আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষা গ্রহণে বাধা দেয়া ইসলামসম্মত নয় বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।
গত সপ্তাহে তালেবান দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু ছেলেদের যাওয়ার অনুমতি দেয়ায়- এ কথা বলেন ইমরান। এছাড়া শিগগির আফগানিস্তানের নারীদের আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে আশাব্যক্ত করেন তিনি।
এসময় ইমরান খান আফগান নেতৃত্বকে আহ্বান জানান, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে এবং মানবাধিকারকে সম্মান জানাতে। তিনি এও বলেন, আফগানিস্তানের সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া উচিৎ নয়, যা পাকিস্তানের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
গত সপ্তাহে তালেবান নেতৃত্ব স্কুল খুলে দিলেও মেয়েদেরকে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি, শিক্ষকতার কাজে ফিরে যাবার অনুমতি পেয়েছেন শুধুমাত্র পুরুষ শিক্ষকেরা।
ইমরান খান বলেন, ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা যেসব বিবৃতি দিয়েছে সেগুলো খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। আমি মনে করি, তারা মেয়েদেরকে স্কুলে যাবার অনুমতি দেবে।
তিনি বলেন, মেয়েরা শিক্ষিত হতে পারবে না, এমন ধারণা স্রেফ অনৈসলামিক। এর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। এদিকে তালেবান নেতৃত্ব বলে আসছে, নারীদের অধিকারকে সম্মান করা হবে তবে তা ইসলামের আইনের বিধিবিধান অনুযায়ী।
মেয়েদেরকে বাদ রেখে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল ফেলে দেয়। পরে তালেবান মুখপাত্র বলেন, মেয়েদেরকে যত দ্রুত সম্ভব স্কুলে ফেরানো হবে। কিন্তু এটা স্পষ্ট হয়নি, কবে নাগাদ স্কুলে ফিরতে পারবে মেয়েরা এবং তাদেরকে যদি শ্রেণিকক্ষে ফিরতে দেয়া হয় তাহলে ঠিক কী ধরণে শিক্ষার সুযোগ তারা পাবে।
এদিকে তালেবান বাস্তবতা মাথায় রেখে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য শর্তগুলো পূরণ করছে কী না, এমন প্রশ্নে ইমরান খান বারবার আহ্বান জানান, আন্তর্জাতিক মহলের উচিৎ তাদেরকে আরো সময় দেয়া।
এখনই কোন কিছু বলার মত সময় আসেনি, ইমরান খান বলেন। তিনি এর সাথে যোগ করেন, তার আশা আফগান নারীদের অধিকার দেয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তালেবানকে সাহায্য সহযোগিতা করার। পাকিস্তান যদিও এই অভিযোগ সবসময় অস্বীকার করেছে।
এবিষয়ে ইমরান খান বলেন, পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের সাথে মিলে পাকিস্তান সিদ্ধান্ত নেবে তারা তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেবে কি না। সব প্রতিবেশী একসাথে হয়ে দেখবো তাদের কতটা উন্নতি হচ্ছে। তাদের স্বীকৃতি দেয়া না দেয়া হবে একটি সমন্বিত সিদ্ধান্ত।
তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি পেতে হলে পাকিস্তানের শর্ত পূরণ করতে হবে। দু'দেশের সম্পর্ক নিয়ে তিনি জানান, আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের নিরাপত্তায় হুমকি হতে পারে এমন সন্ত্রাসীদের আঁতুড়ঘর হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়া উচিত হবে না।
-এটি