প্রশ্ন:
ক. আমি এ বছর নাহভেমীর জামাতে পড়ি। জানতে চাচ্ছি, ‘রওযাতুল আদব’ নামক কিতাবটি কোন নিয়মে পড়লে বেশি উপকৃত হব।
খ. উক্ত প্রসঙ্গে আমার আরেকটি বেদনাদায়ক কথা হচ্ছে, আমাদেরকে কেউ কেউ বলে থাকেন, ‘রওযা’ হচ্ছে ভাষা শিখার কিতাব, সুতরাং ভাষা শিখার ক্ষেত্রে তারকীব বা শব্দের তাহকীক স্থগিত রাখতে হবে। কিন্তু আমাদের কতক সাথী ভাইয়ের একথাটা বুঝে আসে না। তাঁরা বলে থাকেন ‘তারকীববিহীন পড়ে শুধু ইবারত মুখস্থ করে আমাদের কী ফায়দা হবে?’
এখন আমি বিভিন্ন ধরনের কথায় চিন্তিত হয়ে পড়েছি। আবেদন করছি, আমাকে এ বিষয়ে সুপরামর্শ দিয়ে আমার দুশ্চিন্তা দূর করবেন।
উত্তর:
(ক. খ.) ‘রওযাতুল আদব’ কিতাবের মুসান্নিফ মাওলানা মুশতাক আহমদ চরথালভী রহ. ভূমিকায় লিখেছেন যে, এই কিতাব নাহব-সরফ এর সাহায্য ছাড়া ভাষা শেখানোর উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছে। যেহেতু এটা ছিল এ উপমহাদেশে এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রয়াস তাই কিতাবের উদ্দেশ্য পুরোপুরি হাসিল হয়নি। বিশেষত কিতাবের ‘আলবাবুল আওয়ালে’র শিরোনামগুলো থেকে অনুমিত হয় যে, তিনি এখানে কিছু নাহবী কায়েদার অনুশীলন করাতে চেয়েছেন। এজন্য এ অধ্যায় অনুশীলনের আঙ্গিকেই পড়া উচিত। অন্যান্য অধ্যায় ‘আতত্বরীক ইলাল আরাবিয়্যাহ’ ‘আততামরীনুল কিতাবী আলাত ত্বরীক ইলাল আরাবিয়্যাহ’, ‘আলকিরাআতুল ওয়াজিহা’, ‘আলকিরাআতুর রাশিদা’র মতো কিতাবগুলোর নিয়মেই পড়া উচিত। কেননা, এই কিতাবগুলো হচ্ছে প্রাথমিক ভাষা শিক্ষার জন্য মৌলিক ও আদর্শ কিতাব। এই নিয়ম যদি আপনি আপনার উস্তাদের নিকট থেকে সরাসরি বুঝে নিতে পারেন তবে তা-ই ভালো হবে।
ভাষা শিক্ষার প্রাথমিক কিতাবগুলোতে তারকীব এবং সরফী ও লুগাবী তাহকীকাতের চক্করে না পড়াই ভালো। এগুলোর জন্য ভিন্ন ক্ষেত্র ও ভিন্ন কিতাব রয়েছে।
আর ভাষা শিক্ষার কিতাবগুলো শুধু মুখস্থ করার জন্য নয়; বরং রীতি ও উপস্থাপনা অনুধাবন করে সকল বিষয় আত্মস্থ করার জন্য। এ কথাটা যদি আপনি ভালোভাবে অনুধাবন করতে সক্ষম হন তাহলে ‘তারকীব না বুঝে শুধু মুখস্থ করে কী লাভ’-এ প্রশ্ন আপনার মনে আর রেখাপাত করবে না।
সূত্র: আল-কাউসার।
এনটি