আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের পরমাণু কর্মসূচির লাগাম ধরতে কূটনীতিক চেষ্টাকেই সবার আগে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু সেই আলোচনা ব্যর্থ হলে অনির্দিষ্ট বিকল্পের দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার (২৭ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন ডেমোক্র্যাটদলীয় এই প্রেসিডেন্ট।-খবর রয়টার্সের
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাপ্রত্যাহার ও লোকজনকে সরিয়ে আনার হুলস্থুল পরিস্থিতির কারণে বাইডেনের সঙ্গে বেনেটের বৈঠক নির্ধারিত সময়ের একদিন পরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্ক পুনর্গঠনে দুই নেতার মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনো বৈঠক হয়েছে।
বেনেটের পূর্বসূরি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এর আগের বারাক ওবামার নেতৃত্বাধীন ডেমোক্র্যাটিক প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী হামলার কারণে বাইডেন-বেনেট বৈঠক অনেকটা আলোচনার বাইরে চলে যায়। ওই হামলায় ১৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ১৩ মার্কিন সেনাও রয়েছেন। বাইডেন তার প্রেসিডেন্টের মেয়াদে সবচেয়ে কঠিন সংকটের মোকাবিলা করছেন।
বেনেটের সঙ্গে আলোচনার পর বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তানের মিশন খুবই বিপজ্জনক। এখানে আমেরিকার সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এই মিশন অনেক মূল্যবান। কাবুলের পতনের পর তালেবানের শাসন থেকে বাঁচতে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানদের সরিয়ে নিতে সহায়তা করছে মার্কিন বাহিনী। এখনো সেখানে আরও হামলার হুমকি রয়েছে। শুক্রবার আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে আইএসের লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওভাল অফিস থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাইডেন-বেনেট দুজনেই ইরান নিয়ে কথা বলেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে সংকটময় ইস্যুর একটি হচ্ছে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের মতানৈক্যের বিষয়গুলো তেমন একটা তুলে ধরেননি।
বাইডেন বলছেন, ইরান যাতে কখনোয়ই পরমাণু অস্ত্র বানাতে না পারে তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সবার আগে কূটনীতিকে গুরুত্ব দেবে। কূটনৈতিক পথ আমাদের কোথায় নিয়ে যায়, প্রথমে তা দেখবো। যদি কূটনীতি কোনো কাজে না আসে, তবে অন্য বিকল্প পথ বেছে নিতে হবে আমাদের।
তবে সেই বিকল্পগুলো কী হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের আঞ্চলিক বিপজ্জনক আচরণ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা যায়, তা নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপের পর্যালোচনা করা হয়েছে।
গত জুনে নেতানিয়াহুর এক দশকের ক্ষমতার অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন কট্টর ইহুদিবাদী বেনেট। তার প্রত্যাশা, ইরানের ক্ষেত্রে বাইডেনের মনোভাব কঠোর করতে তিনি চাপ দেবেন এবং পরমাণু চুক্তির আলোচনা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে আসবেন।
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসির পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছেন জো বাইডেন। বর্তমানে দুদেশের মধ্যকার পরমাণু আলোচনা স্থগিত রয়েছে। বাইডেনকে বেনেট বলেন, আপনার পরিষ্কার বার্তা শুনে আমি খুশি। আপনি বলেছেন, ইরান কখনোই পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না।
-এটি