগলেন। সাহল রা. বলেন, তাসফীহ্ মানে তাস্ফীক (হাতে তালি দেয়া)
আবু বকর রা. সালাত অবস্থায় কোনো দিকে তাকাতেন না, কিন্তু (হাততালির কারণে) তিনি তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পেছনে দাঁড়িয়েছেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে হাতের ইশারায় আগের মতো সালাত আদায় করতে নির্দেশ দিলেন। আবু বকর রা. তাঁর দু’হাত উপরে তুলে আল্লাহর হামদ বর্ণনা করলেন। তারপর কিবলার দিকে মুখ রেখে পেছনে ফিরে এসে কাতারে শামিল হলেন।
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগে বেড়ে লোকদের ইমামত করলেন এবং সালাত সমাপ্ত করে লোকদের দিকে ফিরে বললেন,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ، مَا لَكُمْ حِينَ نَابَكُمْ شَيْءٌ فِي الصَّلَاةِ أَخَذْتُمْ بِالتَّصْفِيحِ؟ إِنَّمَا التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ، مَنْ نَابَهُ شَيْءٌ فِي صَلَاتِهِ فَلْيَقُلْ: سُبْحَانَ اللَّهِ.
‘হে লোক সকল! কী হলো তোমাদের? সালাত অবস্থায় তোমাদের কোনো সমস্যা হলে তোমরা হাততালি দিচ্ছ। অথচ হাততালি দেওয়ার বিষয় নারীদের জন্য। সালাত অবস্থায় তোমাদের কারো কোনো সমস্যা ঘটলে সে যেন “সুবহানাল্লাহ” বলে (লোকমা দেয়)।
অতঃপর বললেন, হে আবু বকর! তোমাকে যখন ইশারা করলাম, তখন সালাত আদায় করাতে তোমার কিসের বাধা ছিল?’ তিনি বললেন, ‘আবু কুহাফার পুত্রের জন্য শোভা পায় না নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে ইমামতি করা। (সহীহুল বুখারী: হাদীস নং-১২১৮, ৬৮৪, সহীহ মুসলিম: হাদীস নং- ৪২১)
এই দীর্ঘ হাদিসে সালাত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে সে যেন “সুবহানাল্লাহ” বলে অংশটি প্রমাণ বহন করে যে, লোকমা দেয়ার সুন্নাহ পদ্ধতি হলো সুবহানাল্লাহ বলা।
* অন্য এক বর্ণনায় এসেছে- عَنْ ابْنِ بُحَيْنَةَ أَنَّ النَّبِيَّ اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى فَقَامَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ فَسَبَّحُوا فَمَضَى فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ.
ইবন বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতে দু’রাকআতের পরে না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন সাহাবায়ে কিরাম "সুবহানাল্লাহ" বলে উঠলেন। কিন্তু তিনি সালাত চালিয়ে গেলেন। তারপর যখন তিনি সালাতের শেষ অবস্থায় পৌছলেন, তখন দু’টি সিজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। (সুনানে নাসায়ী, হাদিস নং- ১১৭৮, হাদিসের মান: সহিহ )
* সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনদের আমলও এমনটাই ছিল। তাঁরা নামাযে লোকমা দেয়ার ক্ষেত্রে সুবহানাল্লাহ বলেই লোকমা দিতেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসেছে-
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوسُفَ مَوْلَى عُثْمَانَ عَنْ أَبِيهِ يُوسُفَ أَنَّ مُعَاوِيَةَ صَلَّى أَمَامَهُمْ فَقَامَ فِي الصَّلَاةِ وَعَلَيْهِ جُلُوسٌ فَسَبَّحَ النَّاسُ فَتَمَّ عَلَى قِيَامِهِ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ بَعْدَ أَنْ أَتَمَّ الصَّلَاةَ ثُمَّ قَعَدَ عَلَى الْمِنْبَرِ، فَقَالَ: إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقولُ: مَنْ نَسِيَ شَيْئًا مِنْ صَلَاتِهِ فَلْيَسْجُدْ مِثْلَ هَاتَيْنِ السَّجْدَتَيْنِ.
