আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কাঁচপুরের হতদরিদ্র পরিবারের তৃতীয় শ্রেনী পড়ুয়া মেধাবী মেয়ে জান্নাত। বুঝ হওয়ার আগেই হয়েছে মা হারা। প্রবাসী বাবা নেয় না কোনো ধরণের খোঁজখবর।
আড়তের পেয়াজ, রসুন বেছে বেছে চলে দাদা দাদীর সংসার। এখানেই বেড়ে উঠছে ছোট্ট জান্নাত। হঠাৎ তার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়লে বৃদ্ধ অসহায় দাদা দাদী দিশেহারা হয়ে যান। খবর পেয়ে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিচালক সংস্থার আলোচিত প্রজেক্ট জান্নাতের খোঁজের আওতায় নিয়ে আসেন। তাকে ভর্তি করা হয় ধানমন্ডি ইবনে সিনায়। সর্বশেষ গতকাল সফলভাবে সম্পন্ন হয় তার ব্যায়বহুল অপারেশন।
গাজিপুরের মাদরাসা শিক্ষক এক মাওলানা সাহেবের ফুটফুটে মেয়ে জাকেরা। ছাদে খেলতে গিয়ে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে স্পৃষ্ট হউএ হাত এবং পা ঝলসে যায়।
সামান্য বেতনে চাকুরি করা মাওলানা সাহেব মেয়ের চিকিৎসার জন্য ধারদেনা করে খরচ করে ফেলেন লক্ষাধিক টাকা। এরপর জান্নাতের খোঁজে প্রজেক্টের মাধ্যমে তাকে নিয়ে আসা হয় শেখ হাসিনা বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানে ১৫ দিন ভর্তি থাকার পর তার হাতের অপারেশন হয়।
গতকাল ছোট্ট বাচ্চাটির হাতের ব্যান্ডেজ খোলা হয়েছে।এখন চলছে পায়ের অপারেশন প্রস্তুতি। এবং সুস্থ হওয়া পর্যন্ত প্রজেক্ট জান্নাতের খোঁজে তার দেখভাল করবে বলে জানা গেছে।
আরেক মাওলানা সাহেবের ৬ মাস বয়সী দুধের শিশু নাজিবুল্লাহ। চাকুরীহারা বাবার এই শিশু বাচ্চার অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্টের জন্য ডাক্তার দেখাতে দেখাতে একসময় দেখা যায় তার হার্টে দুইটা ছিদ্র। অপারেশনে খরচ হবে দেড় লক্ষাধিক টাকা। জান্নাতের খোঁজে প্রজেক্টের মাধ্যমে তাকে ভর্তি করা হয় শ্যামলি শিশু হাসপাতালে।
সেখান থেকে ডাক্তার জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে রেফার করে। গতকাল তার অপারেশনের কথা থাকলেও ওজন কম থাকায় সম্ভব হয়নি। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দ্রুতই অপারেশন করা হবে বলে জানা যায়।
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নওমুসলিম মুহাম্মাদ রাজ বলেন,আল্লাহর এক বান্দার সহযোগীতায় আমরা এই তিন রোগীর চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি।
আর অন্য এক ভাইয়ের সহযোগীতায় আমরা জন্ম থেকে হিমানজিয়োমা রোগে আক্রান্ত, ডান পা অকেজো ব্রেনের সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা মোড়ল ভাইয়ের পায়ের ১৩টি থ্যারাপি সম্পন্ন করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। পায়ে পচন ধরার কারনে মাসে ২টির বেশী থ্যারাপী সহ্য করার মত ক্ষমতা তার ছিল না তার সামনে তার আরো চিকিৎসার প্রয়োজন যা আমরা করব ইনশাআল্লাহ।
সংস্থাটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক আমীরুল ইসলাম বলেন, জান্নাতের খোঁজে প্রজেক্ট আমাদের সবচেয়ে আলোচিত প্রজেক্ট। যার মাধ্যমে আমরা সজনহীন, অসহায় রোগীদের ছোট থেকে বড় নানা চিকিৎসা করে থাকি। এছাড়া আমাদের রয়েছে নানামুখী সেবামূলক কার্যক্রম।
যেমন বন্যার্তদের খাদ্য,অর্থ, চিকিৎসা ও আবাসন সহায়তা,টিউবওয়েল স্থাপন,বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প,এতিমদের প্রতিপালন,ইফতারি ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ, কুরবানীর গোশত বিতরণ,শিক্ষা সহায়তা প্রদান সহ আরো নানামুখী কার্যক্রম।
দেশের যে কোনো সেবামূলক কার্যক্রমে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান করেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জামে মসজিদের ইমাম-খতিব মাওলানা ইবরাহীম খলিল।
-এটি