আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংক্রমণ আবার বেড়ে গেলে তা সামাল দেয়া কঠিন হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়। সম্প্রতি এমন শঙ্কার কথা জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও বিশ্ব করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী ভারতের গবেষকরা দেশটিতে ভাইরাসটির তৃতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের উদ্বেগ সত্য হলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো তার, তৃতীয় ঢেউ, প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু হার কমলেও শিগগিরই তা বেড়ে যেতে পারে। ফলে সংক্রমণের আরেকটি ঢেউ আঘাত হানতে পারে।
এর নেপথ্যে বেশ কিছু কারণও চিহ্নিত করেছেন তারা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রধানদের সমন্বয়ে কোভিড-১৯ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। সম্প্রতি তাদের এক ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানায়, গোটা বিশ্ব থেকে করোনা পুরোপুরি নির্মূল হওয়ার আগ পর্যন্ত সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবেই। এখন পর্যন্ত এই মহামারি প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় টিকাদানকে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় মোট জনসংখ্যার অনুপাতে টিকাদানের হারে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
কেবল আফগানিস্তানের আগে থাকা এ দেশের জনসংখ্যার ২ দশমিক ৬১ শতাংশকে দুই ডোজ এবং ৪ দশমিক ১৮ শতাংশকে এক ডোজ দেয়া হয়েছে। টিকা সংগ্রহে তৎপরতা বাড়িয়ে জনগোষ্ঠীর বড় অংশকে টিকার আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে তৃতীয় ঢেউয়ে বড় ধরনের ঝুঁকি থাকবে। সংক্রমণের হার কমতে শুরু করলে গত মাসে লকডাউন তুলে দেয়া এবং আর্থ-সামাজিক কাজের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়। এই ‘উদাসীনতা’ অব্যাহত থাকলে তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি হতে পারে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের তিন দিক দিয়ে ভারতের দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় নানা কারণে দুই দেশে মানুষের যাতায়াত বেশি হয়। ফলে দেশটিতে সংক্রমণ বাড়া-কমার অনেক প্রভাব পড়ে এ দেশেও। ভারতে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় বাংলাদেশেও তা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো আছড়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
করোনার অন্যান্য ভাইরাসের মতো প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত বা মিউটেশন করতে থাকে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে শতাধিক মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আলফা (ব্রিটিশ), বেটা (দক্ষিণ আফ্রিকা), গামা (ব্রাজিল) ও ডেল্টা (ভারত) ভ্যারিয়েন্ট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। মূলত এ কারণেই বাংলাদেশে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
-এটি