আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে চালু হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ৪৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। সন্তুষ্টি জানিয়েছে মাত্র ২.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। ভালো ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা, বিদ্যুতের সমস্যা, প্রয়োজনীয় ডিভাইসের অপ্রাপ্তি, ডাটা কেনার অসমর্থতাসহ নানা বিষয়কে অনলাইন ক্লাসের অন্তরায় হিসেবে তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের সোশ্যাল সায়েন্স টিম পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
চলতি বছরের ৩০ মে থেকে অনলাইনে হওয়া এই জরিপে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল অনুষদ ও ইন্সটিটিউটের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের সকল বর্ষের ৩ হাজার ৭৩০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৫৫.৫% ছাত্র ও ৪৩.৪% ছাত্রী এবং ১.১% শিক্ষার্থী লিঙ্গ প্রকাশে অনিচ্ছুক।
জরিপে ব্যবসায় শিক্ষা ও কলা অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়, যথাক্রমে ২৬.৯ ও ২৬ শতাংশ। করোনার সময়ে শিক্ষার্থীদের ৪৪.৫% গ্রাম, ১৫.৭% ছোট শহর, ১৯.৩% শহর ও ২০.৩% মহানগর এলাকায় অবস্থান করছেন।
প্রতিবেদনের ফলাফলে দেখা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনলাইনে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ৫২.৭% শিক্ষার্থী ইচ্ছুক, ৪৫% শিক্ষার্থী ইচ্ছুক নন এবং বাকিরা নিশ্চিত নন এখনো। ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৭.৪% অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী। এছাড়াও অনেকেই ওপেন বুক (২১.১%), এমসিকিউ (১৯.৭%), সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (১৯.৪%) বা বড় প্রশ্নোত্তর (৫.৪%) পদ্ধতিতে এবং শুধুমাত্র ৪.২% শিক্ষার্থী লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জরিপে অনলাইনে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কারণ তুলে ধরে বলেন, ভালো ও দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক সংযোগ না থাকা, ডিভাইস বা ডাটা কেনার অসমর্থতা,পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে সন্দিহান,অনলাইনে পরীক্ষার অভিজ্ঞতার অভাব, অনলাইনে পরীক্ষা দেয়ার দক্ষতার অভাব, বাড়িতে পরীক্ষার পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্টি এসব নানা বিষয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার প্রতি অনিচ্ছার মূল কারণ।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, অনলাইন ক্লাসের ব্যাপারে ২৩.১% শিক্ষার্থী অসন্তুষ্ট ও ২৩.৩% শিক্ষার্থী খুব বেশি অসন্তুষ্ট বলে মত প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে ২৩.৯% শিক্ষার্থী মোটামুটি সন্তুষ্ট এবং মাত্র ২.৭% শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের ব্যাপারে সন্তুষ্ট বলে মতামত দিয়েছেন। অনলাইন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার দক্ষতা নেই ২১ শতাংশ শিক্ষার্থীর। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে সিলেবাস শেষ হয়েছে ৪৬.৩% শিক্ষার্থীর এবং শেষ হয়নি ৫৩.৭% শিক্ষার্থীর।
জরিপে দেখা যায়, অনলাইনে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৭.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে আগ্রহী। এছাড়াও ওপেন বুক ২১.১%, এমসিকিউ ১৯.৭%, সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ১৯.৪%, বড় প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিতে ৫.৪% এবং শুধু ৪.২% শিক্ষার্থী লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল করিম এবং কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডারস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারপার্সন তাওহিদা জাহানের সার্বিক দিক-নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের সোশ্যাল সায়েন্স টিমের মো. তানবীরুল ইসলাম (টিম ম্যানেজার), সুমাইয়া ইমতিয়াজ (কো-অর্ডিনেটর), মো. আতিকুজ্জামান, জাওয়াদ সামস, রাগীব আনজুম, মো. ওমর ফারুক ও সুমাইয়া আহমেদ।
-এটি