শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘ভারত সরকার কর্তৃক দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ’ বিষয়ে গুজব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইবনে নাজ্জার
দেওবন্দ থেকে

কিছু দিন পূর্বে ভারতের জাতীয় শিশু-কিশোর অধিকার সুরক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে সাহারানপুর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি নোটিশ জারি করা হয়। নোটিশে দারুল উলুম দেওবন্দের বিরুদ্ধে ভারতের সংবিধান বিরোধী ফতোয়া দিয়ে শিশু অধিকার হরণের অভিযোগ আনা হয়। এবং ১০ দিনের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়। পরবর্তিতে জেলা প্রশাসক দারুল উলুম দেওবন্দকে নোটিশ জারি করে বিতর্কিত ফতোয়াগুলোর জবাব তলব করেন।

তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওয়েবসাইট থেকে ফতোয়াগুলো সরানোর নির্দেশ দেন। অতঃপর দারুল উলুম দেওবন্দও নোটিশ পেয়ে উল্লেখিত ফতোয়ার লিখিত জবাব প্রদান করেন এবং সাময়িক ভাবে ফতোয়াগুলো ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলেন।

তবে ইতিমধ্যে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে ভারত সরকার। সারা বিশ্বের মুসলমানের প্রাণকেন্দ্র দারুল উলুম দেওবন্দে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপে অস্থির হয়ে পড়ে সবাই। বিভিন্ন ভাবে প্রতিবাদ ও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে থাকে। বিভিন্ন মিডিয়া কর্মীসহ অনেকেই যোগাযোগ করতে থাকে দারুল উলুম দেওবন্দ ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে।

এবিষয়ে সাহারানপুর জেলা প্রশাসক অখিলেশ সিং জানান, জাতীয় শিশু-কিশোর অধিকার সুরক্ষা কমিশনের নোটিশের ভিত্তিতে দারুল উলুম দেওবন্দকে শনিবার একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। নোটিশে ওয়েবসাইট থেকে বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ফতোয়ার লিঙ্কগুলো সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওয়েবসাইটটি পুরোপুরি বন্ধ করার কোনো নির্দেশ জারি করা হয়নি।

এবিষয়ে দারুল উলূম দেওবন্দের পরিচালক মুফতি আবুল কাসিম নোমানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিশু-কিশোর অধিকার সুরক্ষা কমিশনের কাছে দারুল উলুম দেওবন্দের কিছু ফতোয়া ভারতের সংবিধান, মানবধিকার, ভূমি আইন ও শিক্ষা অধিকার বিরোধী দাবি করে অভিযোগ করা হয়। ফলে কমিশন জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠালে, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে একটি নোটিশ আসে। যেখানে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওয়েবসাইট থেকে বিতর্কিত ৯টি ফতোয়া সরিয়ে ফেলতে বলা হয়। নোটিশ পেয়ে আমরা ফতোয়াগুলো সাময়িকের জন্য সরিয়ে ফেলি এবং জেলা প্রশাসক বরাবর ফতোয়াগুলোর লিখিত উত্তর প্রেরণ করি। তবে ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়নি, এখনও চলমান রয়েছে।

দারুল উলুম দেওবন্দের সহকারী পরিচালক মুফতি রাশিদ আজমির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শুধু মাত্র নির্দিষ্ট ফতোয়াগুলো সরাতে বলা হয়েছে। আমরা তা করেছি, তবে ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়নি। এখনও আগের মতোই উম্মতে মুসলিমাকে সেবা প্রদান করেছ দারুল উলুম দেওবন্দের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট।

এব্যাপারে দারুল উলূম দেওবন্দের মিডিয়া মুখপাত্র মাওলানা আশরাফ উসমানি বলেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে নোটিশ এসেছে। সেখানে কিছু ফতোয়া সাময়িকের জন্য সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। আমরা তা করেছি। তবে এটা প্রথম নয়, ফতোয়া নিয়ে এর আগেও অনেক কিছু হয়েছে। কখনো বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। জবাব তলব করেছে, তদন্ত হয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে পেরেছি। ফতোয়া সবসময় ইসলামী আইন অনুযায়ী জারি করা হয়। তবে প্রত্যেকটি ফতোয়াই উপদেশ। পালন করা বা না করা, এটি যার যার নিজস্ব ব্যাপার।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