আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: দেশের মানুষ এক ভয়াবহ ট্রাজেডি দেখেছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে ক্ষণে ক্ষণে। এ ঘটনায় আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চার শতাধিক। তাদের মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন।
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট। তাদের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৫০ জন সদস্য।
এর আগে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দগ্ধ ৬০-৭০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার সকালের দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো। দগ্ধদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ডিপোতে আমদানি-রপ্তানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনার ছিল। ডিপোর কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল। এজন্য আগুন লাগার পর দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত বেশি হয়েছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শামীম আহসান বলেন, মরদেহগুলো হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আমরা এ আগুণের ভয়াবহতা দেখতে পেয়েছি। তাই এখানে যারা আহত হয়েছেন তাদের অধিকাংশের অবস্থা আশংকাজনক।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সব ইউনিটে সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোঃ আনিসুর রহমান জানান, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন কর্মী নিহত ও আহত হন ২১ জন। এ ছাড়াও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আসলে এখানে অগ্নিনির্বাপক কোনো কিছুর ব্যবস্থা আছে কি না সেটাই আমরা জানি না। এত বড় একটা জায়গা এখানে যতেষ্ট নিরাপত্তার অভাব দেখতে পাচ্ছি।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন জানান, অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২ লাখ টাকা ও আহতদের ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।
নিহতদের মধ্যে এ পর্যন্ত সাতজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন কুমিরা ফায়ার স্টেশনের নার্সিং অ্যান্টেনডেন্টস মো. মনিরুজ্জামান (৩২), নোয়াখালী চাটকিল উপজেলার আব্দুর রশিদের ছেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আলা উদ্দিন (৩৫), বাঁশাখালী উপজেলার চনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের বাসিন্দা মমিনুল হক (২৪), একই উপজেলার চারিয়ার নাপুরা এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে মো. মহিউদ্দীন (২৪), ভোলা জেলার হাবিবুর রহমান (২৬), রবিউল আলম (১৯) ও ডিপোর ফ্রক অপারেটর বাশখালীর নাপোড়া এলাকার হাসান আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ (২২)।
-আবদুল্লাহ তামিম