প্রশ্ন:
প্রশ্নের সারকথা এই যে, মন খুব বিক্ষিপ্ত থাকে। পড়াশোনায় মন বসে না। মনোযোগিতার অভাব। গল্প-গুজব করতে খুব ভালো লাগে। কোনো কিছু মুখস্থ করা খুব কঠিন হয় এবং কিছু মুখস্থ করা হলেও মনে থাকে না।
উত্তর:
মেরে দোসত! দুনিয়াতে কোনো কাজ হিম্মত ছাড়া হয় না। শুধু আকাঙ্খা ও দুআর দ্বারাই যদি সকল কাজ হয়ে যেত তাহলে আল্লাহ দুনিয়াকে ‘দারুল আসবাব’ বানাতেন না আর আমাদেরকেও শরীয়তের অনুগত থাকার বিধান দিতেন না। এজন্য খালেস দিলে তওবা করে হিম্মত করুন এবং কিছু কিছু মুজাহাদা আরম্ভ করুন। আর আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করুন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা রাস্তা খুলে দিবেন।
চিন্তা-ভাবনা বিক্ষিপ্ত থাকার যে কারণ আপনি উল্লেখ করেছেন তার জন্য রূহানী ও জিসমানী দুই ধরনের চিকিৎসকেরই শরণাপন্ন হওয়া কর্তব্য। রূহানী চিকিৎসক-এর অর্থ হল মুসলিহ ও শায়খে কামেল। খুব দ্রুত আপনি কোনো শায়খে কামেলের সঙ্গে ইসলাহী সম্পর্ক কায়েম করুন। পাশাপাশি কোনো অভিজ্ঞ ও দরদী চিকিৎসককে আপনার অবস্থা জানিয়ে ওষুধপত্র ব্যবহার করুন। এটা শুধু রূহানী রোগের বিষয় নয় শারীরিক অসুবিধাও এখানে রয়েছে, যা সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য। (রূহানী ও জিসমানী উভয় ধরনের) চিকিৎসক রোগীর জন্য আমানতদার হয়ে থাকেন। রোগীর সমস্যা তারা অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন না এবং রোগীকেও তুচ্ছজ্ঞান করেন না। এজন্য শায়খ ও ডাক্তারকে নিজের অবস্থা জানাতে কোনোরূপ দ্বিধা করা উচিত নয়।
পড়াশুনায় মন দিলেই মন বসবে। এটা কখনো ভাববেন না যে, ‘মন বসা’ ইচ্ছাধীন নয়। এটা সম্পূর্ণ মানুষের ইচ্ছা ও সামর্থ্যের ভিতরের বিষয়। কেউ হিম্মত করলেই আল্লাহ তাআলা তাকে তাওফীক দান করেন।
গল্প-গুজবের ব্যাপারে দু’টো বিষয় মনে রাখবেন। প্রথম বিষয়টি এই যে, যবানের ভুল ব্যবহার বা অহেতুক ব্যবহার মানুষের দ্বীন ও দুনিয়া দু’টোই বরবাদ করে দেয়। এজন্য একে নিয়ন্ত্রন করা অত্যন্ত জরুরি। একটি প্রসিদ্ধ উক্তি রয়েছে- ‘জিরমুহু ছগীর ওয়া জুরমুহু কাবীর’। কথাটা মনে রাখুন। দ্বিতীয় কথা এই যে, গল্প-গুজব তো একাকী কখনো হয় না। অবশ্যই দ্বিতীয় কারো সঙ্গে আপনি গল্প-গুজবে মগ্ন হচ্ছেন। এতে অন্যের যে সময় আপনি নষ্ট করছেন, যদিও তার সন্তুষ্টিক্রমেই হোক না কেন, নিঃসন্দেহে তা কবীরা গুনাহ। আর যদি অন্যদের অসুবিধা হয়ে থাকে তবে তো এটা তৃতীয় কবীরা গুনাহ। ভাই! নিজের ওপর দয়া করুন!
পড়া ভুলে যাওয়ার অভিযোগও আপনি করেছেন। উপরোক্ত তিনটি বিষয়ে আমল করতে থাকলে ইনশাআল্লাহ এই অভিযোগও দূর হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাযত করুন এবং প্রতি পদক্ষেপে আমাদেরকে সাহায্য করুন। আমীন।
সূত্র: আল কাউসার
এনটি