নাসিম ইমরান।।
পশ্চিম দিগন্তের প্রায় কাছে চলে এসেছে সূর্য । আলো ফিকে হয়ে এসেছে, আর নেই সেই তেজ। কি গরম দিনটাই না গেল আজ! রোদের প্রখর তাপে সারাদিন গরুগুলো মাঠে চড়িয়ে, শেষবেলা রোদে পোড়া ক্লান্ত তামাটে শরীর নিয়ে জহির মিয়া বসেছে কদম গাছটার নিচে। গাছে পীঠ ঠেকিয়ে নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে গরুগুলোর দিকে।
আর কিছুক্ষণ পরেই জহির মিয়া গরুরপাল নিয়ে ফিরবে মালিকের বাড়ির দিকে। যেদিক দিয়ে ফিরবে গরুরপাল, পেছনে উড়বে ধূলো। যে নিমিত্তে ভাষাবিদরা সে ক্ষণের নাম দেবে গোধূলিলগ্ন (গো-ধূলি-লগ্ন) । রচিত হবে সাহিত্য, কবিতা, গদ্য।
ডুলি ভরা ধান আর পুকুরে দেশি মাছ। অবশ্য তখনকার দিনে ফিড খাওয়া মাছ-মুক্ত ছিল পৃথিবী। আর গোয়াল ভরা গরু। দেশি গরুর দুধের ঘির ঘ্রাণে মোহিত হয়ে থাকে চারপাশ। এমনি অবস্থা ছিল সে যুগের বিত্তবানদের।
প্রত্যেক বিত্তবানদের বাড়িতেই দুয়েকজন জহির মিয়া থাকে। তাদের জীবন কাটে দুবেলা খাবারের জন্য হাড়ভাঙ্গা কষ্ট করে। তাদের গোধূলিলগ্নে থাকে না সাহিত্য, থাকে না প্রেম। তাদের গোধূলিলগ্নে থাকে সত্যিকারের গো-ধূলি।
লেখক: শিক্ষার্থী সাহিত্য ও গবেষণা বিভাগ, মাহাদুল ফিকরি ওয়াদদিরাসাতিল ইসলামিয়া ঢাকা।
কেএল