আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ঈদের দু-একদিন আগে থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরের মানুষ ছুটি কাটাতে গ্রামে বাড়ি ফিরতে শুরু করেন। এর একটা বিরাট অংশ যাতায়াত করে নদীপথে, যার কারণে প্রতি বছর বাড়তি যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল, টিকিটের অতিরিক্ত ভাড়ার মতো বিভিন্ন ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ সময় লঞ্চ দুর্ঘটনাও বেশি ঘটে। ঈদের ছুটিতে নৌপথে যাত্রীদের চলাচল নিরাপদ করতে এবং হয়রানি কমাতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দরকার হবে মাঠ প্রশাসনের সহায়তা। যাত্রীদের নির্বিঘœ যাতায়াতের জন্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দেশের জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সম্প্রতি মন্ত্রী পরিষদের উপসচিব সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদের চিঠিতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহা ২০২২ উপলক্ষে ফেরি সার্ভিস ও দেশের বিভিন্ন নৌপথে স্টিমার, লঞ্চসহ জলযানগুলোর সুষ্ঠুভাবে চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ যথাযথ কর্মপন্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গত ১২ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি সভা অনুুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় গৃহীত কিছু সিদ্ধান্তের সাথে মাঠ প্রশাসনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। উল্লিখিত সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নদীপথে ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ঈদের সময় হাইওয়ে পুলিশের সহায়তা নিয়ে টার্মিনালে মোটরসাইকেল প্রবেশ রোধ করতে হবে। লঞ্চের ছাদে যাত্রী উঠানো যাবে না। ট্রলারে যাত্রী চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো যাবে না। সভায় আলোচনা শেষে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৪৬টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এর মধ্যে রয়েছে- সদরঘাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি আনসারসহ কমিউনিটি পুলিশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সদরঘাট থেকে বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত রাস্তা যানজটমুক্ত এবং সদরঘাট টার্মিনাল ও লঞ্চসমূহ হকারমুক্ত রাখতে হবে। সব ধরনের যাত্রী হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া বা কম ভাড়া আদায়ে এবং নদীর মাঝপথে নৌকায় যাত্রী উঠলে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ মালিক/চালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সব যাত্রীবাহী নৌযানে সদরঘাটে ঈদের আগে পাঁচ দিন মালামাল এবং মোটরসাইকেল পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ এবং ঈদের পরে পাঁচ দিন অন্যান্য নদী বন্দর হতে আগত নৌযানে মালামাল এবং মোটরসাইকেল পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখতে হবে। আগামী ৫ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত সার্বক্ষণিক সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
নৌপথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, শ্রমিক ও যাত্রীদের হয়রানি এবং ভীতিমূলক অবস্থা প্রতিরোধ করার জন্য রাতে পুলিশের টহলের ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিটি ঘাটে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে ভিজিলেন্স টিম গঠন করতে হবে। কোনো ক্রমেই লঞ্চে যাত্রী ও মালামাল ওভারলোড করা যাবে না। ঈদের আগে তিন দিন এবং পরে তিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ব্যতীত সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ রাখতে হবে। কোরবানির গরুবাহী ট্রাক পারাপারের জন্য ডেডিকেটেড ফেরির ব্যবস্থা করতে হবে। ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট এবং স্পিডবোট ঘাটসমূহে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নিয়ন্ত্রণের জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
-কেএল