আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কওমি মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
আজ (৯ আগস্ট) সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতিতে জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী ১১ আগষ্ট থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, মার্কেট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সীমিত পরিসরে গণপরিবহন খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থা, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, দিনমজুর রিকশাচালক, পরিবহন শ্রমিক, ক্ষুদে ব্যবসায়ী ও মেহনতী মানুষের দুরাবস্থার কথা বিবেচনা করে সরকারি বেসরকারি অফিস, মার্কেট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সাধারণ মানুষের জীবিকার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে।
জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে যেভাবে কিশোর কিশোরীদের মাঝে অপরাধ প্রবণতা ও মাদকাসক্তির প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ঠিক তদ্রুপ ভবিষ্যতে শিক্ষিত দক্ষ যোগ্যতাসম্পন্ন লোকের সংকটে পড়বে দেশ। সে সংকট কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব হয়ে যাবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা মহামারী আল্লাহ প্রদত্ত একটি আজব। যেকোনো রোগ, বালা-মুসিবত, আজাব ও মহামারী থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে যেভাবে চিকিৎসা নেয়া জরুরী, রোগে আক্রান্ত হওয়ার উপকরণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হয়, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হয়, ঠিক তদ্রুপ মহান রব্বুল আলামীনের দরবারে তওবা-ইস্তেগফার, কোরআন তেলাওয়াত ও নফল এবাদত বন্দিগী ব্যক্তিগত ও সম্মিলিতভাবে করা জরুরি হয়ে পড়ে। কওমী মাদরাসাগুলোতে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের চর্চা হয়ে থাকে, ছাত্ররা ফজরের পূর্ব থেকে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করে অব্যাহত রাখে রাতে ঘুমের আগ পর্যন্ত। রাতের শেষ প্রহরে শিক্ষক-ছাত্র তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে নিজেদের অপরাধ মার্জনা ও কল্যাণ কামনায় আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে থাকে। মাদ্রাসাগুলো বন্ধ থাকায় এ আমলগুলোর ফলাফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। এছাড়া মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় হিফজের ছাত্ররা পবিত্র কোরআন ভুলতে বসেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যেভাবে মানুষের জন্য জীবিকার প্রয়োজন, ঠিক সেভাবে একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশের জন্য শিক্ষিত, দক্ষ, জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের এর ধারা যদি আরো দীর্ঘ হয় তাহলে জেনারেশন গ্যাপ তৈরি হবে, যা পূরণ হবার নয়। মাদ্রাসাগুলো বন্ধ থাকায় ব্যাপকহারে কোরআন-হাদিসের চর্চার সুফল থেকে দেশ বঞ্চিত থাকছে। যা একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের জন্য কখনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। তাই জমিয়ত মনে করে, বিলম্ব না করে অন্যান্য সেক্টরে সাথে সাথে কওমী মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।
বিবৃতিদাতাগণ হলেন জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা জিয়াউদ্দিন, সহ-সভাপতি মাওলান ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল বছির সুনামগঞ্জী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস আরজাবাদ, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস মানিকনগর, মাওলানা লোকমান মাজহারী, মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী মাওলানা নাসিরউদ্দিন খান, মাওলানা নূর মোহাম্মদ কাসেমী, মাওলানা মুফতি মহিউদ্দিন মাসুম ও মুফতি জাবের কাসেমী প্রমূখ।
এমডব্লিউ/