যে, হযরত মুয়াবিয়া রা. একদিন লোকদের সামনে সালাত আদায় করলেন। তিনি সালাতে এমন সময় দাঁড়িয়ে গেলেন, যখন তাঁর উপর বসা জরুরী ছিল। (অর্থাৎ দ্বিতীয় রাকাতে না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন) তখন মুসল্লীরা "সুবহানাল্লাহ" বললে তিনি দাঁড়ানো অবস্থায়ই থাকলেন। সালাতে শেষ করার পর বসা অবস্থায় দু’টি সিজদা করলেন, তারপর মিম্বারের উপর বসে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, যদি নামাজী তার সালাতে কোনো কিছু ভুলে যায় সে যেন এ দু’টি সিজদার ন্যায় (দু’টি) সিজদা করে নেয়। (সুনানে নাসায়ী, হাদিস নং-১২৬০, মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং-১৬৯১৭) হাদিসের মান: সহীহ।
* তেমনি ভাবে একদা হযরত মুগীরা বিন শোবা রা. চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজের দ্বিতীয় রাকাতে না বসে দাঁড়িয়ে যান। তখন পিছনের মুসল্লিরা "সুবহানাল্লাহ" বলে লোকমা দেন।
عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، قَالَ صَلَّى بِنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ فَلَمَّا صَلَّى رَكْعَتَيْنِ قَامَ وَلَمْ يَجْلِسْ فَسَبَّحَ بِهِ مَنْ خَلْفَهُ فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنْ قُومُوا فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلاَتِهِ سَلَّمَ وَسَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ وَسَلَّمَ وَقَالَ هَكَذَا صَنَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.
যিয়াদ ইবনু ইলাক্বা র. থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, একদা মুগীরা ইবনু শু’বা রা. আমাদের নামায আদায় করালেন। তিনি দুই রাক’আত আদায় করে না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। তাঁর পিছনের লোকেরা তাঁকে শুনিয়ে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলল। তিনি তাদেরকে ইশারায় বললেন, দাঁড়িয়ে যাও। নামায শেষ করে তিনি সালাম ফিরালেন, তারপর দুটি ভুলের সাজদাহ্ করলেন এবং আবার সালাম ফিরালেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনটিই করেছেন। (সুনানে তিরমিজয, হাদিস নং-৩৬৫) হাদিসের মান: সহিহ । ইমাম তিরমিযী র. বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
* এছাড়াও বিভিন্নসূত্রে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকমা দেয়ার ক্ষেত্রে পূরুষদেরকে সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দিতে আদেশ করেছেন এবং মহিলাদেরকে তাসফীক্ব তথা মৃদু হাততালি দিতে বলেছেন।
হাদীসে ইরশাদ হয়েছে- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- ্র التَّسْبِيحُ لِلرِّجَالِ وَالتَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ. হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তাসবীহ হল পুরুষদের জন্য, আর তাসফীক তথা মৃদু তালি হল মহিলাদের জন্য। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১১৪৫, সহীহ মুসলিম হাদীস নং-৯৮২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৯৪০, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১০৩৪,)
* হানাফী মাযহাবের মুহাদ্দিসীন ও ফুকাহায়ে কেরামও এমনটিই মত দিয়েছেন।
ইমাম তাহাভী র. (৩২১) তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ শারহু মাআনিল আসারে ১/২৯৪ পৃষ্ঠায় লিখেন যে, উম্মতে মুসলিমার ঐক্যমত এবং রাসূলের শিক্ষা হলো, ইমামের ভুল হলে সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দেয়া। নিম্নে তার বক্তব্য দেয়া হলো-
ومما يدل على أن ذلك منسوخ وأن العمل على خلافه: أن الأمة قد أجمعت أن رجلا لو ترك إمامُه من صلاته شيئا أنه يسبح به ليعلم إمامَه ما قد ترك، فيأتي به.
فعلمهم رسول الله الله في هذه الآثار في كل نائبة تنوبهم في الصلاة التسبيح ولم يبح غيره.
* আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী আল হানাফী র. (৮৫৫) শারহু মাআনিল আসারের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যা গ্রন্থ "নুখাবুল আফকার" ( ৭/৪৭, ৫৩ পৃষ্ঠায়) লিখেন, সুন্নাহ হচ্ছে ইমাম সাহেব কোনো ভুল করলে সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দেয়া। অন্য কোনো শব্দে লোকমা না দেয়া। নিম্নে তার বক্তব্য দেয়া হলো-
ويستنبط من هذا أحكام:
الأول: أن السنة لمن نابه شيء في الصلاة كإعلام من يستأذن عليه ، وتنبيه إمامه ونحو ذلك: أن يسبح إن كان رجلا فيقول: سبحان الله وأن يصفق إن كانت امرأة.
فعلم رسول الله ال الصحابة في الآثار المذكورة وهي التي رواها سهل بن سعد وأبو هريرة ومعاوية بن الحكم ্রفي كل نائبةগ্ধ أي: نازله تنزل بهم في الصلاة أن يقولوا سبحان الله ولم يبح لهم أن يقولوا شيئا غير ذلك.
نخب الأفكار، باب الكلام في الصلاة لما يحدث فيها من السهو.
