আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কাটার ঘটনায় আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য মঙ্গলবারও তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হননি অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। তাকে আগামী দু'এক দিনের মধ্যে ফের উপস্থিত হতে নির্দেশ দিবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত দল।
এদিকে চুল কাটার ঘটনার প্রতিবাদ ও শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনের বহিষ্কার চেয়ে করা আন্দোলনে যেসব শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশ নিয়েছেন, তাদের বিষয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শাহজাদপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাড়িতে ও মেসে গিয়ে সোমবার থেকে গোয়েদা পুলিশ (ডিবি ও ডিএসবি) খোঁজ নিচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।
শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কেও খোঁজ নিচ্ছেন তারা। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের নেপথ্যে বিরোধী জামাত-শিবির চক্রের ষড়যন্ত্র, উস্কানি বা নাশকতার পরিকল্পনা কিংবা বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আন্দোলনের বিষয়ে পুলিশের হঠাৎ তৎপরতা বন্ধে মঙ্গলবার বিকেলে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সোরহাব আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি পেয়েছি। উপাচার্য অসুস্থতার কারণে ছুটিতে আছেন। তিনি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে অবশ্যই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
তদন্ত দলের প্রধান ও রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রভাষক লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন তদন্ত কমিটির সদস্য সচিবের কাছে অসুস্থতার কথা বলে ১৪ দিনের সময় চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন। উপাচার্যের মাধ্যমে তাকে হয়তো আরও দু'এক দিন সময় দিয়ে ফের সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, ১৪ দিনের সময় চেয়ে সদস্য সচিব বরাবর আবেদন পাঠিয়েছি। এখনও জবাব পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আব্দুল লতিফ বলেন, শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে গোয়েন্দা পুলিশের খোঁজ নেওয়ার বিষয়টি জেনেছি। শিক্ষার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নেপথ্যে কোনো ষড়যন্ত্র বা জামায়াত-শিবিরের চক্রান্ত আছে কিনা, বা আন্দোলনকারীদের কেউ ওই চক্রের অশুভ কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে কিনা- গোয়েন্দা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐহিত্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন শাখার দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা শুরুর আগে জোর করে ১৪ শিক্ষার্থীকে ধরে চুল কেটে দেন বলে বিভাগের চেয়ারম্যান প্রভাষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দেশজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়।
-কেএল