মোস্তফা ওয়াদুদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে অচিরেই কওমি মাদরাসা খোলার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ বুধবার (২৫ আগস্ট) বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলেমদের বৈঠক শেষে এ আশ্বাস দেন তিনি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে আলেমদের প্রতিনিধি টিমের পক্ষ থেকে এক আবেগঘন বক্তৃতা পেশ করেন আল্লামা মাহমুদুল হাসান। তিনি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের আকুতি-অনুভূতি তুলে ধরে অচিরেই মাদরাসা খোলার আবেদন তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।
এ সময় আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘কওমি মাদরাসাগুলোতে কুরআন-হাদীস ভিত্তিক শিক্ষাকার্যক্রম চালানো হয় এবং কুরআন তেলাওয়াত, যিকির, দুআ, তাহাজ্জুদ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে মহামারি ও বালা-মসিবত হতে মুক্তির জন্য বিশেষভাবে মুনাজাত করা হয়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে জাতি করোনাসহ সবরকম বালা-মসিবত থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে। মাদরাসাগুলো বন্ধ থাকায় মহান আল্লাহর দরবারে সম্মিলিত ও ব্যাপক দু’আ ও কান্নাকাটিও বন্ধ হয়ে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর হতে চলল সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীরা অহেতুক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিচ্ছে। এহেন অবস্থায় সার্বিক বিবেচনায় সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।’
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে অতি দ্রুত হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেওয়া হবে এবং পর্যায়ক্রমে সারাদেশের কওমি মাদরাসা ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
বৈঠক সুত্রে আরও জানা যায়, আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান বৈঠকের আলোচনায় টিকার প্রসঙ্গ এলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের টিকার আওতায় আনার পরামর্শ দেন।
বৈঠকে অংশ নেন- বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, ফরিদাবাদ মাদরাসা মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মুফতি নুরুল আমিন, বেফাকের সহ-সভাপতি মুফতি ফয়জুল্লাহ, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, জাতীয় দ্বীনী শিক্ষাবোর্ডের সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মুফতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় দেশের কওমি মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। গত ৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর থেকে দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ রয়েছে দেশের মাদরাসাগুলো। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কমছে। এমন পরিস্থিতে মাদরাসা খোলার দাবি জোরালো হচ্ছে। এ বিষয়ে কথা বলতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলেমদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এমডব্লিউ/