আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বিশ বছর পর আফগানিস্তান ফিরে পেয়ে তালেবানরা বিজয়ী হওয়ায় আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য বিমানবন্দরে ভিড় করে বিদেশিরা ও তাদের সাহায্যকারীরা।
এমন পরিস্থিতিতে তালেবান নিয়ে গোটা বিশ্বেই নেতিবাচক ধারণা ও প্রচারণা চলছিলো, তবে ভারত ফেরত কলকাতার যুবক তমাল ভট্টাচার্যের বক্তব্য সব ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করেছে। আফগানিস্তান থেকে ফিরে এসে তালেবানদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি।
গতকাল রোববার কাবুল থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমানে দিল্লি পৌঁছান ১৬৮ জন নাগরিক। তাদের মধ্যে ফিরেছেন দুই বাঙালি তমাল ভট্টাচার্য ও স্বরজিৎ মুখোপাধ্যায়।
ভারতে ফিরেই বার্তা সংস্থা এবিপি আনন্দ, জিনিউজসহ কলকাতার স্থানীয় গণমাধ্যমে তালেবানদের আফগান দখল এবং পরবর্তী পরিস্থিতির বর্ণনা দেন তমাল ভট্টাচার্য। তারই একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তারা তালেবানদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।
কলকাতায় পা দিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়া গণমাধ্যমের সামনে তমাল বললেন, আমরা বাইরে থেকে তালেবানের ব্যাপারে যা জানি-শুনি, তা সম্পূর্ণ ভুল মনে হয়েছে আমার কাছে। তালেবানরা আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত সুন্দর আচরণ করেছেন। আমাদের উদ্দেশে তারা বলেছে, ‘তোমরা আমাদের মেহমান। তোমাদের নিরাপত্তার সব দায়িত্ব আমাদের।’ তারা আমাদেরকে খাইয়েছে, নিরাপত্তা দিয়েছে।
জানা যায়, কাবুলের একটি আন্তর্জাতিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তমাল ভট্টাচার্য। গত ১৫ আগস্ট পুরো দেশ যখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই তীব্র দুশ্চিন্তা চেপে বসে কলকাতায় থাকা তমালের পরিবারের মধ্যে। একদিকে ভারতীয় অন্যদিকে হিন্দু ছেলে, তাই তালেবান তার ওপর আক্রোশ দেখাবে, এমনটাই ধারণা ছিল সবার। কিন্তু তমাল ফিরে এসে দিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন বক্তব্য।
তমাল বলছিলেন, ‘সেদিন কাবুল বিমানবন্দরে একটা গণ্ডগোল সৃষ্টি হয়েছিলো। সেদিন আমেরিকানরাই আসলে গুলি টুলি করে ঝামেলা করেছে। তালেবানরা কাউকে জ্বালাতন করেনি এবং তারা কোনো একটা মানুষের কোনো ক্ষতি করেনি। তালেবানরা প্রথমে এসেই আমাদের বললো স্যার চিন্তা করবেন না আমরা আপনাদের কিছুই করবো না। আপনাদের আমরা হিফাজত করবো (ওস্তাদ আপ ফিকার মাত কারো হাম কুচ নেহি কারেঙ্গে হাম আপকি হেফাজাত কারেঙ্গে)।’
কলকাতার ছেলে তমাল আরও বলছেন, শুধু ভরসা দিয়েই বসে থাকেনি তালেবান, বিদেশিদের মেহমান আখ্যা দিয়ে রাত্রিবেলা পাহারা দিয়েছে। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যেসব নারী শিক্ষকরা ছিলেন, তাদেরকে বিন্দুমাত্রও অসম্মান করেননি বরং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়েছেন। খাবার দিয়েছেন এবং অন্যান্য সবরকম সহযোগিতা করেছেন।
পেশায় শিক্ষক তমাল ভট্টাচার্যকে বলতে শোনা যায়, তালেবানরা সম্পূর্ণ নতুন একটা দেশ তৈরি করতে চাইছে। কতটা সত্যি জানি না। সময়ই সেটা প্রমাণ করবে।
-এটি