আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আলজেরিয়া সাহারা মরুভূমির দেশ। আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশে ভূমধ্যসাগরের তীরের একটি স্বাধীন দেশ।
এটি আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। রাষ্ট্রীয় নাম ডেমোক্রেটিক অ্যান্ড পপুলার রিপাবলিক অব আলজেরিয়া। আলজেরিয়ার আরবি নাম আল-জাজাইর (দ্বীপপুঞ্জ)।
১৯৯০ সালে আরবিকে সরকারিভাবে আলজেরিয়ার জাতীয় ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বেশির ভাগ আলজেরীয় প্রচলিত কথ্য আরবি ভাষার একাধিক উপভাষার কোনো একটিতে কথা বলে।
বিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক প্রমিত আরবি ভাষা শেখানো হয়। আলজেরিয়ার ইমাজিগেন নৃগোষ্ঠীর মানুষ আমাজিগ ভাষার বিভিন্ন ভৌগোলিক উপভাষায় কথা বলে। তবে এদের বেশির ভাগই আরবি ভাষায়ও সমানভাবে কথা বলতে পারে।
আলজেরিয়ার সিংহভাগ (৭৫ শতাংশ) জনগণ নৃতাত্ত্বিকভাবে ও ভাষাগতভাবে আরব জাতির লোক। এ ছাড়া এখানে বার্বার (আমাজিগ) জাতির একটি বৃহৎ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী বাস করে, যারা জনসংখ্যার প্রায় ২৪ শতাংশ। রাষ্টধর্ম ইসলাম। প্রায় সবাই (৯৭/৯৯ শতাংশ) মুসলমান এবং সিংহভাগ মুসলমান সুন্নি মতাদর্শী।
আরব মুসলমানরা এখানে ইসলাম ধর্ম ও আরবি ভাষার প্রচলন করে। এরপর বেশ কয়েকটি বার্বার মুসলমান রাজবংশ অঞ্চলটি শাসন করে। এদের মধ্যে আলমোরাভিদ রাজবংশ সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য।
আলমোরাভিদরা ১০৫৪ থেকে ১১৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করে এবং তাদের সাম্রাজ্য ইউরোপের স্পেন পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এর পর আলমোহাদ রাজবংশটিও ১১৩০-১২৬৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করে। ১৫১৮ সালে তুর্কি উসমানীয় সাম্রাজ্য উত্তর আলজেরিয়া দখলে নেয়। ধীরে ধীরে এটি ইসলামী ঐতিহ্যের শহরে রূপ নেয়।
আলজেরিয়ায় টেলমসেন শহর উত্তর আফ্রিকায় অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত। শহরটি মুরিশ, আন্দালুসিয়ান, ফরাসি, ইসলামী এবং বহু সংস্কৃতির সমন্বয়ে গঠিত, যার স্থাপত্য, সংগীত এবং শিল্প সব ক্ষেত্রেই বেশ ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ। আনুমানিক অষ্টম শতাব্দীতে শহরটির উৎপত্তি হয়েছিল এবং এখানে কিছু প্রাচীন মসজিদ আছে, যা প্রায় একাদশ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। বিশেষত, টেলমসনের গ্র্যান্ড মসজিদ, যা প্রায় ১০৯১ সালের গোড়ার দিকে নির্মিত হয়েছিল।
এটি আলমোরাভিদ নকশার অত্যন্ত চমৎকার একটি উদাহরণ। এর বিস্তৃত মিহরাবটি (মক্কার মুখোমুখি) অত্যন্ত আকর্ষণীয়, যার মধ্যে ঝাড়বাতিসহ একটি বড় গম্বুজ রয়েছে। এ ছাড়া আবু মাদিয়ান বা সিদি বুমাদিয়ানের মাদরাসা এবং বহু সমাধি আন্দালুসীয় স্থাপত্যের উদাহরণ।
-এটি