মনজুর সা'দ।।
আমার শায়েখ। বইটি পড়ে আমি শুধু মুগ্ধই হই নি। রীতিমতো অবাকও হয়েছি বটে। এতো সুন্দর জীবন। এতো সুন্দর চরিত্র। লেখক কীভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন! লেখক হাফীজুদ্দিন হাফি. আমার উস্তায, আমার শায়েখ, আমার প্রিয় একজন মানুষ। এই বইটি লেখার পেছনে লেখকের অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছে। কতো বিনিদ্র রজনী তিনি যাপন করেছেন তা আল্লাহ মাবুদই ভালো জানেন।
বইটির প্রতিটি পাতায় পাতায় আমি হারিয়ে গিয়েছি। একজন আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য আমি মনে করি, এই একখানা বই-ই যথেষ্ট। প্রতিটি মানুষের জীবন অমূল্য রত্ন। নিজেকে কল্পনার রাজ্যে চালান করে আমি হারিয়ে গেছে "আমার শায়েখের" কোমল পাপড়িতে। আমার চিন্তার জগতে ওসায়াত দান করেছে। বড় হওয়ার ইচ্ছে আমাকে ভীষণ তাড়া করছে। আমি যেন শায়েখের চরিত্রে দেশ-দেশান্তরে কাজ করে যাচ্ছি। তাঁর উম্মাতে মুহাম্মদীর অতন্দ্রপ্রহরী হয়ে গেছি। এতো সুন্দর জীবনও যে কারোর হই সেটা আমি জানতাম না। যদি আমি এই বইটি না পড়তাম বুঝতেই পারতাম না।
"ভালোবাসি পূণ্যহৃদয়, যদিও আমি নই
ভালোবাসা পথ দেখাবে,প্রেম আমাকে টানবে ঐ।"
ফিদায়ে মিল্লাত হযরত মাওলানা সায়্যিদ আসআদ মাদানী রহ.। ব্যক্তি হিসাবে তিনি অমায়িক, সদাচারী, স্পষ্টভাষী, উদার, নির্মোহ, আত্মাত্যাগী, দেশ ও জাতির কল্যান কামনায় নিবেদিত প্রাণ ও সৎসাহসী। আল্লাহ তাঁকে আমাদের মাঝে দীর্ঘজীবী করুন। আমিন।
হযরতকে নিয়ে যত বেশিই লিখব তত কমই মনে হবে। শায়েখের শিক্ষার সূচনা মায়ের হাতে। সেই মা’ও বেশি দিন এ ধরার বুকে থাকেন নি। পাড়ি জমিয়েছেন কবর পাড়ায়। যখন শায়েখের বয়স ৯ বছর মাত্র। মা মরা ছেলেটির দায়িত্ব বার গ্রহণ করেন। হযরত মাওলানা আসগর আলী সাহাসপুরী রহ.।
১৩৬৮ হিজরি রমযান মাসে নিজ পিতার শায়খুল ইসলাম রহ.এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। শায়েখ প্রায় বারো বছর দারুল উলূম দেওবন্দে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন।দীর্ঘদিন তিনি 'জমিয়তে ওলামা' দেওবন্দ এলাকার সহ-সভাপতি ছিলেন। হযরতের আন্তর্জাতিক জীবন ছিল গল্পের শহরের মতো। মিসর কায়রো থেকে শুরু করে মক্কা মুকাররমা, করাচি, তিউনিসে, রিয়াদ উজবেকিস্তান, বাগদাদ ইত্যাদি। সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো খতমে নবুয়ত কনফারেন্স লন্ডনে।
হযরতের তাসাউফের ব্যাপারে না বললেই নয়। এই ময়দানে তিনি প্রচুর পরিমান মেহনত-মুজাহাদা করেছেন।এবং তারঁ যোগ্য উত্তরসূরীগণ এখনো বেঁচে আছেন। তাঁরাও এই ময়দানে কাজ করে যাচ্ছেন। এই ধারাবাহিকতা ইন শা আল্লাহ কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশে হযরত ফিদায়ে মিল্লাত রহ. এর খলিফার সংখ্যা প্রায় ৩৫ জন।সম্ভবত ১১জনকে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া থেকে নিয়ে গেছেন। বাদ বাকিরা এখনো হযরতের রেখে যাওয়া আমানত রক্ষা করছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন, আমার মুশফিক উস্তায ও শায়েখ, হাফিজুদ্দিন সাব হাফি.
এই কিতাবের বেশ কিছু লেখা আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে বড় হওয়ার। পার্লামেন্টের শেষ ভাষণ। ফিলিস্তিন সমস্যায় শায়েখের ভূমিকা। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের ব্যাপারে আপত্তি রহিতকরণ। কওমি মাদরাসা অস্তিত্ব রক্ষায় আমাদের করণীয় ইত্যাদি।
আমার কাছে 'আমার শায়েখ' বইটি একটা ম্যাসেজ। যেটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। ইশ,আমার যদি প্রচুর পরিমান অর্থ কুড়ি থাকতো তাহলে এই বইটি আমি ছোটো বড় সমাজের সকলের কাছে পৌঁছে দিতাম।
ইনশা আল্লাহ। একদিন বড় হব। অনেক বড়। তখন আমিই 'আমার শায়েখ'বইটি সবার হাতে হাতে পৌঁছে দেব। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার হাতে 'আমার শায়েখ' পৌঁছুক। সবাই পড়ুক। নতুন জীবন গড়ুক।
বই: আমার শায়েখ
লেখক :মুফতী হাফীজুদ্দিন
প্রকাশনী: মাকতাবায়ে ফিদায়ে মিল্লাত
মুদ্রিত মূল্য: ছয়শত টাকা মাত্র
লেখক: শিক্ষার্থী, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ।
-এএ