রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


হবিগঞ্জে উজান থেকে আসা পানির নিচে ৫০০ একর জমির ধান, দিশেহারা কৃষক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। আরও কয়েকশ একর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। ফলে তাদেরকে আধাপাকা ধান কাটতে হচ্ছে। দ্রুত ধান কাটার জন্য শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না।

যে জমির ধান আগে এক হাজার টাকায় কাটতে শ্রমিকরা আগ্রহী হয়ে উঠতো, পানি বেড়ে যাওয়ায় সেই জমির ধান এখন তিন হাজার টাকা দিয়ে কাটতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন কৃষকরা।

স্থানীয়রা জানান, গত দুই দিন ধরে হঠাৎ করে উজান থেকে হাওরগুলোতে পানি আসতে শুরু করেছে। দুই দিনে লাখাই উপজেলার স্বজন হাওরে অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার বিকেল পর্যন্ত ৫০০ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। আরও কয়েকশ একর জমির ধান রাতের মধ্যেই তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা জমির আধাপাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্থানীয় স্বজন গ্রামের কৃষক নিশিকান্ত রায় বলেন, আমাদের এলাকায় কোনো বৃষ্টি নেই। হঠাৎ করে উজান থেকে পানি আসতে শুরু করেছে। গত দুই দিনে আমাদের হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কিছু জমির ধান এখনো পানির ওপরে আছে। তবে যেভাবে পানি বাড়ছে মনে হয় তাও তলিয়ে যাবে। আমরা কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছি।

তিনি বলেন, দ্বিগুণ মূল্য দিয়ে শ্রমিক জোগাড় করে কোনো রকমে ধান কেটে আনা হচ্ছে। তবে এতে শ্রমিকের মজুরির দামও উঠবে না।

একই গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল আমাদের সর্বস্বান্ত করেছে। আর অল্পদিনের মধ্যেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা যেত। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পানি আমাদের সব কিছু নিয়ে গেছে। এখন যা আছে তাও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছি। ফলে বাধ্য হয়েই আধাপাকা ধান কাটতে হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক দেবাশীষ দাশ বলেন, লাখাই উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক একর জমির ধান একেবারে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া ধান কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে, যে কারণে পানির নিচ থেকে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষকরা হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। ধান কাটার সময়ে হঠাৎ করে উজান থেকে পানি এসে হাওরগুলো তলিয়ে যাচ্ছে।

একই এলাকার হরিদাশ নামে এক কৃষক জানান, এখনো যে জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়নি, সেগুলো কেটে নিয়ে আসলে ধান একেবারে কম পাওয়া যাবে। আধাপাকা ধান কেটে আনার পর শ্রমিকের খরচও উঠবে না। কী করব বুঝতে পারছি না।

লাখাই উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য জানান, উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রাম, বেজুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণরূপে পানিতে নিমজ্জিত। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান কাটার জন্য কৃষকদের তাগিদ দিয়েছি। এছাড়াও এলাকায় মাইকিং করে দ্রুত ধান কাটার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলের ফলে হাওরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এনটি


সম্পর্কিত খবর