ফিকহে শাফেয়ী:
ফিকহে শাফেয়ীতেও সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দেয়ার কথা আছে। সহীহ মুসলিমের প্রখ্যাত ব্যাখ্যাতা ইমাম আবু যাকারিয়া মুহিউদ্দীন নবভী শাফেয়ী (৬৭৬) "আল মাজমূ শরহুল মুহাযযাব" (৪/৮২ পৃষ্ঠায়) লিখেন-
ﺃﻭ ﺳﻬﻰ اﻹﻣﺎﻡ ﻓﺄﺭاﺩ ﺃﻥ ﻳﻌﻠﻤﻪ اﻟﺴﻬﻮ اﺳﺘﺤﺐ ﻟﻪ ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺭﺟﻼ ﺃﻥ ﻳﺴﺒﺢ ﻭﺗﺼﻔﻖ ﺇﻥ ﻛﺎﻥﺗ اﻣﺮﺃﺓ.
আরো দেখুন- আল মিনহাজ লিন-নবভী ১/২০৩.
ফিকহে মালেকী:
মালেকী মাযহাবের প্রখ্যাত ফকীহ ইবনু রুশদ আল মালেকী (৫৯৫) তার বিখ্যাতগ্রন্থ " বিদায়াতুল মুজতাহিদ" (১/২০৭পৃষ্ঠায়) লিখেন-
اﻟﻔﺼﻞ اﻟﺴﺎﺩﺱ: ﺑﻤﺎﺫا ﻳﻨﺒﻪ اﻟﻤﺄﻣﻮﻡ اﻹﻣﺎﻡَ اﻟﺴﺎﻫﻲ.
ﻭاﺗﻔﻘﻮا ﻋﻠﻰ ﺃﻥ اﻟﺴﻨﺔ ﻟﻤﻦ ﺳﻬﺎ ﻓﻲ ﺻﻼﺗﻪ ﺃﻥ ﻳﺴﺒﺢ ﻟﻪ ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻠﺮﺟﻞ.
ফিকহে হাম্বলী: হাম্বলী মাযহাবের প্রখ্যাত ফকীহ ইবনু কুদামা আল মালেকী (৬২০) তার প্রসিদ্ধগ্রন্থ "আল মুগনী" ২/১৫ পৃষ্ঠায় লিখেন-
ﻓﺼﻞ: ﻭﺇﺫا ﺳﻬﺎ اﻹﻣﺎﻡ ﻓﺄﺗﻰ ﺑﻔﻌﻞ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﻣﻮﺿﻌﻪ ﻟﺰﻡ اﻟﻤﺄﻣﻮﻣﻴﻦ ﺗﻨﺒﻴﻬﻪ ﻓﺈﻥ ﻛﺎﻧﻮا ﺭﺟﺎﻻ ﺳﺒﺤﻮا ﺑﻪ ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻧﻮا ﻧﺴﺎء ﺻﻔﻘﻦ ﺑﺒﻄﻮﻥ ﺃﻛﻔﻬﻦ ﻋﻠﻰ ﻇﻬﻮﺭ اﻷﺧﺮﻯ. ﻭﺑﻬﺬا ﻗﺎﻝ اﻟﺸﺎﻓﻌﻲ.
* এছাড়াও হানাফী মাযহাবের অন্যান্য ফকীহগনও তাদের গ্রন্থাবলীতে এমনটাই মত ব্যক্ত করেছেন- আলমাবসূত ১/২০০; মুহীতুল বুরহানী ২/২১৩; শরহুল মুনইয়া ৪৪৯; আর তাজরীদ, ২/৫৯৬; ইলাউস সুনান, ৫/৫৮; ফাতওয়া কাসেমিয়া, ৭/২০৩; ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ, ৪/৬৬
পরিসংহার: যেহেতু হাদিস ও ফিকাহ গ্রন্থাবলিতে সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দেওয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে, তাই তাই পূরুষদের জন্য "সুবহানাল্লাহ" ছাড়া আল্লাহু আকবার বা অন্য কোন শব্দে লোকমা দেওয়ার প্রথা পরিহারযোগ্য।
কিয়াসের দাবিও এটাই, কারণ আল্লাহু আকবার বলতে হয় মহাত্মতা এবং বড়ত্বতার ক্ষেত্রে। ইমাম সাহেব ভুল করে এমন কিছু কোনো বড়ত্বতার কাজ করেনি যে এখানে আল্লাহু আকবার বলতে হবে; বরং এখানে সতর্ক ও আশ্চর্য প্রকাশের জন্য সুবহানাল্লাহ বলবে। সুবহানাল্লাহ অর্থ "আল্লাহ অতি পূতপবিত্র" তাই আল্লাহর জন্য নামাজকে ভুল থেকে পূতপবিত্র রাখার জন্য সুবহানাল্লাহ বলাই স্থান উপযোগী। রাসূল সা. দুর্ঘটনা ও আশ্চর্যের ক্ষেত্রে সুবহানাল্লাহ বলতেন। সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ১১২৬; ২৮৩.
লেখক: মুহাদ্দিস, শেখ জনূরুদ্দীন র. দারুল কুরআন মাদরাসা, চৌধুরীপাড়া, ঢাকা।
-এটি