রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


পুলিশের সামনেই কু*পিয়ে হত্যা*র ভয়া*বহ ভিডিও ভাইরাল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: শেরপুররে শ্রীবরদী উপজেলার রানিশিমুল ইউনিয়নের হালুয়াহাটি এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শেখবর আলী (৪৫) নামে এক কাঠমিস্ত্রিকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ।

রবিবার (১০ এপ্রিল) ভাইরাল হয় ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিওটি।

যেখানে দেখা যায় পুলিশের উপস্থিতিতেই শেখবর আলীকে প্রকাশ্যে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। ভিডিও দেখে পুলিশের বিরুদ্ধে নিরব ভূমিকায় থাকার অভিযোগ করছে স্খানীয়রা।

রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে শেখবর আলীকে হত্যার ওই ভিডিও। সেখানে দেখা যায় মাত্র এক মিনিট কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শেখবর আলীকে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। এ সময় পুলিশের দিকেও তেরে আসে খুনিরা। তবে পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, অতর্কিতে রাম দা, দা, গরু জবাই করার ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়ে শেখবর আলীর ওপর উপর্যুপরি আঘাত করে জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ অন্যরা। এ সময় সামনেই দেখা যায় পুলিশকে। ঘটনার আকস্মিকতায় পুলিশ হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের প্রতি তেড়ে আসার ঘটনা ভিডিওতে দেখা যায়।

যদিও এর আগেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ-র‍্যাব। তাদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

নিহতের পরিবার এবং মামলা সূত্রে জানা যায়, শেখবর আলী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার ছোট ভাই মাহফুজ বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার দিন তিনজন এবং পরবর্তীতে প্রধান আসামি জিকোসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে পুলিশের সামনেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও সেবিষয়ে মামলার এজাহারে কিছুই উল্লেখ নেই বলে জানা গেছে। মামলায় শ্রীবরদী থানা পুলিশ সেটি উল্লেখ করতে দেয়নি বলে অভিযোগ বাদীপক্ষের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন প্রতিবেশী জাকির হোসেন জিকোর সঙ্গে শেখবর আলীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এরই জেরে ২২ মার্চ প্রতিপক্ষ জিকোসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শেখবর আলী। ঘটনা তদন্তে পরদিন ২৩ মার্চ বিকেলে ঘটনাস্থলে যায় শ্রীবরদীর থানা পুলিশের এসআই ওয়ারেছসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।

এ সময় জিকোসহ ৪-৫ জন অতর্কিতভাবে ধারালো দা, রাম দা, ছুড়ি ও লাঠিসোটা নিয়ে শেখবর আলীর ওপর হামলা করলে ঘটনাস্থলেই শেখবর আলী মারা যান। এ ঘটনায় ওই দিন অভিযান চালিয়ে জিকোর স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।

পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মিজানুর রহমান রাজাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে একই দিন শ্রীবরদীর বালিজুড়ি এলাকার গহীন অরণ্য থেকে মামলার প্রধান আসামি জিকোকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৪ জামালপুর ক্যাম্পের সিপিসি-১ ইউনিট। এনিয়ে ওই মামলায় মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ইতোপূর্বে জাকির হোসেন জিকোর ওপর প্রতিপক্ষরা হামলা করলে তিনি গুরুতর আহত হন এবং মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে যান। কিন্তু তখন জিকো কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা হয়নি। ওই ঘটনার পর পরই শেখবর আলী ভিটেমাটি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হন। কোনো মামলা না হলেও জিকো সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন এবং তার পরিবার ‘মারের বদলে মার’ দেওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। যে কারণে শেখবর আলী বাড়ি ফেরার পরই তার ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে।

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে জিকো ও সাইফুল। এ ছাড়াও এ ঘটনায় পুলিশের এসআই ওয়ারেছ আলীকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর