আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মুসলমান নারী পুরুষকে যেকোন অবস্থায় খোলা জাগায় উলঙ্গ হয়ে গোসল করতে নিষেধ করা হয়েছে। অপর দিকে বন্ধ জাগায় একাকি সতর খোলে গোসল জায়েজ হলেও অনুচিত বা মন্দ বলা হয়েছে।
রাসুল সা. বর্ণিত হাদিস, তিনি সা. এক ব্যাক্তিকে উলঙ্গ হয়ে খোলা জায়গায় গোসল করতে দেখলেন। অতঃপর মিম্বারে উঠে আল্লাহরপ্রশংসা ও গুণগান করার পর বললেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ লজ্জাশীল, গোপনীয়তা অবলম্বনকারী। তিনি লজ্জা ও গোপনীয়তাপছন্দ করেন। তোমাদের কেউ গোসল করতে চাইলে সে যেন গোপনীয়তা অবলম্বন করে। (আবু দাউদ)
কাজেই জরুরত ছাড়া গোপনাঙ্গ খোলা কোনভাবে যুক্তিযুক্ত নয়। একাকি হলেও সতর খোলার ব্যপারে দুই কারণে লজ্জা বা শরম থাকা উচিত। প্রথমত একাকি আল্লাহ তাআলাকে সবচেয়ে বেশি লজ্জা করা চাই। দীত্বিয়ত আমাদের সাথে থাকা কিরামান কাতিবীন ফিরিশতা আছেন তাদেরও সম্মান প্রদর্শন করাও জরুরি।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন তোমরা নগ্নতা হতে বেঁচে থাক। কেননা তোমাদের এমন সঙ্গী আছেন(কিরামান-কাতিবীন) যারা পেশাব- পায়খানা ও স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ছাড়া অন্য কোন সময় তোমাদের হতে আলাদা হননা। সুতরাং তাদের লজ্জা কর এবং সম্মান কর। (তিরমিজি)
গোপনাঙ্গ উম্মুচন পাপাচারের সহায়ক
আমরা এমন সময়ে বাস করছি মানবজাতি গোপনাঙ্গের ব্যপারে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ লঙ্ঘন করেছে। তারা উপকূল, সমুদ্র সৈকত, রিসোর্ট এমন স্থানগুলিতে গোপনাঙ্গ উন্মোচনের সব আয়োজন করে যাচ্ছে। যেগুলিকে তারা পর্যটন বলে নাম জিতেছে। এমনভাবে গোপনাঙ্গ খোলা রাখার মহড়া চলছে খেলার মাঠে, হাট বাজারে।
মানুষ নগ্নতার জন্য ভিবিন্ন ক্লাব প্রতিষ্ঠা করছে এবংনগ্নদের জন্য বিশেষ রাস্তা রয়েছে। মূলত তারা তাদের শিল্প, কৃষি এবং বাণিজ্যিক উন্নতি সত্ত্বেও পশুত্বের জীবনে ফিরে যাচ্ছে। সেটি অনুধাবন করছে না!
কিন্তু ঈমান ও শালীনতার দিক বিবেচনা করলে এসব কাজ জানোয়ারদের থেকে নিকৃষ্ট। এটা দুঃখজনক যে কিছু মুসলমানও বিপথগামীদের অনুকরণ করে এবং নগ্নতা উন্মোচনের ক্ষেত্রে তাদের পন্থা অনুসরণ করে। তাদের সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। আজ কাল কিছু মুসলিম পুরুষকে ছোট প্যান্ট পরতে দেখা যায়। তারা এমন পোশাকে রাস্তায় দৌড়ায় বা জিম সেন্টারে জিম করে। নবী সা. আমাদেরকেএই দুর্বিষহ অবস্থা সম্পর্কে অনেক আগেই সতর্ক বাণী শুনিয়েছেন।
কিছু মানুষ আছে লম্বা জামাকাপড়ের নিচে শর্ট প্যান্ট পরে মজলিসে বসেন। তারা এক পা অন্যটির ওপরে রাখা অবস্থায় উরু উম্মুক্ত হয়ে যায় এবং এমটি হারাম বলা হয়েছে। মোটেও জায়েয নয়। কাজেই এসব বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।
গোপনাঙ্গের উম্মুচন পাপাচারকে বিস্তার করে। আর এই নগ্নতার প্রতিযোগিতা যেন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ নগ্নতার বিস্তারে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন- যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিরয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না। (সুরা নূর ১৯)
সালাতের সতর-
সতর তো এমনিতেই খোলা রাখা মহাপাপ। যেকোন হালতে, যেকোন পরিস্থিতে সতর ঢাকা জরুরী। কাজেই সালাতের সতর নিয়ে আরও বেশি সচেতন হওয়া জরুরী। কারণ সতর ঢাকা সালাত শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত। আজ কাল কিছুমুসল্লী দেখা যায় মসজিদে ছোট ছোট কাপড় পরে আসেন। যখন রুকু বা সিজদায় যান হাটু বার তার উপরের অংশ খোলে যায়।
শরয়ী গ্রহনযোগ্য অসুবিধা না হলে এমন পরিস্তিতি সালাত শুদ্ধ হবে না। কারণ এমন ব্যক্তি উলঙ্গ সালাত আদায় করীর ভিতরপড়ে। কাজেই আমাদের সালাতের পোশাক ফরজ পোশাকের অতিরিক্ত আরেকটু ঢিলে ঢাল, আরেকটু সুন্দর সহ আরও বেশি যথাযথ হওয়া জরুরী। কারণ আমি আমার পালনকর্তার সামনে আসছি।
তার সামনে নিজেকে পেশ করতে যাচ্ছি। এমন অনুভূতি জাগ্রত থাকা চাই। আল্লাহ তাআলা সালাতের পোশাকের ব্যপারে বলেন- হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।(সুরা আরাফ ৩১)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিক বুঝার তাওফিক দান করুন। আমিন
আব্দুল কাদির আল মাহদি
স্পেনের তারিক বিন জিয়াদ মসজিদের জুম্মার খুতবা থেকে
-এটি