আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর ইসরায়েলের গিলবোয়া কারাগার থেকে পালানো ছয় বন্দীর সাথে সংহতি প্রকাশে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অংশ নেন।
বিক্ষোভ অনুষ্ঠানে ইসরাইলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন অংশগ্রহণকারীরা। এই সময় তারা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন।
একইসাথে ইসরাইলের প্রশাসনিক আটকাদেশ নীতির প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভকারীরা।
ইসরাইলের প্রশাসনিক আটকাদেশ নীতি অনুযায়ী কোনো বিচার ছাড়াই বন্দীকে ছয় মাস আটকে রাখতে পারে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।
গত ৬ আগস্ট উত্তর ইসরাইলের উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত গিলবোয়া কারাগার থেকে সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যায় ছয় ফিলিস্তিনি বন্দী।
ইসরাইলি কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই বন্দীরা তাদের সেলের টয়লেটের ফ্লোরে খুঁজে পাওয়া এক সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যায়। ২০০৪ সালে কারাগারটি নির্মাণের সময় ওই সেলের টয়লেট পর্যন্ত এই সুড়ঙ্গ করা হয়েছিলো।
কারাগার পালানো ফিলিস্তিনি বন্দীদের আইনজীবীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বন্দীরা গত বছরের ডিসেম্বর থেকে নিজেদের কারাগারের সিঙ্কের নিচে একটি সুড়ঙ্গ খনন শুরু করে। এই কাজে তারা চামচ, প্লেট এমনকি কেতলির হাতলও ব্যবহার করে।
পালিয়ে যাওয়া এই ছয় বন্দী হলেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামি জিহাদের সদস্য মাহমুদ আবদুল্লাহ আল-আরিদা, মোহাম্মদ কাসিম আল-আরিদা, ইয়াকুব মোহাম্মদ কাদরি, আয়হাম নায়েফ কামামজি, মুনাদিল ইয়াকুব আনফিয়াত ও ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ফাতাহ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডের নেতা যাকারিয়া জুবাইদি।
পালিয়ে যাওয়া এই বন্দীদের সন্ধানে ব্যাপক মাত্রায় উত্তর ইসরাইল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। পাশাপাশি পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের সীমান্ত পেরিয়ে জর্দান যাওয়ার আশঙ্কায় জর্দানি কর্তৃপক্ষের কাছে বন্দীদের সন্ধানের অনুরোধ পাঠিয়েছিলো ইসরাইল।
১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরাইলের ফিলিস্তিনি আরব অধ্যুষিত শহর নাজারেথের কাছে খ্রিস্ট ধর্মীয় পবিত্র স্থান জাবাল কাফাজা থেকে মাহমুদ আল-আরিদা ও ইয়াকুব মোহাম্মদ কাদরিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর সকালে নাজারেথের কাছে 'আল-শিবলি' গ্রাম থেকে মোহাম্মদ আল-আরিদা ও জাকারিয়া জুবাইদিকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারি এড়িয়ে থাকা সর্বশেষ দুই বন্দী নায়েফ কামামজি ও মুনাদেল আনফিয়াতকে শনিবার দিনগত রাতে গ্রেফতার করে ইসরাইলি বাহিনী।
বর্তমানে ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে ৪১ নারী ও ২২৫ শিশুসহ মোট চার হাজার আট শ' ৫০ ফিলিস্তিনি বন্দী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৪০ জন প্রশাসনিক আটকাদেশের অধীনে বন্দী রয়েছেন।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।
এনটি